০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৪ ভাদ্র ১৪৩১, ৪ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরি
`
সারা দেশে নির্বিচার গ্রেফতার

এটি গ্রহণযোগ্য নয়

-

কোটা সংস্কার আন্দোলনে গত কয়েক দিনে সারা দেশে বিশেষ করে রাজধানী ঢাকায় আইনশৃঙ্খলা একেবারে ভেঙে পড়ে। পরিস্থিতি সামাল দিতে সরকার প্রথমে পুলিশ-র্যাব দিয়ে আইনশৃঙ্খলা ঠিক রাখতে সচেষ্ট হয়। তাতে কাজ না হলে সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) মাঠে নামায়। তাতেও কুলিয়ে উঠতে না পেরে সর্বশেষ কারফিউ জারি ও সেনা মোতায়েন করে।
সরকারি চাকরিতে দেশের সর্বোচ্চ আদালত গত রোববার কোটাবিষয়ক একটি রায় দিয়েছেন। ওই নির্দেশের আলোকে সরকার ইতোমধ্যে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। এতে আপাতত চাকরিতে কোটার বিষয়ে একটি মীমাংসা হয়েছে। তবে ছাত্রছাত্রীদের এ জন্য যে চড়া মূল্য দিতে হলো তার কী হবে। নয়া দিগন্তের এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, কোটা সংস্কার আন্দোলনে সংঘটিত সহিংসতায় গত আট দিনে ২০৯ জনের প্রাণহানি হয়েছে। শুধু প্রাণহানি নয়; বিপুল সম্পদের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এই অপূরণীয় ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে কত সময় লাগবে বলা মুশকিল। সময়ের ব্যবধানে হয়তো সম্পদের ক্ষয়ক্ষতি কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হবে কিন্তু যেসব তাজা প্রাণ ঝরে গেল, যেসব পরিবারের সদস্যরা নিহত হলেন, তাদের স্বজনের মনে সৃষ্ট ক্ষত কখনো শুকাবে না। সারা জীবন তাদের এ ক্ষতের জ্বালা বয়ে বেড়াতে হবে।
কোটা সংস্কারের দাবিতে শুরু হওয়া আন্দোলন ঘিরে গত কয়েক দিনে হামলা, সঙ্ঘাত-সংঘর্ষ ও সহিংসতার ঘটনায় ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে মামলা করা হয়েছে। এসব মামলায় হাজার হাজার আসামি করা হয়েছে। এর মধ্যে ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকায় দায়ের করা হয়েছে ৬১টি মামলা। পরিস্থিতি একটু নিয়ন্ত্রণে আসার সাথে সাথে ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ, নাশকতার অভিযোগে দায়ের করা এসব মামলায় বাছবিচারহীনভাবে বিরোধী দলের (বিএনপি-জামায়াত) নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করা হচ্ছে। সারা দেশে সাঁড়াশি অভিযানে পুলিশ ও র্যাব গত এক সপ্তাহে (১৭-২৩ জুলাই) বিরোধী দলের নেতাকর্মীসহ তিন সহস্রাধিক মানুষকে গ্রেফতার করেছে। বিরোধী নেতাকর্মীদের ঢালাওভাবে গ্রেফতার নিয়ে ইতোমধ্যে প্রশ্ন উঠেছে। তদন্ত ছাড়া কেমন করে তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উত্থাপন করা হচ্ছে তা বোধগম্য নয়। প্রশ্ন উঠেছে, এটি কি আইনের শাসনের নমুনা?
কোটা সংস্কারের আন্দোলন ছিল সম্পূর্ণ অরাজনৈতিক ও শান্তিপূর্ণ। কাদের কারণে প্রাণঘাতী হয়ে উঠল; তা আমলে না নিয়ে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে সরকার মরিয়া হয়ে উঠেছে বলে মনে হয়। অথচ সরকারের একাধিক মন্ত্রী কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে উসকানিমূলক বক্তব্য দিয়েছিলেন। তাদের উসকানিতে ছাত্রলীগ-যুবলীগ ক্যাম্পাসে ছাত্রছাত্রীদের ওপর হামলা চালায়। একই সাথে রংপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র নিরস্ত্র আবু সাঈদকে সরাসরি গুলি করে হত্যা করে পুলিশ। এর পরই পরিস্থিতি চরম সঙ্ঘাতময় হয়ে ওঠে। তাই সরকার নাশকতার দায় শুধু বিরোধী নেতাকর্মীদের ওপর চাপিয়ে দায়মুক্তি পেতে পারে না। আন্দোলন দমাতে পুলিশ বাহিনীর মারমুখী ভূমিকাও প্রশ্নের মুখে।
আমরা মনে করি, দোষারোপের সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে এসে কোটা আন্দোলনে ভাঙচুর ও সহিংসতায় প্রকৃতই যারা জড়িত, তাদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনতে হবে। শুধু শুধু রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে হয়রানি বা ঘায়েল করা কোনো অবস্থাতেই শুভবুদ্ধির পরিচায়ক নয়।


আরো সংবাদ



premium cement
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল পুনর্গঠন : তাজুল ইসলাম চিফ প্রসিকিউটর আবুধাবির কারাগার থেকে দেশে ফিরেছেন ১৪ বীর কোনাবাড়ীতে কলেজছাত্রকে গুলি করে হত্যা : কনস্টেবল গ্রেফতার অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সিদ্ধান্তগুলো যৌক্তিক : ফখরুল ‘একটি চক্র জামায়াত আমিরের বক্তব্য নিয়ে অপপ্রচার চালাচ্ছে’ অস্ত্র জমা দেয়নি শামীম ওসমান ও গাজী পরিবার এবি পার্টির উপদেষ্টার পদ ছাড়লেন ব্যারিস্টার রাজ্জাক কর্মকর্তাদের তালিকা চাওয়া নিয়ে বিতর্কে মন্ত্রণালয়ের দুঃখ প্রকাশ আশুলিয়ায় শ্রমিক দলের সমাবেশে দুই গ্রুপের সংঘর্ষ, আহত ৫ রূপগঞ্জে পরকীয়া সন্দেহে স্ত্রীকে হত্যা ছাত্র আন্দোলনে আহতদের চিকিৎসা না দেয়া ডাক্তারদের সনদ বাতিলের দাবি ড্যাবের

সকল