আমাদের জন্য সম্মানজনক নয়
- ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০০:০০
বৈশ্বিক স্বাধীনতা সূচকে বাংলাদেশ ক্রমাগত পিছিয়ে পড়ছে। ধারাবাহিকভাবে ধরে চলছে এ নেতিবাচক প্রবণতা। ২০২০ সালে ১৬৪ দেশের মধ্যে অবস্থান ছিল ১১৬-তে, আর ২০২৪ সালে সেটি ২৫ ধাপ পিছিয়ে নেমে গেছে ১৪১তম অবস্থানে।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক গবেষণা সংস্থা আটলান্টিক কাউন্সিলের প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে। প্রতিবেদনে দু’টি পৃথক সূচক রয়েছে- স্বাধীনতা সূচক ও সমৃদ্ধি সূচক। সমৃদ্ধি সূচকে অবশ্য বাংলাদেশ উন্নতি করেছে। ২০২০ সালের ১০৭তম অবস্থান থেকে এবার উঠে এসেছে ৯৯-তে। উন্নতি হয়েছে আট ধাপ।
মঙ্গলবার ওই প্রতিবেদনের প্রকাশনা অনুষ্ঠানে আটলান্টিক কাউন্সিলের স্বাধীনতা ও সমৃদ্ধি কেন্দ্রের পরিচালক জোসেফ লেমোইন প্রধান বক্তা হয়ে প্রতিবেদনের ফল তুলে ধরেন। তিনি বলেন, সামগ্রিকভাবে স্বাধীনতা সূচক এমন ধারণা দেয় যে, স্বাধীনতার প্রতি দৃঢ় অঙ্গীকার বিদেশী বিনিয়োগ আকর্ষণের মূল অনুষঙ্গ। তিনি ব্যাখ্যা করে বলেন, উপাত্ত বলছে, যেসব দেশে বেশি স্বাধীনতা রয়েছে, সেসব দেশে অধিকতর সমৃদ্ধিও দেখা যায়। অন্যদিকে যেসব দেশে কম স্বাধীনতা রয়েছে, সেখানে কম সমৃদ্ধি থাকার প্রবণতা রয়েছে। যেসব দেশ শক্তিশালী আইনি ব্যবস্থাসহ রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক স্বাধীনতাকে উৎসাহিত করে, তারা বিদেশী বিনিয়োগকারীদের বেশি মাত্রায় আকর্ষণ করতে পারে।
তবে অনুষ্ঠানে একটি গুরুত্বপূর্ণ কথা বলেছেন ঢাকার মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস। তিনি বলেন, প্রত্যেক দেশ দুর্নীতি দমন এবং অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক অধিকার সুরক্ষিত রাখার লড়াই করছে। কিন্তু মূল বিষয় হলো- সমস্যা এড়িয়ে যাওয়া নয়; বরং সক্রিয়ভাবে স্বীকার এবং মোকাবেলা করা। আমাদের বিবেচনায় তার এই বক্তব্য গুরুত্বপূর্ণ হলেও বর্তমান বাংলাদেশের ক্ষেত্রে তেমন সুপ্রযুক্ত নয়। অসংখ্য গবেষণায় উঠে এসেছে যে, বাংলাদেশে নেতারা মুখে দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্সের ঘোষণা দিলেও বাস্তবে দুর্নীতি রোধে আইনের কার্যকর প্রয়োগের ব্যবস্থা করেন না বরং উল্টোটা করেন। দুর্নীতিবিরোধী সংস্থাকে তারা ভিন্নমত দমনের হাতিয়ারে পরিণত করেছেন। মান্যবর রাষ্ট্রদূতের বক্তব্যের দ্বিতীয় অংশ অনেকটা ইঙ্গিতময় এবং অনেক বেশি গুরুত্ববহ। বাংলাদেশের বর্তমান সরকারের সমস্যা এড়িয়ে চলার প্রবণতা কোনো অস্পষ্ট বিষয় নয়। সমস্যা স্বীকার করে মোকাবেলায় পদক্ষেপ নেয়ার ক্ষেত্রেও একই জড়তা প্রায়ই দেখতে পাওয়া যায়। তাই মার্কিন রাষ্ট্রদূতের বক্তব্যের এ ইঙ্গিত বিবেচনায় নেয়ার ন্যূনতম চেষ্টা নেতাদের মধ্যে আছে বলে মনে হয় না।
সরকারের দ্বিতীয় শীর্ষ ক্ষমতাধর মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের উদ্দেশে প্রশ্ন রেখে বলেন, আপনার দেশ গণতন্ত্র সূচকে কত ধাপ পিছিয়েছে? এ প্রশ্ন তুলে মন্ত্রী আটলান্টিক কাউন্সিলের পুরো প্রতিবেদনটি কার্যত নাকচ করে দিলেন। সমস্যা স্বীকার না করা এবং এড়িয়ে যাওয়ার অর্থ মূলত সমস্যা মোকাবেলায় অনাগ্রহ। এ প্রবণতা বিপজ্জনক ও আত্মঘাতী। বলা যায়, স্বাধীনতা সূচকে দক্ষিণ এশিয়ার সব দেশের তুলনায় বাংলাদেশের পিছিয়ে পড়া এই অনাগ্রহের ফল। এটি অব্যাহত থাকলে সমৃদ্ধির সূচকেও আমাদের অবস্থান একসময় সব দেশের নিচে নেমে আসতে পারে। গত ১৫ বছরে দেশে অর্থনৈতিক অগ্রগতির যে ধারা দেখা যাচ্ছে, সেটি আমাদের আশঙ্কার কারণ।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা