দায় শুধু ভোক্তার
- ০৫ মার্চ ২০২৪, ০০:০৫
তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাসের (এলপিজি) দাম আবারো বাড়াল সরকার। মূল্য সমন্বয়ের নামে প্রতি মাসে জ্বালানির দাম বাড়ানো হচ্ছে। সমন্বয় শব্দটি এখন মূল্যবৃদ্ধির নামান্তর। সব সময় দাম বাড়ানোর প্রধান যুক্তি হিসেবে বিশ্ববাজারে দাম বাড়ার কথা বলা হয়। কিন্তু বিশ্ববাজারে যখন দাম কমে তখন দেশে দাম কমানোর উদাহরণ নেই। আবার এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের (বিইআরসি) নির্ধারিত দামও কোথাও কার্যকর হয় না। ভোক্তাদের বাজার থেকে কিনতে হয় বেশি দামে।
চলতি মাসে ভোক্তাপর্যায়ে প্রতি ১২ কেজি এলপিজি সিলিন্ডারের দাম আট টাকা বাড়িয়ে এক হাজার ৪৮২ টাকা নির্ধারণ করেছে এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন। গত মাসে যা ছিল এক হাজার ৪৭৪ টাকা।
গণমাধ্যমের রিপোর্টে জানা যাচ্ছে, বিইআরসির নির্ধারিত দামে কোথাও সিলিন্ডার পাচ্ছেন না গ্রাহক। ফেব্রুয়ারি মাসেও গ্রাহককে সর্বনি¤œ এক হাজার ৬০০ টাকা থেকে এক হাজার ৭০০ টাকায় সিলিন্ডার কিনতে হয়েছে। সর্বশেষ মূল্যবৃদ্ধির ফলে বাজারেও দাম বাড়বে তাতে সন্দেহ নেই। এর ফলে পরিবারপিছু গ্যাস খাতে ব্যয় বাড়বে ৮০০ টাকার বেশি। নজিরবিহীন মূল্যস্ফীতির সময় মানুষ যখন দৈনন্দিন জীবনযাত্রা নির্বাহে হিমশিম খাচ্ছে, সে সময় এই বাড়তি ব্যয় তাদের জন্য অসম্ভব বোঝা হয়ে দাঁড়াবে।
পাইপলাইনের মাধ্যমে ঘরে ঘরে গ্যাস সরবরাহ করতে পারেনি সরকার। দেশে গ্যাস অনুসন্ধানের কোনো উদ্যোগ নেই। তাই গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবহারে মানুষকে বাধ্য করা হয়েছে। ঢাকা, চট্টগ্রামসহ বড় বড় শহরে নতুন ভবনে এখন আর পাইপলাইনে গ্যাস সরবরাহের ব্যবস্থা থাকছে না। ফলে এলপিজি হয়ে উঠেছে নিত্যপণ্য। এতে গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবসায়ীদের হাতে পুরোপুরি অসহায় হয়ে পড়েছেন ভোক্তারা।
সিলিন্ডার ব্যবসায়ীদের বিপুল মুনাফা লোটার সুযোগ অবারিত হয়েছে। তারা নির্ধারিত দামে সিলিন্ডার বিক্রি করেও মুনাফা পাচ্ছেন, বেশি দরে বিক্রি করেও মুনাফা লুটছেন। বাজারের খুচরা বিক্রেতারা বলছেন, কোম্পানির কাছ থেকে বেশি দামে সিলিন্ডার কিনতে হচ্ছে বলেই তারা বেশি দামে বিক্রি করছেন।
সব মিলিয়ে দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন কেবল ভোক্তাসাধারণ। কিন্তু এই ভোগান্তি মানুষের প্রাপ্য ছিল না। এবারে দাম বাড়ানোর পেছনে বিইআরসি যে যুক্তি দেখিয়েছে সেটি গ্রহণযোগ্য নয়। বিইআরসি বলেছে, বিশ্ববাজারে কাঁচামাল ও দেশে ডলারের দাম বৃদ্ধির কারণে এলপিজির দাম বাড়ছে। বিশ্ববাজারে এ মুহূর্তে হয়তো দাম বেড়েছে। কিন্তু ডলারের দাম বৃদ্ধির দায় কেন জনগণের ওপর চাপানো হবে তা বোধগম্য নয়। অর্থনীতি শক্তিশালী করা, ডলারের বিপরীতে টাকার মূল্যমান উচ্চ পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া ইত্যাদি সরকারের স্বাভাবিক দায়িত্ব। সেটি করে উঠতে না পারলে সে তো সরকারের ব্যর্থতা। সেই ব্যর্থতার দায় ভোক্তার কাঁধে চাপানো কতটা যৌক্তিক?
কনজিউমার্স অ্যাসোসিয়েশনের (ক্যাব) জ্বালানি উপদেষ্টা একটি দৈনিককে বলেছেন, ‘জ্বালানি খাতে জনগণের পকেট কেটে ব্যবসায়ীদের পকেট ভারী করা হয়। পাইপলাইনে প্রাকৃতিক গ্যাস দুর্লভ করে এলপিজি ব্যবসা প্রসারিত করা হয়েছে। এখন জনগণকে জিম্মি করে এলপিজির দাম বারবার বাড়ানো হচ্ছে।’
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা