এই অপরাধের তদন্ত হোক
- ০৫ জুন ২০২৪, ০০:০৫
সাবেক পুলিশপ্রধান বেনজীর আহমেদ পাসপোর্ট জালিয়াতি করেছেন। অসৎ উপায়ে সম্পত্তি দখলের মতো এটিও কম বড় অপরাধ নয়। অবৈধভাবে পাসপোর্ট নিতে গিয়ে নিজের কাছে থাকা ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন তিনি। সাবেক সেনাপ্রধান আজিজ আহমেদ ও তার ভাইদের করা অপরাধের সাথে এর মিল রয়েছে। আজিজও নিজের ভাইয়ের জন্য দেশের বেশ কয়েকটি বড় প্রতিষ্ঠানে শীর্ষপর্যায়ে চাপ দিয়ে অন্যায়ভাবে স্বার্থ হাসিল করেছেন। দু’টি প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ দু’টি পদে থাকা ব্যক্তি নিজেরা এভাবে অপরাধে জড়ালে দেশের ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কা জাগা স্বাভাবিক। যারা দেশের প্রতিষ্ঠানগুলো রক্ষা করবেন তারা যখন নিয়মনীতি তছনছ করে দেন; তখন এ শঙ্কা আরো বেড়ে যায়।
একটি সহযোগী দৈনিকে বেনজীরের পাসপোর্ট জালিয়াতির যে খবর পাওয়া যাচ্ছে, তাতে সহজে অনুমান করা যায়, তিনি দীর্ঘদিন ধরে দেশে বড় ধরনের অপরাধে জড়িয়ে যান। পাসপোর্ট গ্রহণের উদ্দেশ্য ছিল যাতে যেকোনো সময় বিদেশে সটকে পড়তে পারেন। সেজন্য তিনি অবলম্বন করেন অস্বাভাবিক উপায়। তার জন্য লাল পাসপোর্ট গ্রহণের সুযোগ ছিল। সরকারি চাকরিজীবী পরিচয়ে নীল পাসপোর্ট নিতে পারতেন। ২০১০ সালের ১১ অক্টোবর ঠিক যে সময়ে ডিএমপি কমিশনার নিয়োগ পান তখন পাসপোর্ট নবায়নের আবেদন করেন। নিয়ম অনুযায়ী, চাকরিজীবী পরিচয়ে নীল পাসপোর্ট না নিয়ে তার নামে সাধারণ পাসপোর্ট দিতে পাসপোর্ট অধিদফতরকে বাধ্য করেছিলেন। ঠিক একইভাবে আইজিপি হওয়ার পর লাল পাসপোর্ট গ্রহণের যখন সুযোগ ছিল; তখনো সাধারণ পাসপোর্ট নবায়ণ করে দিতে সংশ্লিষ্ট দফতরকে বাধ্য করেন।
এ দিকে সেনাপ্রধান আজিজ আহামেদও প্রায় একই সময় একাধিক সরকারি প্রতিষ্ঠান ব্যবহার করে নিজের ভাইদের জন্য অবৈধ সুবিধা আদায় করেছেন। মিথ্যা তথ্য দিয়ে মোহাম্মদ হাসান নামে ২০১৪ সালে জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) নিয়েছিলেন সাবেক সেনাপ্রধানের এক ভাই হারিছ আহমেদ। তিনি ২০১৯ সালের ৫ আগস্ট এনআইডিতে নিজের ছবি পরিবর্তন করেন, যার সুপারিশ করেছিলেন আজিজ আহমেদ। কারো নামে ভুয়া পরিচয়পত্র দেয়ার সুপারিশ করা ফৌজদারি অপরাধ। জমির দলিলসহ প্রয়োজনীয় বিভিন্ন কাগজপত্রের জন্য ভুয়া পরিচয়পত্র তৈরিতে তিন সেনা কর্মকর্তার নাম ‘সুপারিশ’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। হারিছের নেয়া জাতীয় পরিচয়পত্র ও পাসপোর্টে বাবা মায়ের নাম পরিবর্তন করা হয়েছে। আজিজ আহমেদের দুর্নীতি নিয়ে সংবাদপত্রে বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।
সংবাদপত্রে প্রকাশিত বিবরণে দেখা যায়, সংশ্লিষ্ট সরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা চাপে পড়ে অবৈধ কাজ করতে বাধ্য হচ্ছেন। প্রশ্ন হচ্ছে, এমন অন্যায় করা ছাড়া তাদের কী কোনো উপায় ছিল না। এর পরও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা দায়মুক্ত হতে পারেন না। এ দিকে পুলিশ প্রধানের দায়িত্বে থেকে ‘বেসরকারি চাকরিজীবী’ পরিচয়ে পাসপোর্ট নেয়া দণ্ডনীয় অপরাধ বলে মন্তব্য করেছেন বিশেষজ্ঞরা। বেনজীর এই পাসপোর্ট গ্রহণের সুযোগ এখন নিচ্ছেন। নানা দেশে অবাধে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। চড়া মূল্যে বাড়ি কিনতে এবং নাগরিকত্ব গ্রহণ করতে অসুবিধা হচ্ছে না। এতে বোঝা যায় যে, পুলিশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে ছিলেন একজন অপরাধী। অনেকে বিষয়টি জানলেও সময়মতো তার বিরুদ্ধে কোনো আইনি পদক্ষেপ নেয়ার সুযোগ রাখা হয়নি। সেনাপ্রধানের ক্ষেত্রেও একই কথা বলা যায়।
পুলিশ ও সেনাপ্রধান হিসেবে তারা যেভাবে আমাদের জাতীয় প্রতিষ্ঠানগুলো কলুষিত করেছেন; জাতি হিসেবে এটি আমাদের জন্য লজ্জার। তাদের কৃত অপরাধের বিচার হলে এ লজ্জা থেকে জাতি কিছুটা হলেও নিষ্কৃতি পেতে পারে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা