২৪ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`
রাজধানীজুড়ে রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি

ভোগান্তি দেখার কেউ নেই

-

এ মুহূর্তে চলছে বর্ষা মৌসুম। বৃষ্টি হলে পানিতে সয়লাব হয়ে যাচ্ছে নিষ্কাশন ব্যবস্থাহীন রাজধানীর অনেক এলাকা। এর সাথে পাল্লা দিয়ে চলছে অব্যাহত রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি। সেটিও চলছে কোনোরকম নিয়মনীতি না মেনে একেবারে অপরিকল্পিতভাবে। পুরো নগরীতে এখন খানাখন্দে ভরা ক্ষতবিক্ষত সড়ক।
একটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, ঢাকার দুই সিটির বিভিন্ন এলাকায় ক্ষতবিক্ষত সড়কের পরিমাণ প্রায় ৩০০ কিলোমিটার। কোথাও খোঁড়াখুঁড়ির পর ফেলে রাখা হয়েছে ক্ষতবিক্ষত সড়ক। কাজ শেষ হলেও মেরামত করা হয়নি এমন সড়কও অনেক। খানাখন্দে ভরা এসব সড়কে বৃষ্টির পানি জমছে, হয়ে পড়ছে জলাবদ্ধ ও কর্দমাক্ত। অন্তহীন দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন লাখ লাখ নগরবাসী। এক দিন-দু’দিন বা দু’-এক সপ্তাহের নয়, মাসের পর মাস, কখনো বছরজুড়ে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে রাজধানীতে চলাচলকারী সবাইকে। অফিস-আদালত, স্কুল-কলেজ, বাজার-ঘাটে যেতে মানুষের নাভিশ্বাস উঠছে। এমনকি ব্যস্ততম সড়কে গণপরিবহনও স্বাভাবিক নিয়মে নির্ধারিত রুটে চলতে পারছে না। অনেক বাস ভিন্ন রুটে ঘুরে সার্ভিস চালু রেখেছে। বিকল্প যে রুটে বাসগুলো চলছে সেসব সড়কেও বাড়তি চাপ পড়ছে। সৃষ্টি হচ্ছে তীব্র যানজট। সে জট ছড়িয়ে পড়ছে বিস্তৃত এলাকায়।
দৈনিকটির খবরে বলা হয়, পুরান ঢাকার অন্তত সাতটি ওয়ার্ডের বিভিন্ন এলাকায় প্রধান-অপ্রধান বিভিন্ন সড়কের অবস্থা এতটা করুণ যে, ওইসব এলাকায় চলাচল করা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ছে। আরো অন্তত চারটি ওয়ার্ডের অবস্থাও গুরুতর। অলিগলিসহ সব সড়ক কাটাকাটি করায় অত্যন্ত দুরূহ পথ পেরিয়ে এলাকাবাসীকে প্রতিদিন চলাচল করতে হচ্ছে। ঢাকা দক্ষিণ সিটির উত্তর শাহজাহানপুর, লালবাগসহ মহানগরীর বিভিন্ন এলাকার সড়কে উন্নয়ন কাজ চলছে। সর্বত্র মানুষ চরম ভোগান্তির মধ্যে সময় কাটাতে বাধ্য হচ্ছে।
ঢাকা উত্তর সিটির তুরাগ, উত্তরখান ও দক্ষিণখানের সড়কগুলোও দীর্ঘদিন ধরে খুঁড়ে ফেলে রাখা হয়েছে। ওই তিন এলাকার প্রধান সড়ক থেকে অলিগলি সব ক্ষতবিক্ষত। বর্ষায় ওইসব এলাকার চলাচল যে কতটা ভয়াবহ এবং বিপজ্জনক সেটি কেবল স্থানীয়রা জানেন। মানুষ উন্নয়নের জ্বালায় অতিষ্ঠ! তাদের জীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। একই অবস্থা মোহাম্মদপুরের বেশ কিছু সড়কের। এসব সড়ক খুঁড়ে ঢাকা ওয়াসা পানির পাইপলাইন বসিয়েছে। পরে আর সংস্কারের কাজ সম্পন্ন হয়নি। দুুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন বাসিন্দারা।
কুড়িল প্রগতি সরণিতে মেট্রোরেলের কাজে সেবা সংযোগ প্রতিস্থাপন করা হচ্ছে। বসুন্ধরা গেট, যুমনা ফিউচার পার্কের সামনের এলাকা পর্যন্ত তীব্র যানজট হচ্ছে।
বর্ষার মৌসুমে রাজধানীর সড়ক খুঁড়ে উন্নয়ন কাজ করার ব্যাপারে নীতিমালায় নিরুৎসাহিত করা হলেও বিভিন্ন সংস্থার কাজ চলছে। অনেক ক্ষেত্রে একই এলাকার অনেক সড়ক একসাথে কেটে ফেলা হয়েছে।
উন্নয়ন কর্মকাণ্ড এমন অপরিকল্পিত ও অনিয়মতান্ত্রিক হতে পারে না। বিশ্বের সর্বত্র নগর কর্তৃপক্ষ মানুষের ভোগান্তি ন্যূনতম পর্যায়ে রেখে উন্নয়ন করে। সম্ভব স্বল্পতম সময়ে তা সম্পন্ন করে। এ দেশে ঘটে উল্টো। নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ করার কোনো তাগিদ নেই। মানুষের ভোগান্তির বিষয়টি কারো বিবেচনায় আছে বলে মনে হয় না।
এ বিষয়ে কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।


আরো সংবাদ



premium cement