দম ফেলার সুযোগ থাকবে তো
- ০৬ জুন ২০২৪, ০০:০৫
দেশ চালাতে হলে রাজস্ব আহরণ অত্যাবশক। রাজস্ব আয় আধুনিক রাষ্ট্রের মেরুদণ্ড। এর ওপর ভিত্তি করে রাষ্ট্রের যাবতীয় পরিচালন ও উন্নয়ন ব্যয় চলে। রাজস্ব আয়ে রয়েছে যুৎসই কর-ব্যবস্থাপনা। সুষ্ঠু কর ব্যবস্থাপনায় রাষ্ট্র সমৃদ্ধ হয়। মানুষের ওপর কর আরোপ ও তা আদায়ে সরকারের নানা প্রতিষ্ঠান আছে। আধুনিক রাষ্ট্রে মানুষের ওপর কতটা কর চাপানো যাবে তারও একটি যৌক্তিক সীমা আছে। সরকারের বিশেষজ্ঞরা সেসব বুঝে করহার নির্ধারণ করেন। করের হার যৌক্তিক সীমা ছাড়িয়ে গেলে তা সমালোচনার জন্ম দেয়। আর বাড়াবাড়ির পর্যায়ে গেলে মানুষের জন্য বাড়তি বোঝা হয়ে ওঠে। সরকার গণবিরোধী হিসাবে চিহ্নিত হয়।
গত ১৫ বছর ধরে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের পুরো সময়জুড়ে দেশ পরিচালনায় শৃঙ্খলা বা সুশাসনের অভাব প্রকটভাবে দেখা গেছে। এই সময়ে বিরোধী মত দমন করে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিমুক্ত এমন এক শাসন প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে, যা মূলত স্বেচ্ছাচারমূলক। ক্ষমতাসীনরা প্রতি বছরের বাজেটে এবং বাজেটবহির্ভূত কর আরোপের ক্ষেত্রে যৌক্তিক সীমা রক্ষা করতে পারেননি। তাদের পরিকল্পনাহীন, অদক্ষ ও বিশৃঙ্খল ব্যবস্থাপনায় অর্থনীতি ক্রমে তলানিতে এসে ঠেকেছে। এখন অবস্থা এমন পর্যায়ে যে, অভ্যন্তরীণ সম্পদ আহরণ থেকে সরকারের দৈনন্দিন ব্যয় নির্বাহের অবস্থাও নেই। সে জন্য বিদেশী সংস্থার কাছ থেকে কঠিন শর্তে ঋণ নিতে হচ্ছে সরকারকে। শর্ত অনুযায়ী, মানুষের ওপর বাড়তি করারোপ, ভর্তুকি তুলে নেয়ার মতো পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হচ্ছে।
এমন প্রেক্ষাপটে আজ আসছে ২০২৪-২০২৫ সালের নতুন বাজেট। এতে মানুষের ওপর নতুন করে চাপানো হচ্ছে বিপুল করের বোঝা। এমনকি নিত্যপ্রয়োজনীয় যেসব সেবা দরিদ্রতম মানুষেরাও ব্যবহার করেন সেগুলোর ওপরও বসছে বাড়তি কর। অথচ বাড়ছে না করমুক্ত আয়ের সীমা। তুলে দেয়া হচ্ছে ক্ষেত্রবিশেষে কর অব্যাহতি বা রেয়াত সুযোগ। তবে অবৈধভাবে উপার্জিত অর্থ বৈধ করার অনৈতিক সুযোগ বহাল থাকছে বরাবরের মতো। এ প্রবণতা অবৈধ অর্থ উপার্জনে সরকারঘনিষ্ঠরা বেশি জড়িত এমন অভিযোগের বিশ্বাসযোগ্যতা দেয়।
বাড়তি করারোপের এ পদক্ষেপ মূলত সরকারের অসফলতার দৃষ্টান্ত ছাড়া কিছু নয়। তারা প্রতি বছর বিরাট অঙ্কের বাজেট ঘোষণা করে নিজেদের সাফল্য দেখানোর সুযোগ নিয়েছেন। কিন্তু রাজস্ব বাড়াতে পারেননি। রাজস্ব বোর্ডের ওপর এমন লক্ষ্যমাত্রা চাপিয়ে দিয়েছেন যেটি আদৌ বাস্তবসম্মত কি না ভাবেননি। রাজস্ব আয়ের খাতগুলো সচল ও সক্রিয় করতে পারেননি। এমনকি অর্থনীতিতে লাগামহীন লুটপাট ও অর্থ পাচার রোধ করতে পারেননি। বরং তাতে প্রশ্রয় দেয়ার প্রামাণ্য অভিযোগ আছে।
বস্তুত লুণ্ঠনপ্রবণতার বাইরে বেরুতে না পারার কারণে সরকারের জন্য রাজস্ব ব্যবস্থাপনা যৌক্তিক করা বা বকেয়া কর আদায়ে কার্যকর ব্যবস্থা নেয়া, করের নতুন খাত খুঁজে বের করার মতো সুষ্ঠু চিন্তার প্রতিফলন ঘটা সম্ভব নয়। ঘটেওনি। এখন ঢালাওভাবে কর বাড়ানোয় বিপুল মূল্যস্ফীতির চাপে পিষ্ট সাধারণ মানুষের দম বন্ধ হবে। তারা আরো ভোগান্তির শিকার হবে। এটাই তাদের ভবিতব্য। যতক্ষণ পর্যন্ত সরকারে বিকল্প বোধোদয় না ঘটে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা