সমাধানের লক্ষণ নেই
- ১২ জুলাই ২০২৪, ০০:০৫
বাংলাদেশে শিল্প বিকাশের সম্ভাবনার পথ সঙ্কুচিত। মাঝে মধ্যে কিছুটা আশা জাগালেও বর্তমানে তা হতাশায় নিমজ্জিত। শিল্পের মজবুত ভিত্তি গড়ে উঠতে প্রয়োজনীয় সব শর্ত এখন নেতিবাচক ধারায়। অর্থনৈতিক চরম অব্যবস্থাপনায় ডলারের বিপরীতে টাকা বড় ধরনের মূল্য হারিয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণে ডলারের আনুষ্ঠানিক দাম ১১৮ টাকা নির্ধারিত হলেও খোলাবাজারে তা বেশি মূল্যে বিক্রি হচ্ছে। অথচ মাত্র দুই বছর আগেও এক ডলারের বিপরীতে ৮৬ টাকা পাওয়া যেত। এমন নড়বড়ে অবস্থায় বিনিয়োগ অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। এর প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে বিদেশী বিনিয়োগে অব্যাহত পতনের মধ্যে। এ ছাড়া গ্যাস ও বিদ্যুৎ সঙ্কট উদ্যোক্তাদের জন্য দুঃস্বপ্ন হিসেবে হাজির হয়েছে। এ পরিস্থিতিতে টিম টিম করে জ্বলা শিল্পের সম্ভাবনাও যেন নিভতে বসেছে।
শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলো গ্যাসসঙ্কটে ভুগছে দীর্ঘ দিন ধরে। নতুন করে কোনো প্রতিষ্ঠান গ্যাস পাচ্ছে না। এর বিকল্প উচ্চমূল্যের জ্বালানি ও বিদ্যুতের ব্যবহার নিয়েও এখন দুশ্চিন্তায় শিল্পমালিকরা। কাগজ-কলমে দেশে চাহিদার দ্বিগুণ বিদ্যুৎ উৎপাদনের সক্ষমতা রয়েছে। অথচ সেখানে গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানে ঘণ্টার পর ঘণ্টা লোডশেডিং হচ্ছে। শিল্প এলাকায় নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ নেই। সহযোগী একটি দৈনিকে কয়েকটি কারখানার উৎপাদন পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করে শিল্প খাতে লোডশেডিংয়ের চিত্র তুলে ধরেছে। ময়মনসিংহের একটি স্পিনিং মিলের গত জুন মাসে ৮৪ ঘণ্টা লোডশেডিং হয়েছে। গড়ে প্রতিদিন ছয়বার বিদ্যুৎ গেছে। শিল্পমালিকদের অভিযোগ, তিন বছর ধরে জ্বালানি-সঙ্কটে স্বাভাবিক উৎপাদন কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারছেন না তারা। বিগত কয়েক মাসে তা তীব্রতর হয়েছে। এ সময় মিলগুলোর উৎপাদন ক্ষমতা ৬০ শতাংশ পর্যন্ত কমে গেছে। বিদ্যুতের বিপুল উৎপাদন ক্ষমতার শুভঙ্করের ফাঁকি কোথায়- সে প্রশ্ন সবার।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, ডলার সঙ্কটে কিভাবে শিল্প উদ্যোগ সঙ্কুচিত হচ্ছে। গত অর্থবছরে মূলধনী যন্ত্রপাতি আমদানিতে ১৭৭ কোটি ডলারের ঋণপত্র খোলা হয়। তার আগের অর্থবছরের তুলনায় যা ১৯ শতাংশ কমে গেছে। শিল্পের প্রয়োজনীয় প্রাথমিক কাঁচামাল আমদানি কমে গেছে ৪ শতাংশ। মধ্যবর্তী কাঁচামাল আমদানি কমেছে ১৬ শতাংশ। মেট্রোপলিটন চেম্বারের জরিপে দেখা যাচ্ছে, দেশের ব্যবসার সূচকের অবনতি ঘটছে। ২০২২ সালে তাদের করা সূচকে ১০০ মধ্যে অর্জিত নম্বর ছিল ৬১ দশমিক ৯৫, ২০২৩ সালে সেটি কমে হয়েছে ৫৮ দশমিক ৭৫। সীমাহীন লুটপাটের ফলস্বরূপ প্রকৃত উদ্যোক্তাদের ব্যাংক ঋণ পাওয়া কঠিন হয়ে গেছে। অর্থ লুটে নিয়েছেন এমন লোকেরা যারা পাচার করেছেন বিদেশে অথবা দেশে এমন খাতে বিনিয়োগ করেছেন; যা থেকে জাতি কখনো তার রিটার্ন পাবে না। সরাসরি বিদেশী বিনিয়োগ অব্যাহত কমছে। ২০২২ সালে ছিল ৩৪৮ কোটি ডলার, ২০২৩ সালে কমে হয়েছে ৩০০ কোটি ডলার।
আমাদের শিল্পভিত্তি দুর্বল। এর ওপর প্রতিকূলতা দিন দিন বাড়ছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে নতুন শিল্প উদ্যোগ বন্ধ হয়ে যাবে। পুরনো শিল্পমালিকরা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করার চিন্তা করবেন। এ অবস্থায়ও সরকারের পক্ষ থেকে শিল্পবান্ধব উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা