ফিলিস্তিনি হত্যা বন্ধ করুন
- ২৭ মার্চ ২০২৪, ০০:০৫
ফিলিস্তিনে অব্যাহতভাবে বেসামরিক নাগরিক হত্যা মুখোশ উন্মোচন করে দিয়েছে বিশ্ব মানবাধিকারের রক্ষকদের। শুধু ধর্মীয় পরিচয় মুসলমান হওয়ায় ফিলিস্তিনে আন্তর্জাতিক কোনো আইন কার্যকর হয়নি। ইসরাইলিরা মারণাস্ত্রে সজ্জিত হয়ে ফিলিস্তিনিদের ঘরবাড়িতে বীভৎস হামলা চালিয়েছে। বাদ যায়নি হাসপাতাল, ত্রাণকেন্দ্র, আশ্রয়শিবির। পাঁচ মাসের বেশি সময় ধরে গণহত্যা চালাচ্ছে তেলআবিব। ইসরাইলের গণহত্যার পক্ষে যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি অবস্থান নিয়েছে। সব ধরনের রসদ জুগিয়েছে। অত্যাধুনিক সব অস্ত্রশস্ত্র দিয়েছে। ফিলিস্তিনিরা যখন অকাতরে প্রাণ হারাচ্ছেন; তখন মার্কিন নৌবহর ইসরাইলের নিরাপত্তায় মধ্যপ্রাচ্যে মহড়া দিচ্ছে। এমনকি শান্তি প্রস্তাব ভেটো দিয়ে ঠেকিয়ে দিয়েছে। সর্বশেষ গাজায় যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব পাস হয়েছে জাতিসঙ্ঘের নিরাপত্তা পরিষদে। বাধ্য হয়ে যুক্তরাষ্ট্র ভেটোদানে বিরত থেকেছে।
এ দফায় যেভাবে ফিলিস্তিনিরা গণহত্যার শিকার হলেন; তা নজিরবিহীন। আসলে সব পক্ষের উপস্থিতিতে তাদের হত্যা করা হয়েছে। বিশ্বসম্প্রদায়ের এ উপস্থিতি ইসরাইলকে গণহত্যা চালানোর বৈধতা দিয়েছে। যদিও বেসামরিক নাগরিক হত্যা আন্তর্জাতিক আইনে অপরাধ; তবু ইসরাইল দায়মুক্তি পেয়েছে। এ জন্য ইসরাইলি নেতাদের বিচারের সুযোগও যুক্তরাষ্ট্র অকার্যকর করে দিচ্ছে।
বিশ্ব এখন দু’ভাগে বিভক্ত। একভাগে ফিলিস্তিনিরা। তাদের বাঁচার অধিকার শক্তিশালীরা অস্বীকার করছে। এমন পরিস্থিতিতে প্রতিদিন কয়েক শ’ ফিলিস্তিনিকে হত্যা করছে ইসরাইল। এ পর্যন্ত ৩২ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি পৈশাচিক কায়দায় হত্যার শিকার হয়েছেন। তাদের দুই-তৃতীয়াংশ নারী ও শিশু।
এমন প্রেক্ষাপটে জাতিসঙ্ঘ নিরাপত্তা পরিষদে শান্তি প্রস্তাব পাস কিছুটা আশার সঞ্চার করেছে। যুক্তরাষ্ট্রকে খানিকটা পাশ কাটিয়ে এটি পাস হয়েছে। নিরাপত্তা পরিষদের অস্থায়ী ১০টি দেশ সবাই এর পক্ষে ভোট দিয়েছে। অন্যদিকে স্থায়ী পাঁচটি দেশের মধ্যে রাশিয়া, চীন, যুক্তরাজ্য এবং ফ্রান্স প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দিয়েছে। আমেরিকা ভোটদানে বিরত থেকেছে। ভেটো দেয়নি। এটি যুক্তরাষ্ট্রের এক ধরনের পিছু হটা। এর আগে আমেরিকার আনা প্রস্তাব বাতিল হয়ে যায়। ওই প্রস্তাবে ইসরাইলের স্বার্থকে প্রাধান্য দেয়া হয়েছিল। ফিলিস্তিনিদের নির্বিচার হত্যার বিষয়টি নিয়ে বিশ্বসম্প্রদায়ের অস্বস্তিতে যুক্তরাষ্ট্র ইসরাইলকে পূর্ণ সমর্থন দিতে পারছে না। ইসরাইল ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যেও কিছুটা মতপার্থক্য দেখা দিয়েছে। কিছুদিন ধরে গাজায় প্রাণহানি নিয়ে ইসরাইলের মৃদু সমালোচনা করে আসছিল ওয়াশিংটন। যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব্লিঙ্কেন মধ্যপ্রাচ্য সফর করছিলেন।
এ যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবও ইসরাইলের প্রতি ঝুঁকে আছে। প্রস্তাবে ইসরাইলি পণবন্দীদের বিনা শর্তে হামাসের মুক্তি দেয়ার অঙ্গীকার চাওয়া হয়েছে। বাস্তবে ইসরাইলের দখল উৎখাত ও গণহত্যার বিপরীতে ফিলিস্তিনিদের কাছে এখন কোনো অস্ত্র নেই। তাদের বিরুদ্ধে যখন সন্ত্রাসের অভিযোগ আনা হয়; তখন ইসরাইলকে অত্যাধুনিক অস্ত্রশস্ত্র আঞ্জাম দেয়া হয়। ফিলিস্তিনিদের নিজেদের বাসভূমিতে বসবাসের অধিকারহারা করার সময় বৈশ্বিক সম্প্রদায়ের এমন আচরণ বিবেচনাপ্রসূত হতে পারে না। ফিলিস্তিনিদের বসবাসের নিরাপত্তা দেয়ার পর শুধু তখনই তাদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসের অভিযোগ আনা যেতে পারে। তাদের কাছে থাকা পণবন্দীদের নিঃশর্ত মুক্তি চাওয়া যেতে পারে। এ বিষয়ে বিশ্ববিবেক জাগ্রত হওয়া প্রয়োজন।
সর্বপ্রথম ফিলিস্তিনে বেসামরিক নাগরিক হত্যার হোলিখেলা বন্ধ করতে হবে। যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব কার্যকর করে ইসরাইলকে পৈশাচিক হামলা থেকে সরে আসতে বাধ্য করতে হবে। এর সাথে ফিলিস্তিনিদের একটি নিরাপদ আবাসভূমি রক্ষায় গুরুত্ব দিতে হবে। ফিলিস্তিনিদের নিজেদের বাড়িঘর ছাড়া করে তাদের কাছ থেকেই ইসরাইলের নিরাপত্তা আশা করা কোনোভাবে যৌক্তিক হতে পারে না। এ নীতি বিশ্ব নেতৃত্বকে পরিত্যাগ করতে হবে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা