টেকসই সমাধান দরকার
- ২৭ জুন ২০২৪, ০০:০৫
হাজারো নদীর দেশ বাংলাদেশে নদীভাঙন বড় সমস্যা। জাতিসঙ্ঘের জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক অভ্যন্তরীণ সর্বোচ্চ প্যানেল-আইপিসিসি বলছে, নদীভাঙন এখন বাংলাদেশের সর্বোচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ দুর্যোগ। আইপিসিসির এক পরিসংখ্যান বলছে, সাম্প্রতিক সময়ে আমাদের দেশে বছরে গড়ে প্রায় দুই লাখ মানুষ নদীভাঙনে সর্বস্বান্ত হচ্ছেন।
নদীভাঙনের শিকার জনগোষ্ঠী জীবন-জীবিকার জন্য গ্রাম ছেড়ে শহরে বস্তিগুলোতে এসে ভিড় করছে। একই সংস্থার তথ্যমতে, বাংলাদেশে প্রতিবছর পাঁচ-ছয় হাজার হেক্টর জমি বিলীন হচ্ছে নদীভাঙনে। এ হিসাবে বিগত ২০ বছরে নিশ্চিহ্ন হয়েছে অন্তত এক লাখ হেক্টর ভূমি। আর্থিক হিসাব ধরলে যার ক্ষতির পরিমাণ প্রায় দুই লাখ কোটি টাকা।
গণমাধ্যমে প্রকাশ, এবারো বর্ষার শুরুতে ইতোমধ্যে দেশের বিভিন্ন স্থান বন্যাকবলিত হয়েছে। পানি কমতে থাকায় নদীভাঙনের শিকার হচ্ছে বহু পরিবার। সহযোগী একটি জাতীয় দৈনিকের খবর, কুড়িগ্রামে তিস্তায় তীব্র নদীভাঙন দেখা দিয়েছে। ইতোমধ্যে এখানে অর্ধশতাধিক বসতভিটা, ফসলি জমি নদীতে ভেঙেছে। জামালপুরে যমুনা ও ব্রহ্মপুত্র টানা দুই সপ্তাহের ধীরগতির ভাঙনে বিলীন হয়েছে শতাধিক ঘরবাড়ি। শত একর ফসলি জমি। ফরিদপুরে পদ্মার ভাঙনে কয়েক শত বিঘা ফসলি জমি বিলীন হয়েছে। লালমনিরহাটে তিস্তা ও ধরলার ভাঙনে দিশেহারা মানুষজন। পঞ্চগড়ের করতোয়ার ভাঙনে কয়েকশ’ একর ফসলি জমি বিলীন হয়েছে। রংপুরের তিনটি উপজেলায় তিস্তার ভাঙন তীব্র।
জলবায়ুর পরিবর্তনে দেশের বড় বড় নদীর ভাঙনের তীব্রতা কয়েক বছর ধরে বাড়ছে। ফলে বহু পাড়া-মহল্লা, ইউনিয়ন এমনকি উপজেলার মানচিত্রও পাল্টে যাচ্ছে। এমনকি সীমান্তের অনেক নদীর অস্বাভাবিক ভাঙন দেশের সীমান্ত রেখা বদলে দিচ্ছে। সেন্টার ফর এনভায়রনমেন্টাল অ্যান্ড জিওগ্রাফিক ইনফরমেশন সার্ভিস (সিইজিআইএস) সীমান্ত এলাকায় নদীভাঙন বিধ্বংসী হয়ে ওঠার কারণ খুঁজে বের করেছে। প্রতিষ্ঠানটির গবেষকরা বলছেন, বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে যে ৫৪টি আন্তর্জাতিক নদী প্রবাহিত হচ্ছে এর প্রধান ব্রহ্মপুত্র, পদ্মা, যমুনা ও মেঘনা। এ চারটি নদী সবচেয়ে বেশি ভাঙনপ্রবণ। প্রধান নদীগুলো ছাড়াও তিস্তা, ধরলা, আত্রাই, পুরনো ব্রহ্মপুত্র, কুশিয়ারা, খোয়াই, সুরমা, মনু, মগড়া, ধনু, জুরী, সাঙ্গু, ধলাই, গোমতী, মাতামুহুরি, মধুমতি, সন্ধ্যা, বিশখালী এসব নদীও ভাঙনপ্রবণ। তবে নদীরপাড় গঠনের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যে সবচেয়ে বেশি ভাঙনপ্রবণ যমুনা; এরপর পদ্মা।
উজানে ভারত অভিন্ন ৫৪টি নদীর পানির ন্যায্য হিস্যা আমাদের না দেয়ায় দেশের অনেক নদী মরণ দশায়। একই সাথে বর্ষায় অতিরিক্ত পলি পড়ে নদীর তলদেশ ভরাট, বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পে নদীর গতিপথ পরিবর্তন এবং শাখা-উপশাখা দখল ও ভরাট ডেকে আনছে নদীভাঙনের এই সর্বনাশ। এসব নদীর অন্তত ১৫০ জায়গায় এখনো বড় ধরনের ভাঙন অব্যাহত। সিইজিআইএসের পূর্বাভাস, চলতি মৌসুমে দেশের উত্তর ও মধ্যাঞ্চলের ১৩ জেলায় পদ্মা, যমুনা ও তিস্তার ভাঙনে প্রায় ২৮ বর্গকিলোমিটার এলাকা বিলীন হতে পারে।
এবারের বর্ষায় ভাঙনপ্রবণ এলাকায় নদী তীরবর্তী জনপদের মানুষ আতঙ্কে রয়েছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, ভাঙন ঠেকাতে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেই। অথচ এ খাতে গত দুই দশকে লাখ কোটি টাকার বেশি ব্যয় হয়েছে। তবু কার্যকর কোনো ব্যবস্থা করতে পারেনি।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা