বাড়ছে নিয়োগ ও নৌযান ক্রয়
- ১৩ মে ২০২৪, ০০:০০
বাংলাদেশের সরকারি প্রতিষ্ঠানের কার্যকারিতা ক্রমাগত কমছে। এর সাথে বাড়ছে অনিয়ম-দুর্নীতির ঘটনা। একটি প্রতিষ্ঠানও এমন পাওয়া যাবে না, যারা সেবা করে জনগণের সন্তুষ্টি অর্জন করেছে। এখন এসব প্রতিষ্ঠানের একটি প্রবণতা হয়ে গেছে- কে কত বেশি সুযোগ-সুবিধা আদায় করে নেবে। যেসব প্রতিষ্ঠান তাদের কার্যক্রম একেবারে গুটিয়ে নিয়েছে, দেখা যাবে তাদের পেছনেও বাজেট বরাদ্দ বছর বছর বাড়ছে। তাদের নামে হচ্ছে নতুন নতুন প্রকল্প। সেগুলোতে উচ্চ ব্যয় বরাদ্দ দেয়া হচ্ছে। এসব নিয়ে সংবাদমাধ্যমে খবর যতটা পাওয়া যাচ্ছে, তার চেয়ে বেশি আড়ালে-আবডালে কানাঘুষা চলে। কর্র্তৃপক্ষ এসব নিয়ে মাথা ঘামায় না, নেয়া হয় না তদন্তের উদ্যোগ। বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি) নিয়ে সহযোগী একটি দৈনিক এ ধরনের একটি খবর দিয়েছে।
খবরে জানা যাচ্ছে, বিআইডব্লিউটিসি হাজার কোটি টাকা খরচ করে কিনছে নতুন নৌযান, দেয়া হচ্ছে নতুন জনবল নিয়োগ। এই প্রতিষ্ঠানটির কার্যক্রম কয়েক বছর ধরে ক্রমাগত কমে যাচ্ছে। কিছু ক্ষেত্রে নৌযান পরিচালনার আর প্রয়োজন হচ্ছে না। আর কিছু ক্ষেত্রে তারা নিজেরা তাদের কার্যক্রম গুটিয়ে নিচ্ছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে পদ্মা সেতুসহ বেশ কয়েকটি বড় সেতু চালু হয়েছে। এ কারণে ওইসব স্থানে ফেরি চলাচল কিছু ক্ষেত্রে বন্ধ হয়েছে, কিছু ক্ষেত্রে আংশিক চালু আছে। এতে চলাচলরত ফেরির সংখ্যা কমেছে, এতে কমেছে এগুলোর চালক-সহকারীসহ নানা পদের কর্মীর কাজের সুযোগ। তার আগে বিগত শতাব্দীর একেবারে শেষে এসে আরিচাসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে ফেরি চলাচল বন্ধ হয়। এখন সারা দেশে হাতেগোনা কয়েকটি ফেরি চলে। পদ্মা সেতু চালু হওয়ার আগে এই রুটে যাত্রীবাহী সাতটি স্টিমার ও মোটর ভেসেল চালাত, সেগুলোও বন্ধ হয়ে যায়। ২০০৪ সালে ঢাকার চারপাশে ওয়াটার ট্যাক্সি ও ওয়াটার বাসসেবা চালু করা হয়েছিল। গত দুই বছর ধরে এই সেবা পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেছে। বিআইডব্লিউটিসির বহরে এখন মোট ১১১টি ফেরি, যাত্রীবাহী জাহাজ, কার্গো ও কনটেইনার নৌযান আছে। এর মধ্যে সচল রয়েছে অর্ধেকের কম- ৫২টি। সচল যানের মধ্যেও ছয়টির কোনো কাজ নেই। এখন বিভিন্ন জায়গায় প্রতিষ্ঠানটির বিভিন্ন ধরনের যান অলস বসে থাকতে দেখা যায়। এগুলোর সাথে জড়িত কর্মীরাও অলস সময় কাটান। প্রতিষ্ঠানটির কাজের পরিধি যখন কমছে এবং নিজে থেকেও নৌপথে তাদের কার্যক্রম কমিয়েছে, তখন বড় ধরনের কেনাকাটার আয়োজনও করছে।
প্রতিষ্ঠানটি ছয়টি ফেরিসহ ৩৫টি বিভিন্ন ধরনের নৌযান কিনছে। যাত্রী পরিবহনের মতো প্রতিযোগিতামূলক কাজে প্রতিষ্ঠানটি সক্ষমতা দেখাতে না পারলেও নতুন করে কেনা হচ্ছে তিনটি প্যাসেঞ্জার ক্রুজার, তিনটি যাত্রীবাহী ফেরিসহ আরো বিভিন্ন ধরনের ২৯টি নৌযান। এ প্রকল্পে মোট খরচ হচ্ছে এক হাজার ৩১৮ কোটি টাকা। এর মধ্যে মাত্র ৬৬ কোটি টাকা বিআইডব্লিউটিসি নিজে জোগান দিচ্ছে। বেশির ভাগ নৌযান অলস পড়ে থাকার কারণে এর সাথে সংশ্লিষ্টরা কাজ পাচ্ছেন না। এ অবস্থায় জানা গেল, নতুন করে ৮৫ জন গ্রিজার নিয়োগ দেয়া হচ্ছে। মোট মিলে ২৫৮ জন গ্রিজার আগে থেকে রয়েছেন। তারা চালকের সহকারী হিসেবে কাজ করেন।
সরকারি প্রতিষ্ঠান বিআইডব্লিউটিসি নিয়ে দুর্নীতির বিষয়টি বহুল আলোচিত। পরিবহনের তেল বিক্রি করে পকেট ভর্তিসহ বহু অনিয়ম সেখানে হয়। ১৯৭২ সালে এর অধীনে ৬০৮টি নৌযান ছিল। প্রতিষ্ঠানটি তারপর থেকে শুধু সঙ্কুচিত হয়েছে। এ অবস্থায় এর সেবার পরিধি যখন বড় আকারে সঙ্কুচিত হলো, তখন প্রতিষ্ঠানটি কী কারণে রাষ্ট্রীয় কোষাগারের অর্থ খরচ করে বড় ধরনের কেনাকাটায় গেল এবং বাড়তি জনবল নিয়োগ দিচ্ছে- সেই প্রশ্নের জবাব দরকার বলে আমরা মনে করি।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা