২৪ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`
তীব্র তাপপ্রবাহে গলছে সড়কের বিটুমিন

অবকাঠামো উন্নয়নে গাফিলতি

-

অসহনীয় তাপও জানিয়ে দিচ্ছে দেশে চলা অবাধ দুর্নীতির কথা। সবার জানা, সড়ক নির্মাণ-মেরামতে বাংলাদেশে ইউরোপ-অমেরিকার চেয়ে বেশি ব্যয় হয়। বাড়তি টাকা দুর্নীতিবাজ চক্র পকেটস্থ করে। তারপরও সড়কে গুণগত মানের নির্মাণ উপাদান ব্যবহার করা হচ্ছে না। সাধারণত রাস্তায় ব্যবহৃত বিটুমিন সূর্যের তাপ সহনশীল। কিন্তু প্রচণ্ড রৌদ্রতাপে সারা দেশ থেকে খবর পাওয়া যাচ্ছে সড়কের বিটুমিন গলে যাচ্ছে। তাপদাহ চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে আমরা কোন পর্যায়ের দুর্নীতিগ্রস্ত।
প্রচণ্ড তাপদাহে জনজীবন যখন অতিষ্ঠ; তখন শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জের বালিয়াড়ির মোড় থেকে নরসিংহপুর ফেরিঘাট পর্যন্ত ১৭ কিলোমিটার ১৫ জায়গায় সড়কের উপরিভাগে থাকা কালো বিটুমিন গলে যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে। ঢাকা, যশোর, গাজীপুর, চুয়াডাঙ্গা, ঝিনাইদহসহ দেশের বহু গুরুত্বপূর্ণ সড়কের বিটুমিন গলে ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। গাড়ির চাকায় বিটুমিন উঠে খানাখন্দ তৈরি হচ্ছে। এমন অবস্থা মহাসড়কে দুর্ঘটনা ঘটার সমূহ আশঙ্কার সৃষ্টি করেছে। এ পরিস্থিতি সড়কে স্বাভাবিক গতিতে যানবাহন চলায় বাধা হতে পারে। সংবাদমাধ্যমের পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আসা ছবিতে গলে যাওয়া সড়কের ছবি ভেসে বেড়াচ্ছে। তাতে দেখা যাচ্ছে, গলে যাওয়া সড়কে হাঁটতে গিয়ে জুতা আটকে যাচ্ছে।
এখন পর্যন্ত দেশে ৩৮ থেকে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা ওঠা-নামা করছে। এ বছর তাপমাত্রা আরো বাড়তে পারে। তা ছাড়া প্রতি বছর তাপমাত্রা বৃদ্ধির পূর্বাভাস দেয়া হচ্ছে। এতে দেশের সড়ক যোগাযোগ তীব্র তাপদাহকালে হয়ে উঠতে পারে মরণফাঁদ। গণমাধ্যমে প্রকাশ, সড়ক কর্তৃপক্ষ ৬০-৭০ গ্রেডের বিটুমিন ব্যবহারের অনুমতি দেয়। ঠিক এ মানের বিটুমিন ৪৮-৫২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় গলে। অথচ সম্প্রতি মাত্র ৩৮ ডিগ্রি তাপমাত্রায় সড়কের বিটুমিন গলে যাচ্ছে। এ থেকে নিশ্চিতভাবে বলা যায়, সড়ক নির্মাণে মানসম্পন্ন বিটুমিন ব্যবহার করা হয়নি। বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, বিটুমিন যেমন নিম্নমানের হতে পারে; আবার এর সংরক্ষণ ব্যবস্থাও গুরুত্বপূর্ণ। এগুলো বাইরে থেকে কিভাবে বহন করা হয়েছে এবং কেমন তাপমাত্রায় ছিল তা ঠিকভাবে ব্যবস্থাপনা করতে হয়। বেশি মুনাফার লোভে আমাদের দেশে ঠিকাদাররা নিম্নমানের বিটুমিন ব্যবহার করে থাকেন। আবার এর সংগ্রহ ও পরিবহন ঠিকভাবে হয়েছে কি না তা-ও গুরুত্বপূর্ণ। এগুলো খতিয়ে দেখা উচিত।
বিটুমিনে নির্মিত রাস্তা বেশি ভারী যানবাহন চলাচলের উপযুক্ত নয়। তাই আমাদের সড়কে সর্বোচ্চ ১৮ টন বহনের অনুমতি আছে। কিন্তু এসব রাস্তায় ৪০ টনের গাড়িও চলাচল করে। সড়কে অনিয়ম চললেও এ নিয়ে কোনো জবাবদিহি নেই। প্রশাসনের বিরুদ্ধে বরং রয়েছে চাঁদাবাজির অভিযোগ। তাপদাহ যেভাবে বাড়ছে তাতে ভবিষ্যতে বিটুমিন ব্যবহার নিরাপদ নয়। বলা হচ্ছে, পলিমার মডিফায়েড বিটুমিনের কথা। এর গলনাঙ্ক ৭০ ডিগ্রি সেলসিয়সের মতো। এটি ভারী যানবাহন চলাচলেও উপযোগী। দেশে যেসব রাস্তায় এটি ব্যবহার হয়েছে সেখানে তা গলেনি।
টেকসই উন্নয়নে মজবুত সড়ক ব্যবস্থাপনা প্রয়োজন। দেশে সড়ক-মহাসড়কের যখন দ্রুত বিস্তৃতি ঘটছে; তখন তাপদাহের কথাটিও মাথায় রাখতে হবে। এ অবস্থায়ও কিভাবে নিম্নমানের বিটুমিন ব্যবহার করা হয় এটিই এখন বড় প্রশ্ন। সরকারের বিভিন্ন কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে যে গাফেল তাতে সন্দেহ নেই। সে কারণে কয়েক গুণ বেশি অর্থ খরচ করেও নিরাপদ সড়ক মিলছে না। জলবায়ু পরিবর্তনের হুমকিতে থাকা বাংলাদেশের যেকোনো অবকাঠামো নির্মাণ ভেবেচিন্তে করাই দায়িত্বশীলতা।


আরো সংবাদ



premium cement
মিরসরাইয়ে সাবেক মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফের বিরুদ্ধে যুবলীগ নেতার মামলা সিলেট সীমান্তে ৬৩ লাখ টাকার চোরাই পণ্যসহ আটক ২ ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে নিয়োগ করা হবে অবসরপ্রাপ্তদের : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা হাসপাতালে ‘ভুল চিকিৎসায়’ মৃত্যু : ভাংচুর পুরান ঢাকার ২ কলেজে পুতুলের সূচনা ফাউন্ডেশনের লেনদেন স্থগিত সাগর থেকে টুনা মাছ আহরণে সহযোগিতা দেবে মালদ্বীপ সরাসরি ভোটে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন কেন আলোচনায় ২৩ দিনে রেমিট্যান্স এসেছে ১৭২ কোটি ৬৩ লাখ ডলার বান্দরবানের গহীন জঙ্গলে কেএনএ’র গোপন আস্তানার সন্ধান হত্যা মামলায় গ্রেফতার হয়ে ডিসি মশিউর ও এডিসি জুয়েল বরখাস্ত গাজীপুরে আরো এক মামলায় খালাস পেলেন তারেক রহমান

সকল