০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৪ ভাদ্র ১৪৩১, ৪ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরি
`
আমিরাতে ৫৭ বাংলাদেশীর কারাদণ্ড

সরকার দায়িত্ব এড়াতে পারে না

-

আমাদের বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ খাত প্রবাসী আয়। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে প্রায় সোয়া কোটি বাংলাদেশী কর্মরত। তারা কঠোর পরিশ্রমে যে অর্থ উপার্জন করেন, তা দেশে পাঠান। তাদের পাঠানো অর্থ দেশের অর্থনীতির চাকা গতিশীল রাখতে বিশেষ অবদান রাখছে। সেই সাথে আমাদের বৈদেশিক মুদ্রার মজুদে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। তবে দুর্ভাগ্যজনক হলো, বিদেশে কর্মরত বাংলাদেশী কর্মীরা দেশে ন্যায্য অধিকার ও মর্যাদা কোনোটিই পান না। সরকার প্রবাসীদের প্রাপ্য অধিকার সুরক্ষায় যতœশীল নয়।
শুধু উপেক্ষা বা অমর্যাদা নয়, এবার দেখা যাচ্ছে ভিন্ন এক চিত্র। দেশে সম্প্রতি কোটা সংস্কার আন্দোলনে হতাহতের প্রতিবাদে আরব আমিরাতে বিক্ষোভ করায় দেশটির আদালত ৫৭ বাংলাদেশীকে দণ্ড দিয়েছেন। এ দণ্ডের বিষয়ে হস্তক্ষেপ করা হবে না বলে জানিয়েছেন প্রবাসীকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী শফিকুর রহমান চৌধুরী।
গণমাধ্যমে প্রকাশ, দেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে সংঘটিত কোটা সংস্কার আন্দোলনে সংহতি জানিয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই, শারজাহ, আজমানের একাধিক এলাকায় সড়কে বিক্ষোভ করেন বেশ কিছু বাংলাদেশী। ওই কর্মসূচি থেকে আটক হওয়া বাংলাদেশী তিনজনকে যাবজ্জীবন, একজনকে ১১ বছর এবং ৫৩ জনকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। আমিরাতের বার্তা সংস্থা ওয়াকালাত আনবা আল ইমারাতের তথ্য অনুযায়ী, আদালতের মাত্র একটি অধিবেশনে এ রায় দেয়া হয়। সাজার মেয়াদ শেষে দণ্ডিতদের বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।
আমিরাতে দণ্ডিত ওই সব বাংলাদেশী প্রবাসী সম্পর্কে প্রবাসী কল্যাণ ভবনে গত বুধবার সাংবাদিকদের প্রতিমন্ত্রী বলেছেন, দুবাইয়ে আন্দোলন করে এরা বিদেশে বাংলাদেশের ভাবমর্যাদা নষ্ট করেছে। এ জন্য তাদের শাস্তি হয়েছে। দণ্ডপ্রাপ্ত প্রবাসীদের বিষয়ে কোনো হস্তক্ষেপ করব না। এটি আরব আমিরাতের রাষ্ট্রীয় বিষয়। এর আগে গত মঙ্গলবার প্রতিমন্ত্রী সংবাদমাধ্যমকে বলেছিলেন, বিক্ষোভ করায় আমিরাত বাংলাদেশীদের জন্য ভিসা বন্ধ করেছে। তবে এ বক্তব্যের সত্যতা নিশ্চিত করেননি দেশটিতে বাংলাদেশের কূটনীতিকরা।
উল্লিখিত ৫৭ বাংলাদেশীর বিরুদ্ধে আমিরাতের আদালতের দেয়া রায়ের নিন্দা জানিয়ে নিউ ইয়র্কভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ) তাদের মুক্তি দাবি করেছে। গত বুধবার সংস্থাটির এক বিবৃতিতে বলা হয়, শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভের দায়ে তড়িঘড়ি করে বিচারের মাধ্যমে আমিরাত কর্তৃপক্ষ যথেচ্ছভাবে ৫৭ বাংলাদেশীকে সাজা দিয়েছে। এতে বিচারপ্রক্রিয়া-স্বচ্ছতা নিয়ে গভীর উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে। মানবাধিকার সংস্থাটির সংযুক্ত আরব আমিরাতবিষয়ক গবেষক জোয়ে শিয়া বলেন, ৪৮ ঘণ্টার কম সময়ের মধ্যে রায় ঘোষণা করা হলে আসামিদের ন্যায্য বিচার পাওয়ার সুযোগ থাকে না। এ ধরনের সাজা ন্যায়বিচারকে উপহাস করে। ইউএই কর্তৃপক্ষের উচিত দণ্ডিত সবাইকে মুক্তি দেয়া।
বর্তমানে যেখানে প্রতিটি রাষ্ট্র বিদেশে অবস্থানরত নিজের নাগরিকের সুবিধা-অসুবিধার বিষয়ে কূটনৈতিক মাধ্যমে সদা-সতর্ক দৃষ্টি রাখে। সেখানে প্রবাসীকল্যাণ প্রতিমন্ত্রীর এই বক্তব্য আদৌ সমীচীন কি? শপথকৃত ব্যক্তি হিসেবে রাগ-অনুরাগের বশবর্তী হয়ে তিনি কি এ কথা বলতে পারেন?
সন্তান অপরাধী হলেও বাবা যেমন পিতৃত্ব অস্বীকার করতে পারেন না; তেমনি রাষ্ট্রও বিদেশে অবস্থানরত কোনো নাগরিকের সুবিধা-অসুবিধা অস্বীকার করতে পারে না। আমরা মনে করি, আমিরাতে দণ্ডপ্রাপ্ত বাংলাদেশীদের রাষ্ট্রীয়ভাবে সহায়তা দেয়া হোক। তাদের অপরাধের শাস্তি দেশে এনেও হতে পারে। সঙ্গত কারণে তাদের দায়িত্ব সরকার এড়াতে পারে না।


আরো সংবাদ



premium cement
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল পুনর্গঠন : তাজুল ইসলাম চিফ প্রসিকিউটর আবুধাবির কারাগার থেকে দেশে ফিরেছেন ১৪ বীর কোনাবাড়ীতে কলেজছাত্রকে গুলি করে হত্যা : কনস্টেবল গ্রেফতার অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সিদ্ধান্তগুলো যৌক্তিক : ফখরুল ‘একটি চক্র জামায়াত আমিরের বক্তব্য নিয়ে অপপ্রচার চালাচ্ছে’ অস্ত্র জমা দেয়নি শামীম ওসমান ও গাজী পরিবার এবি পার্টির উপদেষ্টার পদ ছাড়লেন ব্যারিস্টার রাজ্জাক কর্মকর্তাদের তালিকা চাওয়া নিয়ে বিতর্কে মন্ত্রণালয়ের দুঃখ প্রকাশ আশুলিয়ায় শ্রমিক দলের সমাবেশে দুই গ্রুপের সংঘর্ষ, আহত ৫ রূপগঞ্জে পরকীয়া সন্দেহে স্ত্রীকে হত্যা ছাত্র আন্দোলনে আহতদের চিকিৎসা না দেয়া ডাক্তারদের সনদ বাতিলের দাবি ড্যাবের

সকল