প্রয়োজনীয় পদক্ষেপে অবহেলা নয়
- ০৬ জুলাই ২০২৪, ০০:০০, আপডেট: ০৫ জুলাই ২০২৪, ২১:২৫
সারা দেশেই তাপমাত্রা আগের চেয়ে বেড়ে গেছে। বিশেষ করে রাজধানী শহর ঢাকায় আগের চেয়ে তুলনামূলকভাবে তাপমাত্রা বেশি অনুভূত হচ্ছে। এতে করে হিটস্ট্রোক ও শ্বাসকষ্টে আক্রান্তের পাশাপাশি মৃতের সংখ্যা বাড়ছে। এমন পরিস্থিতির মধ্যে তাপমাত্রা নিয়ে ভয়াবহ বার্তার কথা শোনাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।
এক গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে তাপমাত্রা ৪৫ ডিগ্রি এবং ২৫ বছরে ৪৬ ডিগ্রি ছাড়াবে। ২০৩৪ সালের দিকে আরেকটি চরম তাপপ্রবাহের শঙ্কা রয়েছে। এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড সোস্যাল ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশনের (এসডো) ওই গবেষণা প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, গত ৪৪ বছরে বাংলাদেশের গড় তাপমাত্রা দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেড়েছে। ২০৩০ সালের মধ্যে এ গড় আরো দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস বাড়তে পারে। ২০৫০ সালের মধ্যে গড় তাপমাত্রা ১ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেড়ে যাবে। অর্থাৎ ২০৩০ সালের মধ্যে তাপপ্রবাহ ৪৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়াবে, আর ২০৫০ সালের মধ্যে ৪৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়িয়ে যাবে।
ভবিষ্যৎ তাপপ্রবাহের পূর্বাভাসে দেখা যায়, বাংলাদেশের তাপমাত্রা দৈনিক গড় উষ্ণায়নের চেয়ে ১০-২০ শতাংশ বেশি বাড়বে। গত ৫০ বছরে এ দেশে তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ার পেছনে বাংলাদেশের ভৌগোলিক অবস্থান, জলবায়ুর পরিবর্তন, জলবায়ুর ওপর সমুদ্রের প্রভাব, জীবাশ্ম জ্বালানি ও শিল্পকারখানা থেকে কার্বন নির্গমন বৃদ্ধিকে দায়ী করা হয়। যা গ্রিন হাউজ গ্যাস বেড়ে যাওয়ায় সহায়তা করে।
বাংলাদেশে বর্তমানে যে তাপপ্রবাহ সেটি দীর্ঘ দিনের পরিবেশ ধ্বংসের একটি বিষফল। বৈশ্বিক ও আঞ্চলিক একাধিক ছাড়াও স্থানীয় আরো অনেক কারণে এমনটি হচ্ছে। অতিরিক্ত তাপপ্রবাহে ফসলের ক্ষতি হয়। ফলন কমে যায়। এতে করে খাদ্যের দাম বেড়ে যায়। অতিরিক্ত তাপপ্রবাহ গ্রামাঞ্চলের পশুপালন প্রভাবিত করে। পানির অভাব দেখা দেয়। এসব সমস্যা মোকাবেলায় তাপ-প্রতিরোধী ফসল, কৃষি বর্ষপঞ্জি পরিবর্তন করা অত্যাবশ্যক।
বৈশ্বিক তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ায় জলবায়ুর ওপর সমুদ্রের প্রভাব, সবুজায়ন ধ্বংস, নদী, পুকুর-খাল-বিল ও জলাশয় ভরাট করে ভবন নির্মাণ করায় গত অর্ধশতাব্দী ধরে অব্যাহতভাবে বাংলাদেশে তাপমাত্রা বেড়ে চলছে। এই উদ্বেগজনক পরিস্থিতি এখনই নিয়ন্ত্রণের উদ্যোগ না নিলে ভবিষ্যতে তাপমাত্রা মানুষসহ প্রাণ-প্রকৃতির জন্য অসহনীয় হয়ে উঠবে।
ভবিষ্যতে তাপমাত্রা সহনীয় রাখতে এর নিয়ন্ত্রণে অন্যতম উপায় গ্রিন হাউজ গ্যাস নির্গমন কমানোর মাধ্যমে তাপপ্রবাহ প্রবণতা কমানো। টেকসই ও পরিবেশবান্ধব নগর পরিকল্পনা ছাড়া এর সমাধান অসম্ভব। অতিরিক্ত তাপপ্রবাহে বিপুল জনগোষ্ঠী স্বাস্থ্য সমস্যাসহ দেশের গুরুত্বপূর্ণ খাতগুলো গুরুতর সমস্যার সম্মুখীন।
পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় গাছপালা অন্যতম উপাদান। আগে দেশে ২৫ শতাংশের বেশি সবুজায়ন ছিল। এখন তা ১২ শতাংশে নেমে এসেছে। গাছপালা যেহেতু কার্বন ডাই-অক্সাইড ও তাপ শোষণ করে অক্সিজেন সরবরাহ করে, বাতাসে অক্সিজেন ছড়িয়ে আশপাশের এলাকা শীতল রাখে; কিন্তু বন উজাড় হওয়ায় গাছের সংখ্যা মাত্রাতিরিক্ত কমায় এখন অক্সিজেন কমে গেছে। জলীয়বাষ্প কমে তাপমাত্রা বেড়ে গেছে।
এটি এখন প্রমাণিত যে, সবুজ জলাভূমির ওপর তাপমাত্রা কমা-বাড়া অনেকাংশে নির্ভর করে। তাই অসহনীয় তাপমাত্রা থেকে রক্ষা পেতে পরিবেশে ভারসাম্য বজায় রাখতে অবশ্যই বনভূমি এবং সবুজ জলাভূমি রক্ষায় পরিকল্পিত উদ্যোগ নিতে হবে। সাথে সাথে পরিকল্পিত নগরায়নের কোনো বিকল্প নেই।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা