মূল সমস্যায় নজর দেয়া হয়নি
- ১৩ জুলাই ২০২৪, ০০:০৫
সারা দেশে নানা অপরাধে কিশোর গ্যাং আলোচনায় রয়েছে। তারা এখন এমন সব কাজ করছে যা সচরাচর আগে দেখা যায়নি। তাদের বিরুদ্ধে প্রধান অভিযোগ ছিল পাড়ায় মহল্লায় স্কুলগামী মেয়েদের উত্ত্যক্ত করা। ক্ষেত্রবিশেষে তা যৌন হয়রানি পর্যন্ত গড়াত। কিছু ক্ষেত্রে ঠুনকো কারণে প্রতিপক্ষের ওপর চড়াও হওয়ার ঘটনা ঘটত। সেই তরুণ গোষ্ঠী এখন গুরুতর অপকর্মে লিপ্ত। তাদের এ ধরনের অপরাধ থেকে বিরত রাখতে স্বরাষ্ট্র ও শিক্ষা মন্ত্রণালয় সম্প্রতি যৌথ কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। যদিও মূল সমস্যার জায়গাটি সেভাবে শনাক্ত করা হচ্ছে না। তরুণদের মধ্যে যে নির্মমতা সেটি বিচ্ছিন্নভাবে নেমে আসেনি। আমাদের রাষ্ট্র ও সামাজিক কাঠামোয় সাম্প্রতিক বছরগুলোতে চরম বিকৃতি ঘটেছে; এটি তার প্রতিফলন। রাষ্ট্রীয় পর্যায় থেকে শিষ্টের পালন ও দুষ্টের দমনের নীতি নেয়া না হলে যত মহতী উদ্যোগ নেয়া হোক না কেন, তা ফল দেবে না।
কিশোর গ্যাং নিয়ন্ত্রণ নিয়ে সংসদীয় কমিটিতে আলোচনা হয়েছে। কমিটির পরামর্শে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কিছু নির্দেশনা দিয়েছে। জোর দেয়া হয়েছে শ্রেণিকক্ষে ছাত্রদের হাজিরা থাকার ওপর। ছাত্রদের মূল্যায়নে ক্লাসে উপস্থিতিকে বিবেচনায় নেয়া হয়েছে। পরপর অনুপস্থিত থাকলে তাদের প্রতি শাস্তির বিধান এবং ছাড়পত্র দেয়ার হুমকিও রয়েছে। ছাত্রদের মননে প্রভাব ফেলতে পাঠ্যসূচির বাইরে সহায়ক শিক্ষাকার্যক্রমে জোর দেয়া হয়েছে। ইনডোর ও আউটডোর দুটো কর্মসূচির তাগিদ এতে রয়েছে। চিত্রাঙ্কন, বিতর্ক ও নানা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান নিয়মিত করা এবং রয়েছে নানা খেলাধুলার আয়োজন। এগুলো তদারক করতে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে নিয়মিত স্কুল পরিদর্শনের কার্যক্রম চলছে। এছাড়া অভিভাবক সমাবেশ করে তাদের নানা পরামর্শ দিতে বলা হয়েছে। শিক্ষায় আগ্রহী করে তুলতে বছরের শুরুতে বই উৎসব, উপবৃত্তি প্রদানসহ নানা আয়োজন আগে থেকে রয়েছে।
এ উদ্যোগ দেশে কিশোর গ্যাংয়ের উৎপাত কমাবে সেই আশা ক্ষীণ। বড় শহরগুলোতে পরিবারের বখে যাওয়া কিশোররা রাজনৈতিক নেতাদের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়। এসব কিশোর কোনো পরিণতি নিয়ে ভাবার ক্ষমতা রাখে না। তাই উঠতি বয়সী এসব ছেলেদের ব্যবহার করে নেতারা ছিনতাই, চাঁদাবাজি, মাদক কারবার, জমি দখলসহ হেন কোনো অপকর্ম নেই; যা করেন না। একই লক্ষ্যে বখাটে কিশোর-তরুণরা ব্যবহার হচ্ছে সারা দেশে। কিশোররা নিজেরাও নিজেদের সংগঠিত করে। ১০-৫০ জন নিয়ে এ ধরনের দল গড়ে ওঠে। তারা নিজেদের স্বার্থেও নানা অপরাধে জড়িয়ে যায়। বিচারের হাত থেকে রেহায় পেতে নিজেরা ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক চক্রের সাথে যুক্ত হয়। দেশের সব জায়গায় দুর্নীতির সীমাহীন বিস্তার দেখে কিশোররা এতে আরো বেশি করে জড়িয়ে পড়ছে। এর মাধ্যমে অবৈধ উপার্জনও হতে পারে, যা তার ভবিষ্যৎকে এক ধরনের বিলাসী জীবনের নিশ্চয়তা দেবে।
সারা দেশে অসংখ্য কিশোর গ্যাংয়ের অস্তিত্ব রয়েছে। তাদের সন্ত্রাস ও উচ্ছৃঙ্খলতায় দেশবাসী অতিষ্ঠ। এ অবস্থায় সরকারের পক্ষ থেকে যে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে তা একটি কৃত্রিম সমাধান। এতে কিশোর গ্যাংয়ের উৎপাত কমবে না। বরং রাষ্ট্রকে এমন উদ্যোগ নিতে হবে যাতে সন্ত্রাস অনিয়ম দুর্নীতিসহ যত বিকৃতি দেশে ঘটেছে; তার লাগাম টানতে কার্যকর ব্যবস্থা নেয়া যায়। এর পরে স্কুলকেন্দ্রিক নির্দেশনা কাজে আসতে পারে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা