বিশিষ্টজনদের হতাশা
- ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০১:৩১
বাংলাদেশে বিরোধী রাজনীতিকদের প্রতিযোগিতা করার স্বাধীনতা নেই। সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ে প্রতিনিধি কে হবেন তা পুরোপুরি ক্ষমতাসীন দলের এখতিয়ারে চলে গেছে। নাগরিকরা বিভিন্ন মাত্রায় তাদের অধিকার হারিয়েছেন। ভোটারের নেই ভোট দেয়ার অধিকার। এদিকে গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলো কার্যকারিতা হারিয়ে ফেলেছে। এগুলো যে নাগরিকদের পক্ষে দাঁড়াবে তারও কোনো লক্ষণ নেই। এর আগে থেকে দেশে সরকারের জবাবদিহির সংস্কৃতিও বিলুপ্ত হয়েছে। ফলে একে একে প্রকাশ্যে আর্থিক প্রতিষ্ঠান লুটে নিয়েছে ক্ষমতার সাথে সম্পৃক্তরা। এ সীমাহীন দুর্নীতি পর্যায়ক্রমে ছড়িয়ে পড়েছে রাষ্ট্র ও সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে। অনিয়ম অনাচার থেকে মুক্ত একটি প্রতিষ্ঠানও নেই। দুর্ভাগ্য হচ্ছে, রাষ্ট্রের নাগরিক প্রতিনিধি ও বিশিষ্টজনরা এ নৈরাজ্য ছড়িয়ে পড়ার বিরুদ্ধে শুরু থেকে সোচ্চার ভূমিকা পালন করেননি। এখন তাদের কেউ দেশের এ দুর্বিষহ অবস্থায় হতাশা প্রকাশ করছেন। রাজধানীতে গত বৃহস্পতিবার একটি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে বিশিষ্ট নাগরিকরা দেশের দুর্দশার চিত্র নিয়ে মন্তব্য করেছেন। বইয়ে স্বাধীনতার পর থেকে এ যাবৎ রাজনৈতিক বিবর্তনের আলাপ করা হয়েছে। তাতে দেখানো হয়েছে, সামরিক শাসন, প্রতিযোগিতামূলক শাসন ও কর্তৃত্ববাদী ব্যবস্থায় দেশ শাসন হয়েছে। তবে চলমান শাসনকে কর্তৃত্ববাদী বলে যতটা মসৃণভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে; সেটি প্রকৃত বাস্তবতা নয়। সামরিক শাসনের সময় মানুষ ভোটের অধিকার হারাননি। রাজনৈতিক দল সমূলে অধিকারহীন হয়নি। আদালতে প্রতিকার পাওয়ার ব্যবস্থা ছিল। জাতিকে সঙ্কটমুক্ত হতে প্রথমে তা সঠিকভাবে চিহ্নিত করতে হয়। সঙ্কটের গভীরতা উপলব্ধিতে ব্যর্থ হলে তা থেকে মুক্তি মেলা দুরূহ। বইয়ের আলোচনায় অংশ নিয়ে কেউ কেউ ইসলামী রাজনীতির ওপর চড়াও হন। তাদের মন্তব্য, ইসলামী রাজনীতি শক্তিশালী হয়েছে। বাস্তবে গত দেড় যুগে ইসলামী রাজনীতির সাথে কারো সম্পৃক্ততা ছিল তার জন্য বিপজ্জনক। এ ধরনের পরিচিত একজন নাগরিকের সব মৌলিক অধিকার হরণের যুক্তি হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে। সেই সময় ইসলামপন্থীদের মানবাধিকার লঙ্ঘন নিয়ে সুশীলদের কেউ টু শব্দ করেননি। জঙ্গি তকমা দিয়ে যে কাউকে দমানোর ক্ষেত্রে অনেকে উৎসাহ জুগিয়েছেন। অথচ ইসলামী দলগুলো এ দেশের ক্ষমতার ভারসাম্যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। এদের দুর্বল করায় জাতি এখন বড় ধরনের মাশুল দিচ্ছে। তবে এ আলোচনায় সুশীলদের বক্তব্যে দেশের শোচনীয় অবস্থার স্বীকৃতি মিলেছে। তারা বলছেন, তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা দ্বিদলীয় রাজনীতি বিকশিত করছিল। এটি বাংলাদেশের গণতন্ত্রে সুফল বয়ে এনেছে। এ ফর্মুলা গ্রহণ করে প্রতিবেশী পাকিস্তান ও নেপাল সুফল পেয়েছে। বাংলাদেশে সেটি ডাস্টবিনে ছুড়ে ফেলে দেয়া হয়েছে। ড. রেহমান সোবহানের মতো উঁচুমাপের লোকেরা শুরুতে এ নিয়ে
সোচ্চার হলে দেশের রাজনৈতিক ব্যবস্থার এতটা অবনতি হয়তো হতো না। তিনি এ আলোচনায় অংশ নিয়ে বিচারব্যবস্থা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন। বিচারালয়ে কিংবা পুলিশের কাছে গিয়ে সবাই কি সমান আচরণ পান, তিনি এ প্রশ্ন রাখেন। বর্তমান সরকারের আমলে দেশে লুটপাট করে বিদেশে হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার করেছেন সরকারঘনিষ্ঠরা। তাদের মধ্যে একজন শীর্ষ ব্যক্তির বিরুদ্ধে বিচারাঙ্গন, দুর্নীতি দমন কমিশন কিংবা অন্য কোথাও থেকে কি কোনো পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে? দেশ অধঃপাতে রয়েছে বিশিষ্ট ব্যক্তিদের এই উপলব্ধি গুরুত্বপূর্ণ। এ থেকে মুক্তির পথ নিয়েও তাদের কাজ করতে হবে। সঙ্কট উত্তরণে জাতীয় ঐক্য গঠনে তারা কাজ করবেন; জাতি সে প্রত্যাশা করে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা