২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`
রেস্তোরাঁয় অগ্নিকাণ্ড বহু প্রাণহানি

সতর্কতা হিসেবে গ্রহণ করুন

-

আবারো ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে বহু মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে রাজধানী ঢাকায়। এবার অভিজাত এলাকা বেইলি রোডে অপেক্ষাকৃত নিরাপদ এলাকার একটি বহুতল ভবনে এই দুর্ঘটনা ঘটল। বিগত বছরগুলোতে উপর্যুপরি অগ্নিকাণ্ডে বহু মানুষের প্রাণহানি, বিপুল সম্পদ বিনষ্টের পরও আমাদের সতর্কতা ও প্রস্তুতির ঘাটতি চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিলো। ভবনে আটকাপড়ে দগ্ধ হয়ে এবং হাসাপাতলে চিকিৎসাধীন এখন পর্যন্ত ৪৬ জন প্রাণ হারিয়েছেন। তবে গুরুতর দগ্ধদের মধ্যে আরো অনেকের প্রাণ হারানোর শঙ্কায় রয়েছে।
অগ্নিকাণ্ডের শিকার সাততলা ভবনটির একটি তলা পোশাকের দোকান। অন্য তলাগুলোয় খাবারের দোকান। সাধারণত ভোজনরসিকরা সেখানে যান। সন্ধ্যার পর প্রতিদিন ভিড় লক্ষ করা যায়। নিয়মিত বিপুল লোকসমাগম হলেও অগ্নিনিরাপত্তা নিয়ে যথেষ্ট সতর্কতা ছিল না ওই ভবনে। উদ্ধারকারীরা ভবনটির ভেতর থেকে অবস্থার যে বর্ণনা দিচ্ছেন তা থেকে বিষয়টি জানা যায়।
ভবনের একেবারে নিচে একটি কফিসপে আগুনের সূত্রপাত হয়। দ্রুত এটি উপরের তলাগুলোতে ছড়িয়ে পড়ে। ধোঁয়া ও আগুনের হলকায় কাবু হয় নারী ও শিশুরা। ফায়ার ব্রিগেডের অভিযানে অচেতন অবস্থায় ২১ নারী ও চার শিশুকে উদ্ধার করা হয়। আগুন নেভানো গেলেও আচ্ছন্ন ধোঁয়ায় অনেকের প্রাণহানি ও গুরুতর অসুস্থতার কারণ হয়েছে।
উদ্ধারকর্মীরা জানাচ্ছেন, ভবনের সর্বত্র যত্রতত্র সিলিন্ডার রাখা ছিল। এমনকি বড় বড় গ্যাস সিলিন্ডার প্রতি তলার সিঁড়িতে রাখা ছিল। দ্রুত আগুন ছড়াতে এগুলো বারুদের মতো কাজ করেছে। আগুন প্রথমে ছড়িয়েছে সিঁড়ি ও আশপাশের বের হওয়ার গলিতে। এ জন্য অন্য তলাগুলো থেকে সিঁড়ি দিয়ে নামার সুযোগ নিতে পারেননি ভবনে আটকে পড়া মানুষজন।
রাজধানীতে এখন বহু জায়গায় বহুতল ভবনে রেস্তোরাঁ ব্যবসায় জমে উঠেছে। রান্না করতে উঁচু ভবনে ঝুঁকিপূর্ণ চুলা ব্যবহার হচ্ছে। এর জন্য দরকার হচ্ছে গ্যাস সিলিন্ডার। বহুতল ভবনের একাধিক তলায় যখন রান্নার কাজ হয়; তাতে ঝুঁকি অনেক বেড়ে যায়। এখানে দরকার হয় সতর্কতামূলক বাড়তি প্রস্তুতি। ঢাকার বহুতল ভবনে গড়ে ওঠা ভোজনালয়গুলোতে উন্নতমানের সতর্কতা ও প্রস্তুতি রয়েছে কি না তা নিয়ে সন্দেহ তৈরি হচ্ছে। এগুলোতে মানুষ ভিন্ন স্বাদের আমেজ ও বিনোদন নিতে চায়। আনন্দ করতে এসে প্রাণ হারাচ্ছেন; যা অনাকাক্সিক্ষত। এমনি এক হৃদয়বিদারক ঘটনা ঘটল ইতালি প্রবাসী সৈয়দ মোবারকের। ইতালি ফিরে যাবেন এ উপলক্ষে পুরো পরিবার নিয়ে বেইলি রোডে খেতে এসেছিলেন। স্ত্রী, দুই কন্যা ও এক পুত্রসহ সবাই দগ্ধ হয়ে প্রাণ হারিয়েছেন। ইতালি তিনি আর যেতে পারলেন না। সাথে পরিবারের সবাইকে নিয়ে একসাথে মারা গেলেন। মারা গেছেন অন্য এক পরিবারের মামাসহ দুই ভাগ্নীও। তারা একটি বিশেষ উপলক্ষে বেইলি রোডে খাবার খেতে এসেছিলেন।
রাজধানী ও এর আশপাশে বহুতল ভবনে প্রতি বছর অগ্নিকাণ্ড ঘটছে। বরাবর নিরাপত্তাব্যবস্থার ফাঁকফোকর উন্মোচন হচ্ছে। দুর্ভাগ্য হচ্ছে, এ থেকে আমরা সেভাবে শিক্ষা গ্রহণ করছি না। পুরান ঢাকায় আমরা কয়েক বছর ধরে অগ্নিকাণ্ডে বড় ধরনের প্রাণহানি দেখেছি। আগের দুর্ঘটনা থেকে আমরা শিক্ষা নেইনি। ফলে একই কারণে পরের দুর্ঘটনা ঘটতে পেরেছে। বেইলি রোডের অগ্নিকাণ্ড একটি সতর্কসঙ্কেত। রাজধানীর বহুতল ভবনের রেস্তোরাঁগুলো এখনই সাবধানতা অবলম্বন করতে পারে।


আরো সংবাদ



premium cement
নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করবেন প্রধান উপদেষ্টা, অন্যদের কথা ব্যক্তিগত : প্রেস উইং সালাহর জোড়া গোলে জিতল লিভারপুল ১০ সাংবাদিকসহ ১১ জনের ব্যাংক হিসাব জব্দ টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টদের ৬ দফা মেনে নেয়ার আহবান হাসিনা-কন্যা পুতুলের সূচনা ফাউন্ডেশনের ব্যাংক লেনদেন স্থগিত বুটেক্স-পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা হবে প্রধান উপদেষ্টার পক্ষ থেকে : প্রেস উইং ব্যর্থ টপ অর্ডার, মুমিনুলের ফিফটির পর পথ দেখাচ্ছেন লিটন তেজগাঁওয়ে বুটেক্স ও ঢাকা পলিটেকনিকের শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষ বেলজিয়ামের উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগে আগ্রহ বাড়ছে এসডিজি কার্যক্রমে যুক্ত হচ্ছে ড. ইউনূসের ‘থ্রি জিরো তত্ত্ব’

সকল