বাস্তবতা মানতে হবে
- ০১ জুলাই ২০২৪, ০০:০৫
২০২৯ সালে প্রথম দফায় ক্ষমতায় এসে বর্তমান সরকার জ্বালানি খাত, বিশেষ করে বিদ্যুৎ খাতের উন্নয়নে সর্বোচ্চ গুরুত্বারোপ করে। তখন এই খাতটি বিপর্যস্ত অবস্থায় ছিল তাতে সন্দেহ নেই। মানুষ বিদ্যুতের অভাবে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছিল। সে জন্য সরকার যখন বিদ্যুৎ খাতের উন্নয়নে একের পর এক প্রকল্প নিতে থাকে, এমনকি এ সম্পর্কিত প্রকল্প নিয়ে কোনোরকম প্রশ্ন উত্থাপনের সুযোগ রহিত করে সংবিধানের মূল চেতনার পরিপন্থী আইন পাস করে তখনো দেশবাসী তেমন একটা আপত্তি করেনি। তাই রেন্টাল, কুইক রেন্টাল ইত্যাদি নানা ধরনের বেসরকারি বিদ্যুৎ প্রকল্পের অনুমোদন দেয়ার পাশাপাশি সরকারি খাতে একের পর এক মেগা বিদ্যুৎ প্রকল্প হাতে নেয়া হয়।
এতে বিদ্যুৎ উৎপাদন বেড়েছে। দেশের চাহিদা পূরণ করে বাড়তি উৎপাদনের সক্ষমতায় পৌঁছেছে বলে দাবি করা হয়। এমনকি রফতানি করা হবে বলেও ঘোষণা দেয় সরকার। কিন্তু তার পর দেখা গেল, বিদ্যুতের অভ্যন্তরীণ চাহিদা পূরণ হচ্ছে না। রফতানি দূরের কথা, আমদানির জন্য ভারতীয় কোম্পানির সাথে অসম চুক্তি করে সরকার।
সেই অসম চুক্তির বিপুল সুবিধাভোগী আদানি গ্রুপের বিদ্যুৎকেন্দ্র সম্প্রতি বাংলাদেশে সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছে। প্রায় দেড় হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পাচ্ছে না বাংলাদেশ। ফলে রাজধানীসহ বড় শহরে বিদ্যুৎ সরবরাহ ঠিক থাকলেও গ্রামাঞ্চলে দৈনিক পাঁচ-ছয় ঘণ্টা লোডশেডিং করতে হচ্ছে। কল-কারখানায় উৎপাদন আগে থেকে ৩০ শতাংশের বেশি কমে গেছে।
আদানি গ্রুপের বরাত দিয়ে বলা হচ্ছে, কারখানায় যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। দেশের বেশির ভাগ পত্রপত্রিকায় আদানির অজুহাতের তথ্য তুলে ধরা হলেও এক-দু’টি পত্রিকা প্রকৃত কারণ উল্লেখ করেছে। রোববার একটি জাতীয় দৈনিকের এক রিপোর্টে পিডিবির দায়িত্বশীল সূত্রের বরাত দিয়ে বলা হয়, আদানি বিদ্যুৎকেন্দ্রের কাছে সরকারের বিদ্যুৎ বিল বকেয়া পড়েছে পাঁচ হাজার কোটি টাকার বেশি। এটি পরিশোধ না করায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ আছে।
এ তথ্য সত্য। ক’দিন আগে আদানির উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিদল সফরে এসে বকেয়া পরিশোধের তাগিদ দিয়ে গেছে। সরকার সে অর্থ দিতে না পারায় বিদ্যুৎ বন্ধ করে দিয়েছে। বাংলাদেশকে চাপে ফেলে বকেয়া আদায়ের কৌশল নিয়েছে।
ভারতের সাথে সরকারের নজিরবিহীন বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক, একতরফা নানা সুবিধা দেয়া কোনো কিছুই আদানির সরবরাহ অব্যাহত রাখতে পারল না। আদানির বকেয়া পরিশোধ করে বিদ্যুৎ আনতে হবে- এটি নিশ্চিত। পিডিবির পরিচালক জনসংযোগ ওই দৈনিককে জানান, আদানির পাওনা অর্থ প্রদানে সরকারের দায়িত্বশীল মহল উদ্যোগ নিচ্ছে।
আসলে বিদ্যুৎ খাতের প্রকল্পগুলো বাস্তবসম্মত নয়। বেসরকারি কেন্দ্রগুলো বসিয়ে রেখে ক্যাপাসিটি চার্জের নামে বিপুল অর্থ পরিশোধ করা শুধু অপরিণামদর্শী নয়, রীতিমতো হঠকারী। এর মাধ্যমে সরকার গোষ্ঠীস্বার্থ রক্ষা করছে এমন অভিযোগ আছে। এটি অর্থনীতিতে ধস নামানোর জন্য যথেষ্ট। এ দিকে পায়রাসহ দেশের একাধিক কেন্দ্রে উৎপাদন আংশিক বন্ধ থাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহে ঘাটতি দেখা দিয়েছে। পরিস্থিতির সহসা উন্নতির সম্ভাবনা নেই। এক্ষেত্রে অবিলম্বে বাস্তবসম্মত পদক্ষেপ নেয়া জরুরি।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা