জনস্বার্থের মূল্যায়ন দরকার
- ২৪ জুন ২০২৪, ০০:০৫
বাংলাদেশ ভারত দুই অনন্য প্রতিবেশী। বাংলাদেশ তিন দিক দিয়েই ভারত-বেষ্টিত। দেশটির সাথে ৪ হাজার ১৫৬ কিলোমিটার সীমানা রয়েছে। বিশ্বের পঞ্চম দীর্ঘতম এই স্থলসীমানা দুমফ দেশের সম্পর্কের অন্যতম উপাদান। নানা বিষয়ে ভারতের ওপর নির্ভরতা থেকে বেরিয়ে আসতে পারেনি বাংলাদেশ। তবে ভারতের সাথে সম্পর্ক নিয়ে কথার যে ফুলঝুরি তার সাথে বাস্তবতার মিল নেই। এখন পর্যন্ত বড় দেশ হওয়ার সুবাদে ভারত সব সুযোগ এককভাবে তুলে নিচ্ছে। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরেও তারই প্রতিফলন দেখা গেল।
দুই প্রধানমন্ত্রীর শীর্ষ বৈঠকে ১০টি সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে। এগুলোতে আগের মতো ভারতের ব্যবসায়, কানেকটিভিটি প্রাধান্য পেয়েছে। বাংলাদেশের জন্য রয়েছে চিকিৎসা ক্ষেত্রে সহজে ভিসাপ্রাপ্তি, তিস্তা নদী সংরক্ষণে সহায়তা। চিকিৎসাসেবার মান ভারত-বাংলাদেশে প্রায় সমপর্যায়ের। কিছু জটিল রোগের চিকিৎসার সুযোগ আছে ভারতে। এ ক্ষেত্রে ভারতের লাভের অঙ্ক বাড়বে। তিস্তা নদীর পানির হিস্যা পাওয়ার জন্য বাংলাদেশ একটি চুক্তি করতে চায়। বর্তমান সরকারের পুরো সময়কালে এ ব্যাপারে ভারত শুধু প্রতিশ্রুতি দিয়ে গেছে। এ ব্যাপারে চীন তিস্তা প্রকল্প করার প্রস্তাব দেয়ার পর ভারত তিস্তা নদী সংরক্ষণে আগ্রহ দেখাচ্ছে। এতে পানির নিশ্চয়তা নেই। কিন্তু ভারতের কারণে মূল তিস্তা প্রকল্পটি আপাতত নাকচ হয়ে গেল। কলকাতা থেকে চট্টগ্রাম ও রাজশাহী ট্রেন ও বাস চলাচলে দুই দেশের মধ্যে যোগাযোগ বাড়বে। ভারতের সহায়তায় সিরাজগঞ্জে অভ্যন্তরীণ কনটেইনার ডিপো তৈরি হবে। এ ধরনের একটি স্থাপনার সেখানে আদৌ প্রয়োজন রয়েছে কি না তার সমীক্ষা দরকার। কারণ ভারতের অর্থায়নে পরিচালিত স্থাপনা নির্মাণে মূলত ভারতের স্বার্থ রক্ষিত হওয়ার অভিযোগ রয়েছে। ভারতের অর্থায়নে চলমান প্রকল্পে অর্থ ছাড় খুব সামান্য। ফলে নতুন প্রকল্প বাস্তবায়নের সম্ভাব্যতা নিয়ে সংশয় রয়েছে।
ভারতের সাথে বাংলাদেশের প্রধান ইস্যুগুলো হচ্ছে আন্তর্জাতিক নদীগুলোর পানি বণ্টন, বিপুল বাণিজ্য ঘাটতি পূরণ ও সীমান্ত হত্যা বন্ধ। এগুলো বরাবরের মতো পাশ কাটানো হয়েছে। সীমান্ত হত্যা নিয়ে ভারতের দায়িত্বশীলরা এবারো দায়হীন কথা বলেছেন। তাতে আমাদের সীমান্তে পরিস্থিতির কোনো উন্নতি হচ্ছে না। অভিন্ন সব নদীর পানি বণ্টন এবং বাণিজ্য ঘাটতি দূরীকরণে জোরালো কোনো আলোচনা দেখা গেল না।
ভারত বিশ্বের বৃহৎ গণতান্ত্রিক দেশ বলে গর্ব করে। কিন্তু দেশটির বিরুদ্ধে বাংলাদেশের গণতন্ত্র অকার্যকর ও মুখ থুবড়ে পড়ার পেছনে কলকাঠি নাড়ার অভিযোগ দীর্ঘদিনের। এ অবস্থায় দেশটির শীর্ষ নেতৃত্ব দাবি করছে দুই দেশ একে অপরের বন্ধু এবং একসাথে এগিয়ে যাবে। উল্লেখ করা হচ্ছে, বাংলাদেশের ‘ভিশন ২০৪১’ ও ভারতের ‘বিকশিত ভারত ২০৪৭’ উভয় দেশ মিলে বাস্তবায়ন করবে।
বাংলাদেশের জনগণের সাথে ভারতের সম্পর্কের বিষয়টি বিবেচনায় নেয়া হয় না। কেবল সরকারের সাথে সম্পর্ককে তারা গুরুত্ব দিয়ে আসছে। বৃহত্তর জনগণের মনে ভারত যে বঞ্চনাবোধ তৈরি করছে সেটি দীর্ঘমেয়াদে ভারতের জন্য ভালো হবে না। এ অবস্থার উত্তরণে ভারতকে বাংলাদেশের জনগণের স্বার্থের বিষয়ে আন্তরিক হতে হবে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা