অবিলম্বে ব্যবস্থা নিন
- ০৩ জুলাই ২০২৪, ০০:০৫
বাংলাদেশের শুধু নয়; জাতিসঙ্ঘের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান ইউনেস্কো ঘোষিত বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ সুন্দরবন। কিন্তু আমাদের এই অমূল্য সম্পদ আজ বিপন্ন।
বাংলাদেশ-ভারতের ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া ৫৪টি নদীর পানির ন্যায্য হিস্যা থেকে আমরা বঞ্চিত। অসম পানিপ্রবাহ ও বণ্টনে দীর্ঘমেয়াদে সুন্দরবনের স্থলজ ও জলজ পরিবেশের লবণাক্ততা বাড়ছে। দেশের নদ-নদীতে পর্যাপ্ত পরিমাণে পানির প্রবাহ না আসার কারণে বাংলাদেশের জীববৈচিত্র্য কমে গেছে।
বিশ্ব পরিবেশ ও মরুকরণ দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ বোটানিক্যাল সোসাইটির উদ্যোগে গত শনিবার আয়োজিত এক অনলাইন সেমিনারে এমন শঙ্কার কথা বলেছেন পরিবেশবিদ, প্রাণীবিদ ও উদ্ভিদবিদরা।
লক্ষণীয়, সুন্দরবনে কম লবণাক্ততাসহিষ্ণু উদ্ভিদের সংখ্যা দ্রুত কমছে। জলবায়ুর পরিবর্তন সুন্দরবনের প্রাণবৈচিত্র্যে ক্রমাগত বিরূপ প্রভাব ফেলছে। এ বনের মাটি ও পানিতে লবণাক্ততা বেশি মাত্রায় বেড়ে যাওয়ায় এখানকার প্রধান উদ্ভিদ যেমন সুন্দরী, গড়ান, গেওয়া অনেক কমে গেছে। লবণাক্ততা বেড়ে যাওয়ায় উদ্ভিদের পুনঃ উৎপাদন হচ্ছে খুব নিম্ন মাত্রায়।
স্থলজ ও জলজ পরিবেশের লবণাক্ততা বাড়াচ্ছে। ফলে বনের স্থলজ ও জলজ পরিবেশের ভৌত ও রাসায়নিক গুণাগুণের বিপর্যয়ে জীববৈচিত্র্য বিপন্ন হচ্ছে। বনের পরিবেশের অবস্থা এত শোচনীয় যে, এসব উদ্ভিদের ওপর আবাসন ও খাদ্যে নির্ভরশীল পাখি (যা বাংলাদেশের মোট পাখির ৪৬ শতাংশ) ও অন্যান্য প্রাণীর অস্তিত্ব সঙ্কট তৈরি করেছে। যার মাত্রা প্রতিনিয়ত বেড়ে চলেছে। একই সাথে বিলুপ্তি ঝুঁকি বাড়ছে কুমিরের মতো প্রাণীর।
বাংলাদেশ-ভারতের ওপর দিয়ে প্রবাহিত যেসব যৌথ নদী রয়েছে; সেগুলো থেকে ভারত অন্যত্র পানি প্রত্যাহার করায় আমাদের নদীগুলোতে পানির প্রবাহ কমে গেছে। এ কারণে দেশের অনেক ছোট নদী বিলীন হয়ে গেছে। প্রতিক্রিয়ায় জীববৈচিত্র্য মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
এ দিকে বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধিতে সাগরের পানিতে লবণাক্ততা বেড়ে যাওয়ায় খারের স্তর ব্যাপক হারে বেড়েছে, যা উদ্ভিদ ও প্রাণীর ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলছে। আবার ঋতু ও জলবায়ু পরিবর্তনের সাথে সাথে উদ্ভিদ ও প্রাণীর জীবনের প্রাকৃতিক ঘটনাবলির পরিবর্তন হয়েছে বহু গুণে। জলবায়ুর পরিবর্তন কিভাবে আমাদের পরিবেশে ক্রমাগত পরিবর্তন ঘটাচ্ছে তা আমরা চাক্ষুষ দেখতে পাচ্ছি। সবার চোখের সামনে কিভাবে বিভিন্ন প্রজাতি হারিয়ে যাচ্ছে। জলবায়ুর পরিবর্তনে ইকোসিস্টেমের পরিবর্তন ঘটছে। এতে খাদ্যচক্রের ওপর ক্ষতিকর প্রভাব পড়ছে।
জলবায়ুর পরিবর্তন পরিবেশের ওপর যে বিরূপ প্রভাব ফেলছে; তা উদ্ভিদবিজ্ঞানীদের প্রশাসনের কাছে তুলে ধরতে হবে। যাতে সরকার কার্যকর পদক্ষেপ নিতে পারে। কিন্তু এ ক্ষেত্রে বড় সমস্যা হলো- আমাদের দেশে যারা রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছেন; তাদের সাথে অ্যাকাডেমিশিয়ানদের তেমন কোনো যোগাযোগ নেই। অথচ যেকোনো সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে প্রশাসনিক লোকদের সদিচ্ছা সবচেয়ে বেশি জরুরি।
এ ক্ষেত্রে নীতিনির্ধারকদের মনে রাখা আবশ্যক, তথ্য সংগ্রহে বস্তুনিষ্ঠতা ও ব্যাপকতা থাকলে দেশের জীববৈচিত্র্যের সঙ্কট ও তা উত্তরণে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ফোরামে দাবি তোলা সহজ হয়। তাই তাদের অ্যাকাডেমিশিয়ানদের সাথে যোগাযোগ বাড়িয়ে জনবায়ু পরিবর্তনজনিত হালনাগাদ তথ্য সংগ্রহে উদ্যোগ নিতে হবে। এটি জাতীয় স্বার্থেই করতে হবে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা