গ্রাহকের স্বার্থ যেন ক্ষুণ্ন না হয়
- ১৪ মার্চ ২০২৪, ০০:০৫
ব্যাংক খাতের অবস্থা নাজুক। অবস্থা কাটিয়ে উঠতে সরকার কার্যকর কোনো উদ্যোগ নেয়নি বা নিতে পারেনি। প্রকৃতপক্ষে গত দেড় দশক ধরে সরকার ব্যাংক খাতের ওপর নিজস্ব ব্যবসায়ী গোষ্ঠীর নিয়ন্ত্রণ বলবৎ করেছে।
এর মধ্যে ইসলামী ধারার ব্যাংকগুলো উল্লেখযোগ্য। একই সাথে সরকারঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ী গোষ্ঠী প্রভাব খাটিয়ে ব্যাংক থেকে ঋণের নামে বিপুল অর্থ হাতিয়ে নিয়েছে। ঋণ পরিশোধ না করায় ব্যাংকগুলোতে তারল্য সঙ্কট দেখা দিয়েছে। ফলে ব্যাংক খাতের আজ এমন করুণ দশা।
বিদ্যমান নাজুকতা স্বীকার করে বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, ৯টি বাণিজ্যিক ব্যাংক অতি ঝুঁকিতে রয়েছে। ব্যাংকগুলোর পারফরম্যান্সের ভিত্তিতে নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ ব্যাংক সম্প্রতি একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। ‘ব্যাংকস হেলথ ইনডেক্স (বিএইচআই) অ্যান্ড হিট ম্যাপ’ শীর্ষক ওই প্রতিবেদনে ৯টি ব্যাংককে রেড জোনে রাখা হয়। এ ছাড়া ইয়েলো জোনে রাখা হয়েছে ২৯টি ব্যাংক এবং গ্রিন জোনে আছে ১৬টি ব্যাংক। বাংলাদেশ ব্যাংক এমন এক সময় প্রতিবেদনটি প্রকাশ করেছে যখন দুর্বল ব্যাংকগুলোর ভালো অবস্থায় থাকা ব্যাংকগুলোর সাথে একীভূতকরণ ও অধিগ্রহণ নিয়ে আলোচনা চলছে।
রাষ্ট্রায়ত্ত চারটি ব্যাংকসহ রেড জোনে থাকা ৯টি ব্যাংক হলো- বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংক, পদ্মা ব্যাংক, বেসিক ব্যাংক, ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তান, ন্যাশনাল ব্যাংক, জনতা ব্যাংক, অগ্রণী ব্যাংক, রূপালী ব্যাংক ও এবি ব্যাংক।
নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠানের রেড জোন থেকে বের হতে এসব ব্যাংক আমানত সংগ্রহে বেপরোয়া সুদ অফার করছে গ্রাহকদের। সে ক্ষেত্রে ১৩-১৪ শতাংশ পর্যন্ত সুদ অফার করছে কোনো কোনো ব্যাংক। এ হিসাবে আমানত সংগ্রহ করলে এসব ব্যাংককে ঋণ দিতে হবে ১৬-১৭ শতাংশ সুদে। ডলারের মূল্যবৃদ্ধি, ঋণ আদায়ে মন্দা ও ভাবমর্যাদা সঙ্কটে কিছু ব্যাংক আগে থেকে তারল্য সঙ্কটে ছিল। এসব ব্যাংক বাড়তি সুদ দিয়ে আমানত সংগ্রহ করছিল। কোনো কোনো ব্যাংকে সাড়ে পাঁচ বছরে টাকা দ্বিগুণের প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে। সে ক্ষেত্রে সঞ্চয়পত্র ও বন্ডের চেয়েও বেশি সুদের অফার করছে এসব ব্যাংক। বিশ্লেষকরা বলছেন, দেশে এমন কোনো ব্যবসায় নেই, যা দিয়ে আমানতের এ টাকা পরিশোধ করা যাবে। আমানত সংগ্রহে এমন বেপরোয়া নীতির কারণে ঋণের সুদও বেড়ে যাচ্ছে। সে ক্ষেত্রে বিপাকে পড়ছেন ঋণগ্রহীতারা। বিশেষ করে ভুগতে হবে ব্যবসায়ী, শিল্পোদ্যোক্তাসহ ব্যাংকের ঋণগ্রহীতাদের। এ ছাড়া এমন অসম সুদে আমানত সংগ্রহের যে নীতিতে নেমেছে দুর্বল ব্যাংকগুলো সেটিও ভালো লক্ষণ নয়। কারণ চটকদার অফারে অনেকে না বুঝে ব্যাংকে আমানত রাখবেন। সে ক্ষেত্রে শঙ্কা রয়েছে। বিষয়টি নিয়ে আতঙ্কে আছেন ব্যাংকের আমানতকারীরা। অনেকে আমানত হারানোর শঙ্কা করছেন। কারণ ব্যাংকগুলোর অতিরিক্ত সুদে সংগৃহীত আমানত ঋণ হিসাবে দিয়ে ওই পরিমাণ সুদ অর্জন করা অসম্ভব হতে পারে।
প্রকৃত বাস্তবতায় ব্যাংক খাতে শৃঙ্খলা ফেরাতে না পারলে দেশের অর্থনীতিতে গতি আসবে না। বরং সাধারণ মানুষের দুর্দশা আরো বাড়বে। তবে সবার আগে নিশ্চিত করতে হবে ব্যাংকে আমানতকারীদের স্বার্থ। তাদের যেন ক্ষতি না হয়।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা