জোরালো ব্যবস্থা নেই
- ০৪ মার্চ ২০২৪, ০০:০৫
স্রষ্টা অপরূপ সাজে সাজিয়েছেন প্রকৃতি। আলো বাতাস পাহাড় সাগর বনজঙ্গল দিয়ে পৃথিবী এক বিপুল বৈচিত্র্যের সমাহার। স্থলভাগের একটি বড় অংশ বনাঞ্চল, যা সারা বিশ্বে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। প্রতিটি বনের রয়েছে আলাদা বৈশিষ্ট্য। তবে গাছ-গাছালিতে পূর্ণ বনের মূল বাসিন্দা বন্যপ্রাণী। এদের জন্য উপযুক্ত করে তৈরি করা হয়েছে একেকটি বন। বন্যপ্রাণীরা মানব জাতির সম্পদ। প্রকৃতিকে সুরক্ষা দিতে বন্যপ্রাণী অত্যাবশ্যক। তাই এদের বেঁচে থাকার জন্য অনুকূল পরিবশে বজায় রাখা দরকার। এ জন্য বন ও বন্যপ্রাণী রক্ষায় মনোযোগ দরকার। দুর্ভাগ্য হচ্ছে- আমরা যে শুধু বনাঞ্চল উজাড় করছি তা নয়, বন্যপ্রাণীদের নিরাপদ বসবাস হুমকিতে ফেলছি। এর চেয়ে আশঙ্কার ব্যাপার, যেনতেনভাবে বন্যপ্রাণী শিকার ও সেগুলো পাচারও করছি।
৩ মার্চ বন্যপ্রাণী দিবস উপলক্ষে সংবাদমাধ্যমে প্রচারিত খবরে দেখা যাচ্ছে, বাংলাদেশের চট্টগ্রাম এ অঞ্চলের বন্যপ্রাণী পাচারের ট্রানজিট হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে। এখান থেকে প্রাণী পাচার হচ্ছে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে। এ ক্ষেত্রে এমন প্রাণীও রয়েছে যেগুলো বিলুপ্তপ্রায়।
বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিটের তথ্য, ২০২০ সালের মাঝামাঝি থেকে পরবর্তী ৪৩ মাসে ১৭ হাজার ৮৭৭টি বন্যপ্রাণী উদ্ধার করা হয়েছে। বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ গত বছরের আগস্ট মাস থেকে চলতি বছরের জানুয়ারি পর্যন্ত চট্টগ্রাম অঞ্চলে অভিযান চালিয়ে ৫১৬টি প্রাণী উদ্ধার করে। এ সময়ে সারা দেশ থেকে উদ্ধার করা হয় এক হাজার ৪২৮টি পাখি ও বন্যপ্রাণী। ভারত থেকে বন্যপ্রাণী উদ্ধার হচ্ছে যেগুলো বিভিন্ন রুট হয়ে বাংলাদেশ থেকে যাচ্ছে। গত বছরের মে মাসে পশ্চিমবঙ্গের চব্বিশ পরগনা জেলায় দু’টি ভাল্লুকছানা আটক করা হয়, এগুলো পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে পাচার করা হয়। সেপ্টেম্বর মাসে বিপন্ন প্রজাতির একটি উল্লুক কুমিল্লা থেকে উদ্ধার করা হয়। পাচার হওয়ার সময় আটক বন্যপ্রাণীর তালিকা থেকে জানা যাচ্ছে, বিপন্ন হতে যাওয়া গুরুত্বপূর্ণ প্রাণী পাচার হচ্ছে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে- শুশুক, বনরুই, লজ্জাবতী বানর, মেছোবিড়াল, ভাল্লুক, অজগরের মতো প্রাণী। আন্তর্জাতিক প্রকৃতি ও প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণ সঙ্ঘের (আইইউসিএন) এক প্রতিবেদনে জানা যায়, আমাদের দেশে এক হাজার ৬০০ প্রজাতির প্রাণী রয়েছে। এর মধ্যে ৩৯০টি প্রজাতিই বিলুপ্তির হুমকির মুখে রয়েছে।
বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে আমাদের সচেতনতা খুব সামান্য। ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে পরিচালিত এক জরিপের তথ্য, বাংলাদেশের ১৩টি জেলায় প্রকাশ্যে বন্যপ্রাণী বেচাকেনা হয়। পাচারকারীরা পার্বত্য জেলাগুলোতে দুর্গম পথে তাদের পাচারের রুট বানিয়ে নিয়েছে। পুলিশ ও সেনাবাহিনীর টহল চৌকি এড়িয়ে তারা বন্যপ্রাণী পাচার করছে। আবার স্বর্ণ ও মাদক চোরাচালানিরা যেভাবে সিন্ডিকেট গড়ে তোলে সে ধরনের একটি চক্র তারা গড়ে তুলেছে। তাই পাচার হওয়া প্রাণী আটক করা গেলেও হোতারা থেকে যায় ধরাছোঁয়ার বাইরে। এতে করে বিলুপ্তির পথে থাকা প্রাণী পাচার বন্ধ হচ্ছে না। এ দিকে চোরাচালান চক্রকে সমূলে উচ্ছেদ করতে যে ধরনের প্রচেষ্টা দরকার সরকারের পক্ষ থেকে সেই ধরনের উদ্যোগও লক্ষ করা যায় না।
বাংলাদেশের পর্যাপ্ত বন্যভূমি নেই। যেটুকু রয়েছে তাও প্রতিনিয়ত উজাড় হচ্ছে। তার চেয়ে দ্রুতগতিতে কমছে বন্যপ্রাণী। বন রক্ষার পাশাপাশি তাই বন্যপ্রাণী রক্ষায় আমাদের প্রয়োজনীয় কর্মপরিকল্পনা নিতে হবে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা