নিরাপদ যাত্রা দূরপরাহত
- ২৮ জুন ২০২৪, ০০:০৫
রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশে সড়কের মাঝখানে, যেখানে-সেখানে বাস থামিয়ে যাত্রী উঠানো-নামানো হয়। সবখানে দেখা যায়, এক বাস আরেক বাসকে পাশ কাটিয়ে আগে যাওয়ার প্রবণতা। অন্যদিকে, অনেক স্থানে ব্যস্ত সড়কে ঝুঁকি নিয়ে রাস্তা পার হতে দেখা যায় পথচারীদের। একদিকে পথচারীরা ঝুঁকিপূর্ণভাবে রাস্তা পার হন, অন্যদিকে চালকরা ট্রাফিক আইন মানেন না। ফলে দুই পক্ষের অসতর্কতায় প্রতিনিয়ত সড়কে ঘটছে দুর্ঘটনা। এভাবে হতাহত মানুষের সংখ্যা বাড়ছে বহুগুণে।
সড়ক দুর্ঘটনা দিন দিন বিশ্বব্যাপী মানুষের হতাহতের অন্যতম প্রধান কারণ হয়ে উঠছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য, বিশ্বে প্রতি বছর প্রায় ১০ লাখ ৩৫ হাজার মানুষের মৃত্যু হয় সড়ক দুর্ঘটনায়। সব বয়সের মানুষের ক্ষেত্রে দুর্ঘটনাজনিত মৃত্যুর অষ্টম প্রধান কারণ সড়ক দুর্ঘটনা। সংস্থার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশ্বব্যাপী ৯০ শতাংশ সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোতে; যার সংখ্যা উন্নত দেশগুলোর তুলনায় তিনগুণ বেশি।
বাংলাদেশে সড়ক দুর্ঘটনায় বছরে গড়ে পাঁচ-ছয় হাজার মানুষ মারা যান। রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের তথ্যমতে, ২০২১ সালে দেশে মোট পাঁচ হাজার ৩৮১টি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে। কমপক্ষে ছয় হাজার ২৬৪ জন মানুষ নিহত হন। আহত হন ছয় হাজার ৪৬ জন।
সড়কে নিরাপত্তা সবার জন্যই গুরুত্বপূর্ণ। দেশে সড়কের নিরাপত্তার বিষয়টি দীর্ঘ দিন ধরে তুমুল আলোচিত বিষয়। ২০১৮ সালে বিমানবন্দর সড়কে দুই শিক্ষার্থীর মৃত্যুর প্রতিক্রিয়ায় গড়ে ওঠা কিশোরদের দেশ-কাঁপানো নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের কথা এখনো সবার স্মৃতিতে জ্বলজ্বল করছে। কিন্তু সরকারের নতুন আইন প্রণয়ন ও তা যথাযথভাবে কার্যকরে ব্যর্থতায় সারা দেশে সড়ক-মহাসড়কে যানবাহন চলাচলে কোনো শৃঙ্খলা নেই। থাকলে সড়কে আগের চেয়ে বেশি মানুষের প্রাণ ঝরত না।
সরকারি প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) পরিসংখ্যান বলছে, গত বছরের প্রথম তিন মাসের তুলনায় চলতি বছর একই সময়ে দুর্ঘটনা বেড়েছে ৪৩ দশমিক ৯৫ শতাংশ এবং মৃত্যু বেড়েছে ৩০ শতাংশ।
গত সোমবার রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের গণমাধ্যমে পাঠানো ‘ঈদুল আজহা উদযাপনকালে সংঘটিত সড়ক দুর্ঘটনার প্রতিবেদনে’ উল্লেখ করা হয়েছে, ঈদুল আজহার ১৩ দিনে ২৫১টি সড়ক দুর্ঘটনায় ২৬২ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন কমপক্ষে ৫৪৩ জন। দুর্ঘটনায় ১৩ দিনে ৯৯৮ কোটি ৫৫ লাখ ৩৭ হাজার টাকার মানবসম্পদের ক্ষতি হয়েছে।
রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের মতে, সড়ক দুর্ঘটনার প্রধান কারণ, ত্রুটিপূর্ণ যানবাহন, বেপরোয়া গতি, চালকদের অদক্ষতা ও শারীরিক-মানসিক অসুস্থতা, বেতন-কর্মঘণ্টা নির্দিষ্ট না থাকা, মহাসড়কে স্বল্পগতির যানবাহন চলাচল, তরুণদের বেপরোয়া মোটরসাইকেল চালানো, জনসাধারণের মধ্যে ট্রাফিক আইন না জানা ও না মানার প্রবণতা, দুর্বল ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা, বিআরটিএর সক্ষমতার ঘাটতি এবং গণপরিবহনে চাঁদাবাজি।
দেশে প্রতি বছর দুই ঈদের সময় সড়কে যানবাহন চলাচল অন্য সময়ের চেয়ে বহুগুণে বেড়ে যায়। এ সময় সড়ক-ব্যবস্থাপনা বলে কিছু থাকে না। পরিণামে ব্যাপক হারে দুর্ঘটনা ঘটে। সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণে আনতে হলে সর্বপ্রথম দরকার টেকসই সড়ক-ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলা। তাহলে আশা করা যায় সড়কে শৃঙ্খলা ফিরবে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা