স্বাস্থ্য খাতের দুরবস্থা
- ১৮ মে ২০২৪, ০০:০০
দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশের তুলনায় আমাদের দেশে মাথাপিছু চিকিৎসা ব্যয় অনেক কম। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) তথ্য অনুসারে, বাংলাদেশে একজন মানুষের চিকিৎসা খরচ হয় প্রতি বছরে ৫৮ ডলার। এর মধ্যে ৩৯ ডলার ব্যয় হয় ব্যক্তিগত পকেট থেকে। অথচ মৌলিক স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে আমাদের মাথাপিছু চিকিৎসা খরচ অন্তত ৮৮ ডলার হওয়া উচিত। এ তথ্য থেকে সহজে অনুমেয়, দেশের নীতিনির্ধারক পর্যায়ে অগ্রাধিকারে নেই স্বাস্থ্য খাত। একই সংস্থার পরিসংখ্যান হলো- ভারতে এর পরিমাণ ৭৪ ডলার, ভুটানে ১৮০ ডলার, মালদ্বীপে ১০৩৮ ডলার, শ্রীলঙ্কায় ১৬৬ ডলার এবং নেপালে ৬৫ ডলার।
করোনা মহামারীর সময় স্বাস্থ্য খাতের বেহাল বা দুরবস্থার চিত্র ফুটে উঠলে এ খাত নীতিনির্ধারকদের কিছুটা নজরে আসে। তবে করোনা চলে যাওয়ার পর এ বিষয়ে এখন আর তেমন আলোচনা নেই। জাতীয় বাজেটে স্বাস্থ্য খাতকে যথাযথ গুরুত্ব না দেয়ার কারণেই এমনটি ঘটেছে। যদিও টাকার অঙ্কে বরাদ্দ বেড়েছে। কিন্তু বাজেট এবং মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) তুলনায় এ খাতে বরাদ্দ খুব একটা বাড়েনি। করোনা-পূর্ব ধারাবাহিকতায় বাজেটে স্বাস্থ্য খাত অবহেলিতই থেকে যাচ্ছে। অথচ সামগ্রিক উন্নয়ন টেকসই করতে যেকোনো জাতির চিকিৎসাসেবা অর্থাৎ স্বাস্থ্য খাত মজবুত ভিতের ওপর দাঁড়ানো আবশ্যক।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের সূত্র মতে, আগামী অর্থবছরে স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ থাকবে প্রায় ৪২ হাজার কোটি টাকা। গত পাঁচ বছরের বাজেট বরাদ্দে মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) অনুপাতে স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ মাত্র ১ শতাংশের মতো। লক্ষণীয়, আগামী অর্থবছরের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) শীর্ষ তিনটি খাতের মধ্যে স্বাস্থ্য খাত নেই। বরাদ্দ পাওয়ার বিবেচনায় শীর্ষ তিন খাত যথাক্রমে স্থানীয় সরকার বিভাগ; সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ এবং বিদ্যুৎ বিভাগ। এ তিন খাত এডিপির প্রায় ৪০ শতাংশ বরাদ্দ পাচ্ছে। জনতুষ্টির দৃষ্টিকোণ থেকে সরকার এসব বিষয়ে অগ্রাধিকার দেয়।
নীতিনির্ধারকরা ভুলে যান, যেখানে বিনিয়োগ করলে লাভ বেশি হয়, যুক্তিসঙ্গত কারণে সেখানেই বেশি বিনিয়োগ করা দরকার। এ দৃষ্টিকোণ থেকে স্বাস্থ্য খাত বাজেটে অগ্রাধিকার পাওয়ার কথা। কিন্তু তা হচ্ছে না। দেখা গেছে, গত পাঁচ অর্থবছরে স্বাস্থ্য খাতের বরাদ্দ বাজেটের ৫ শতাংশ ও জিডিপির ১ শতাংশের মধ্যে আটকে আছে। অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, আগামী অর্থবছরেও স্বাস্থ্য খাতে এডিপির মাত্র ৭ দশমিক ৮ শতাংশ বরাদ্দ থাকছে। যার পরিমাণ ২০ হাজার ৬৮২ কোটি টাকা। যদিও অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় এ খাতে মোট এডিপির ১১ শতাংশ বরাদ্দের কথা বলা হয়েছিল।
জনস্বাস্থ্যবিদদের মতো আমরাও মনে করি, রাষ্ট্রের স্বাস্থ্যবিষয়ক কার্যক্রম সক্রিয় করতে স্বাস্থ্য খাতে বাজেটে বরাদ্দ আরো বাড়াতে হবে। এ ক্ষেত্রে স্মরণে রাখা আবশ্যক, গতানুগতিক ধারায় বাজেট বাড়িয়ে কোনো লাভ হবে না। স্বাস্থ্য খাত ঢেলে সাজাতে হবে। দেশের মানুষের স্বাস্থ্যসেবা বাড়াতে চিকিৎসক, নার্সসহ অন্যান্য জনবল বাড়াতে বিনিয়োগ করতে হবে। শূন্যপদে লোকবল নিয়োগ দিতে হবে। প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সরঞ্জাম ও ওষুধপত্র সুলভ করতে হবে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা