২৪ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`
কর্মসংস্থানের সুযোগ কমছে

মানবসম্পদ সৃষ্টিতে ঘাটতি

-

দেশে প্রতি বছর কর্মজীবনে যোগ দেন প্রায় ২০ লাখ তরুণ। তাদের বেশির ভাগ উপযুক্ত চাকরি বা কাজের সুযোগ পাচ্ছেন না। কর্মসংস্থানের নতুন সুযোগ বাড়ছে না; বরং শিল্প-কারখানায় যেটুকু সুযোগ আছে তাও সীমিত হয়ে আসছে। গবেষণা প্রতিষ্ঠান বিআইডিএসের তথ্যমতে, ৬৬ শতাংশ স্নাতক শিক্ষাজীবন সম্পন্নকারী তরুণ কর্মহীন।
বিশ্বব্যাংকের হিসাবে, বাংলাদেশে টেকনিক্যাল খাতে দক্ষ মানবসম্পদের অপ্রতুলতা প্রায় ৬৯ শতাংশ। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) সর্বশেষ তথ্য, ২০২৪ সালের প্রথম প্রান্তিক শেষে বেকারের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ২৫ লাখ ৯০ হাজার। মাত্র তিন মাসের ব্যবধানে দেশে বেকারের সংখ্যা বেড়েছে দুই লাখ ৪০ হাজার। বেকারদের মধ্যে শিক্ষিতের সংখ্যা বেশি। এর কারণ, দক্ষ মানবসম্পদ হিসেবে তরুণদের প্রস্তুত করতে না পারা এবং শিল্প খাতের বিকাশ রুদ্ধ হয়ে আসা।
দেশে বেকার সমস্যার প্রধান কারণ জনসংখ্যা অনুযায়ী পর্যাপ্ত সংখ্যক শিল্পকারখানা গড়ে না ওঠা। কিন্তু তার চেয়েও দুঃখজনক বিষয় হলো, দক্ষ জনশক্তির অভাবে গার্মেন্টসহ শ্রমঘন শিল্প খাতের কারিগরি উচ্চপদগুলো বিদেশীদের হাতে চলে যাওয়া। বাংলাদেশী তরুণরা প্রতিযোগিতায় টিকছে না। ভাড়া করে আনা হচ্ছে বিদেশী তরুণদের। আমাদের তরুণদের মেধা বা যোগ্যতার অভাব আছে এমন নয়; বরং তাদের দক্ষ মানবসম্পদ হিসেবে গড়ে তুলতে না পারার ব্যর্থতা আমাদের।
গত শনিবার ঢাকা শিল্প বণিক সমিতির (ডিসিসিআই) এক মতবিনিময় সভায় বিষয়টি স্পষ্ট করেছেন দেশের বিশিষ্টজনরা। ডিসিসিআই সভাপতি জানান, আমাদের শিল্প খাতের প্রয়োজন মেটাতে গুরুত্বপূর্ণ পদগুলোতে বিদেশী দক্ষ কর্মী নিয়োগ দেয়া হয়। তাদের পেছনে ব্যয় হয় শত শত কোটি ডলার। এ অর্থের পুরোটা বিদেশে চলে যায়। দেশের অর্থনীতিতে কোনো অবদান রাখে না। আবার যেসব বাংলাদেশী প্রবাসে কাজ করতে যান; তারাও অদক্ষ বা আধাদক্ষ শ্রমিক হিসেবে খুব অল্প বেতনে কাজ করেন। সমস্যা সেই একই। দক্ষতার অভাব।
গত ১৫ বছরের বিশৃঙ্খল অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনায় দেশে বেসরকারি বিনিয়োগ প্রায় বন্ধের উপক্রম। জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাতে লেজেগোবরে অবস্থায় পুরো শিল্প খাতের বিকাশ রুদ্ধ। কিছু শিল্প বন্ধ হয়ে গেছে। অনেকগুলো ধুঁকছে। বহু শ্রমিক ছাঁটাই করতে বাধ্য হচ্ছে। এরাও নাম লেখাচ্ছেন বেকারের তালিকায়।
বিদ্যমান বাস্তবতায়, বিশেষ করে শিল্প খাতের প্রয়োজনের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে দক্ষ মানবসম্পদ তৈরিতে আরো বেশি মনোযোগী হওয়া দরকার এবং এ লক্ষ্যে শিক্ষা ও শিল্প খাতের সমন্বয় জরুরি।
ঢাকা শিল্প ও বণিক সমিতির মতবিনিময়ে বক্তাদের সবাই দক্ষ জনশক্তি গড়ে তোলার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। এ জন্য শিক্ষা এবং শিল্প খাতের মধ্যকার আস্থা ও বিশ্বাস বাড়ানোর ওপর জোর দেন তারা। কর্মমুখী শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের কথা উল্লেখ করেন। এর অর্থ হলো- আমাদের শিক্ষাবিদ, শিল্পপতি, রাজনীতিকসহ সবাই সমস্যাটি জানেন। কিন্তু বছরের পর বছর যায়, সমস্যার কোনো সুরাহা হয় না। এর পেছনে নিছক সদিচ্ছার অভাব নাকি অন্য কোনো কারণ আছে; তা ধোঁয়াশাপূর্ণ।
দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নে বড় বাধা বেকারত্ব। কিন্তু তার চেয়েও বড় বাধা সম্ভবত আমাদের সদিচ্ছাহীন রাজনীতিক ও সমাজপতিরা।


আরো সংবাদ



premium cement
আর পি সাহা বিশ্ববিদ্যালয়ে জিপিএ ৫ প্রাপ্তদের সংবর্ধনা গুণগত শিক্ষার সাথে প্রকৌশলীদের নৈতিকতার জ্ঞানার্জন করতে হবে হামদর্দের সহযোগিতায় ট্রাফিক পুলিশ বুথ উদ্বোধন ছওয়াব আন্তর্জাতিক এনজিও মেলায় মানবিক সাফল্য প্রদর্শন করেছে বৈষম্যহীন রাষ্ট্র পেতে চাইলে নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত করতে হবে বরিশালে আকিজ ফ্যানের পরিবেশক সম্মেলন বিচার বিভাগ সংস্কারে ৭ ডিসেম্বরের মধ্যে মতামত দেয়ার অনুরোধ ঢাকা থেকে সিসিকের সাবেক কাউন্সিলার লায়েক গ্রেফতার ডিগ্রি পরীক্ষার সময় বাড়ল ৩০ মিনিট হতাশা বাড়ছে বাংলাদেশের, দেখা নেই উইকেটের আন্দোলনে সক্রিয় ছিলেন গাজীপুরে বাসে বিদ্যুতায়িত হয়ে নিহত মাহিন

সকল