সংস্থার ভাবমর্যাদা ভূলুণ্ঠিত
- ১১ জুলাই ২০২৪, ০০:০০
কর্মসংস্থানের যে সঙ্কট চলছে; তা দেশের বেকারের সংখ্যাই বলে দেয়। বর্তমানে কর্মক্ষম প্রায় ২৭ লাখ মানুষ বেকার। এর কারণ, দীর্ঘদিন ধরে দেশে চলমান অর্থনৈতিক মন্দায় বেসরকারি খাতে কর্মসংস্থান একেবারে সঙ্কুচিত হয়ে পড়েছে। এখন ভরসার স্থল সরকারি চাকরি। কারণ এ দেশে সরকারই সবচেয়ে বড় চাকরিদাতা। দুর্ভাগ্যজনক হলো, সরকারি চাকরিপ্রার্থীদের নির্বাচনের দায়িত্বে নিয়োজিত সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ সরকারি কর্মকমিশনের (পিএসসি) নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের খবর শিক্ষিত তরুণসহ গোটা দেশবাসীকে উদ্বিগ্ন করে তুলেছে।
পিএসসির একটি নিয়োগপরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসে জড়িত থাকার অভিযোগে ইতোমধ্যে ১৭ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সিআইডির ভাষ্যমতে, ৫ জুলাইয়ের নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনায় অন্তত ৫০ জন জড়িত। গত সোমবার সিআইডির হাতে গ্রেফতার হওয়া এসব ব্যক্তির মধ্যে পিএসসির কর্মকর্তা-কর্মচারী ছয়জন। তাদের পাঁচজন কর্মরত। আরেকজনকে ১০ বছর আগে প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনায় চাকরিচ্যুত করা হয়েছিল। প্রশ্নপত্র ফাঁসে জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেফতার হওয়া পিএসসির পাঁচজনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
পিএসসির যে পাঁচজন এখনো কর্মরত, তাদের সবার বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়ে নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসে জড়িত থাকার অভিযোগ ছিল। বিভিন্ন সময় পিএসসির নিজস্ব অনুসন্ধান ও তদন্তে বিষয়টি বেরিয়ে এসেছে। এর মধ্যে তিনজনের ক্ষেত্রে অভিযোগের সত্যতা পেয়েছিল পিএসসি। যে কারণে একজনকে পদোন্নতি দেয়া হয়নি। একজনকে ঢাকার প্রধান কার্যালয় থেকে সিলেটে বদলি করা হয়। আরেকজনকে বরখাস্ত করা হলেও আইনি প্রক্রিয়ায় দায়িত্ব ফিরে পান।
প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনায় সিআইডির কাছে গ্রেফতার হওয়া ছয় অপরাধী গত মঙ্গলবার আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিয়েছেন। এর মধ্যে পিএসসির সাবেক ও বর্তমান কর্মচারী তিনজন।
রেলওয়ের নিয়োগপরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনায় পিএসসির চেয়ারম্যান সোহরাব হোসাইন নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের বলেন, প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগ তদন্তে পিএসসির একজন যুগ্মসচিবকে আহ্বায়ক করে কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে দ্রুত সময়ের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। যদি প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়ে থাকে কাউকে ছাড় দেয়া হবে না। এমনকি আমারও যদি কোনো সংশ্লিষ্টতা থাকে, তাহলে আমিও শাস্তির বাইরে যাব না। পিএসসির চেয়ারম্যানের এমন বক্তব্যের পর একটি প্রশ্ন সামনে চলে আসে, তিনি সংস্থায় বহালতবিয়তে থাকলে তার বিরুদ্ধে যদি সত্যি কোনো যোগসূত্র পাওয়া যায় তা প্রকাশ করার হিম্মত পিএসসির কারো আছে?
একইভাবে বলা যায়, গঠিত তদন্ত কমিটি কি স্বাধীনভাবে অনুসন্ধান করতে পারবে? সাংবিধানিক এই প্রতিষ্ঠানের ভাবমর্যাদা ক্ষুণ্ন হয়, এমন কোনো তথ্য-উপাত্ত প্রকাশের সৎসাহস কী তদন্ত কমিটি দেখাতে পারবে? এর চেয়ে বড় কথা, প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগ আসার পর পিএসসি নিজে মামলা করতে পারত, না হয় বিষয়টি দুর্নীতি দমন কমিশনেও (দুদক) পাঠাতে পারত; কিন্তু তা করা হয়নি। এটি রহস্যজনক।
বাস্তবতা হলো, পিএসসির ভেতর থেকে কারো সহযোগিতা ছাড়া কারো পক্ষে প্রশ্নপত্র ফাঁস করতে পারার কথা নয়। এখন সংস্থাটির উচিত নিজেদের ভাবমর্যাদা পুনরুদ্ধারে উচ্চপর্যায়ের তদন্ত কমিটি করে প্রশ্নপত্র ফাঁসে জড়িতদের কঠোর বিচারের আওতায় আনা।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা