২৪ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`
বড় বন্যার শঙ্কা প্রধানমন্ত্রীর

প্রস্তুতি নিতে হবে এখনই

-

বন্যা আসছে। এ মুহূর্তে সিলেট, সুনামগঞ্জে বন্যা চলছে। পরিস্থিতির অবনতি ঘটছে উত্তর-পূর্ব ও পূর্ব-মধ্যাঞ্চলের জেলাগুলোতে। নদ-নদীর পানি বাড়ছে। মূলত দু’টি কারণে এ বন্যা- টানা ভারী বর্ষণ ও ভারত থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল।
সিলেট ও সুনামগঞ্জে এ নিয়ে চলতি বছর তৃতীয় দফায় বন্যা দেখা দিয়েছে। সিলেটে গত ২৭ মে আগাম বন্যা দেখা দেয়। দুই সপ্তাহের বন্যায় পানিবন্দী ছিলেন ১০ লাখের বেশি মানুষ। সেই বন্যার পানি পুরোপুরি নামার আগে ১৫ জুন থেকে ফের বন্যা দেখা দেয় সিলেটে। এক সপ্তাহ ধরে চলে সে বন্যা। দ্বিতীয় দফা বন্যা শেষ হওয়ার আগে গত সোমবার থেকে নতুন করে শুরু হয়েছে তৃতীয় দফা বন্যা। আগামী আগস্টে বড় বন্যা হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী। সেটি হলে সিলেট সুনামগঞ্জের মানুষের অর্থনৈতিক মেরুদণ্ড ভেঙে পড়ার মতো অবস্থা হতে পারে। উপর্যুপরি বন্যার ধকল সামলে ওঠার মতো সামর্থ্য বেশির ভাগ মানুষের নেই।
এবার শুধু সিলেট, সুনামগঞ্জ নয়, আরো অনেক জেলায় বন্যার পদধ্বনি শোনা যাচ্ছে। উত্তরে তিস্তার পানি টানা বাড়ছে। লালমনিরহাট, রংপুর জেলার নদীতীরের নিচু এলাকা প্লাবিত হয়েছে। লালমনিরহাটে পাঁচটি উপজেলার নিম্নাঞ্চল ও চরাঞ্চলে ঘরবাড়িতে পানি। চর এলাকার রাস্তাঘাট তলিয়ে গেছে। সেখানে বড় ধরনের বন্যার আশঙ্কা করা হচ্ছে। কুড়িগ্রামের ধরলা ও ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বেড়ে বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে। পানি দ্রুত বেড়ে ব্রহ্মপুত্র ও ধরলা অববাহিকার নিচু এলাকার প্রায় ৮০টি চর-দ্বীপচরে পানি ঢুকেছে।
বন্যার পানি নেমে যাওয়ার পথে মধ্য ও পূর্বাঞ্চলের জেলাগুলোতে পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে। নেত্রকোনায় সব নদীর পানি বিপদসীমার উপরে। অন্তত ৬০টি গ্রাম প্লাবিত। অসংখ্য মানুষ পানিবন্দী। দেখা দিয়েছে খাদ্য ও বিশুদ্ধ খাবার পানির সঙ্কট। পাহাড়ি ঢলে মুহুরী নদীর বেড়িবাঁধ ভেঙে ফেনীর ফুলগাজী ও পরশুরাম উপজেলার ২৬ গ্রামের আট হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়েছে। ডুবছে নতুন নতুন গ্রাম। সীমাহীন দুর্ভোগে বাসিন্দারা।
এমনকি দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের পার্বত্য জেলাগুলোও মুক্ত নয় শঙ্কা থেকে। কক্সবাজারের কিছু জায়গায় জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। খাগড়াছড়ি ও রাঙ্গামাটিতে সড়ক যোগাযোগে বিঘœ ঘটছে।
আগস্টে বড় বন্যার আশঙ্কা প্রকাশ করে সরকারি কর্মকর্তাদের সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বলেছেন, প্রস্তুত থাকতে হবে।
প্লাবিত জেলাগুলোর প্রশাসন আগাম প্রস্তুতির কথা জানিয়েছে; কিন্তু মাঠপর্যায়ে প্রশাসনের কার্যক্রম দৃশ্যমান নয়। বড় কথা হলো, বন্যার মূল কারণ দূর করা দরকার। সিলেট অঞ্চলে বন্যার কারণগুলো সবার জানা। নাব্য হারানো নদীতে খনন না হওয়া। খাল-বিল ভরাট ও দখলে সঙ্কীর্ণ হয়ে পড়া। অর্থাৎ পানি নেমে যাওয়ার সব পথ রুদ্ধ হওয়া।
এ বিষয়ে উদ্যোগ নেয়া হয়নি এমন বলা যাবে না। নদী খননের বিভিন্ন প্রকল্পে হাজার কোটি টাকা লোপাট হয়েছে। কাজের কাজ কিছু হয়নি। আর প্রতিবেশী দেশ উজানের ব্যারাজের সব কপাট খুলে দিয়ে আমাদের পানিতে মারবে- এ যেন আমাদের নিয়তি।


আরো সংবাদ



premium cement