মানুষের বসবাস কঠিন হয়ে উঠবে
- ১১ মে ২০২৪, ০০:০০
সুপেয় পানির অভাবে জীবন কতটা কঠিন হতে পারে তা অকল্পনীয়। দক্ষিণের উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরা, খুলনা ও বাগেরহাটে এখন এমনই পরিস্থিতি বিরাজমান। জেলাগুলোর বহু এলাকায় খাবার পানির অভাবে জনজীবনে দুর্যোগ নেমে এসেছে। এসব এলাকায় ভূগর্ভের পানিও সহজে তোলা যায় না। তাতে রয়েছে আর্সেনিকের বিষ। এই পানি পানযোগ্য নয়, এমনকি রান্নার কাজেও ব্যবহারের উপযুক্ত নয়। এ সঙ্কটের জন্য বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তন যেমন দায়ী, তেমনি ব্যাপক দায় রয়েছে স্থানীয় মানুষ ও সরকারেরও।
সাম্প্রতিক তাপদাহের সময় সুপেয় পানির হাহাকার আরো বেড়ে যায়। আগে থেকে কমতে থাকা পুকুর ডোবা নালার বেশির ভাগ শুকিয়ে যায়। যেগুলোর তলায় সামান্য পানি ছিল সে পানি ঘোলা কিংবা শ্যাওলা ও ময়লা-আবর্জনার মিশ্রণ। এই পানি ঘরে রান্নাবান্নারও অনুপযুক্ত, পান করার প্রশ্নই ওঠে না। গোসলের পানিও পাচ্ছে না অনেকে। সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতরের তথ্য অনুযায়ী, এই এলাকায় ৪০ শতাংশের বেশি মানুষ খাওয়ার পানির সঙ্কটে রয়েছে। সহযোগী একটি পত্রিকার সরেজমিন প্রতিবেদনে দেখা যাচ্ছে, শ্যামনগরের মানুষ দূর-দূরান্ত থেকে পানি সংগ্রহ করছে। কয়েক কিলোমিটার হেঁটে যে পানি তারা সংগ্রহ করছে তা-ও ঘোলা।
বলা হয়েছে, যেখানে সেখানে চিংড়ি চাষ, বাঁধ দিয়ে নদীপ্রবাহ আটকে দেয়া, এলোপাতাড়ি খাল-বিল দখল ও পুকুর ভরাট তীব্র পানি সঙ্কটের অন্যতম কারণ। এদিকে সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে পুকুর খননসহ অন্য যেসব প্রকল্পে মিঠা পানির উৎস সৃষ্টি করা হয়েছে সেখানে দুর্নীতির কারণে সুফল পাওয়া যাচ্ছে না। এসব প্রকল্প অকেজো হয়ে যাওয়া কিংবা সর্বসাধারণের সুযোগ গ্রহণের জন্য অবারিত থাকছে না। এর সবচেয়ে বড় শিকার দরিদ্র জনগোষ্ঠী। তারা বাধ্য হয়ে অপরিষ্কার ও ময়লা পানি পান ও রান্নার কাজে ব্যবহার করছে। তাপদাহের মধ্যে এরই প্রভাব দেখা যায় সরকারি হাসপাতালে। হাসপাতালে ডায়রিয়াসহ পানিবাহিত রোগীর ভিড় বেড়ে যায়। আমাশয় শ্বাসকষ্টসহ অন্যান্য রোগের প্রাদুর্ভাব হচ্ছে। এতে বেশি ভুগছে শিশু ও বৃদ্ধরা। সচ্ছল মানুষরা এই সময়ে অর্থকড়ি খরচ করে নিজেদের জন্য উপযুক্ত পানি সংগ্রহ করতে সমর্থ হন কিন্তু দরিদ্র মানুষ সেটা না পারায় সবচেয়ে বেশি ভুক্তভোগী হন। খুলনার কয়রা, দাকোপ, পাইকগাছায় মানুষ তিন-চার কিলোমিটার দূর থেকে পানি সংগ্রহ করছে। সরকারি তথ্যে জানা যায়, খুলনায় ২২, বাগেরহাটে ১৫ ও সাতক্ষীরায় ১৩ শতাংশ মানুষ তীব্র পানির সঙ্কটে রয়েছে। বাস্তবে এই সঙ্কট যে আরো ব্যাপক সেটি অনুমান করা যাচ্ছে।
সমুদ্রের পানির উচ্চতা বাড়ায় উপকূলীয় এলাকায় লবণাক্ত পানি প্রবেশ করছে। আবার মাছচাষের জন্য একটি শ্রেণী পানির প্রাকৃতিক উৎসে লবণাক্ত পানি প্রবেশ করাচ্ছে। ফলে বিস্তীর্ণ অঞ্চলজুড়ে লবণাক্ত পানি ও আর্সেনিক ছড়িয়ে পড়ায় সুপেয় পানি পাওয়া বড় কঠিন হয়ে উঠছে। এ নিয়ে সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার আয়োজন প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। আশু কার্যকর ব্যবস্থা নেয়া না হলে দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলে মানুষের বাস করাই কঠিন হবে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা