আমদানি নির্ভরতা কাম্য নয়
- ০১ মার্চ ২০২৪, ০০:০৫
দেশের অভ্যন্তরীণ বাজার থেকে গত বছর (২০২৩) এক লাখ টন গম সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। কিন্তু প্রতিকূল দামে এক কেজি গমও সংগ্রহ করতে পারেনি সরকার। এ পরিস্থিতিতে দেশের খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিত ও সরকারি সরবরাহ ব্যবস্থা গতিশীল রাখতে আন্তর্জাতিক বাজার থেকে গম সংগ্রহ করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে চলতি অর্থবছরে সরকারি পর্যায়ে বিশ্ববাজার থেকে কয়েক দফায় ছয় লাখ টন গম কেনা হয়েছে।
এখন আবার নতুন করে ৫০ হাজার টন গম আমদানির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। আন্তর্জাতিক দরপত্রের মাধ্যমে এ গম আমদানি করবে খাদ্য মন্ত্রণালয়। সর্বনিম্ন দরদাতা হিসেবে সিঙ্গাপুরভিত্তিক একটি প্রতিষ্ঠান এ গম সরবরাহ করবে। প্রতি টন গমের দাম ৩০৩.১৯ ডলার হিসেবে ৫০ হাজার টন গম আমদানিতে বাংলাদেশী মুদ্রায় ব্যয় হবে ১৬৬ কোটি ৭৫ লাখ ৪৫ হাজার টাকা। প্রতি কেজি গমের দাম পড়বে প্রায় ৩৪ টাকা।
খাদ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, প্রতিকূল বাজারমূল্যে গত বছর সরকারি পর্যায়ে অভ্যন্তরীণ গম সংগ্রহ অভিযানে এক লাখ টন লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে কোনো গম সংগৃহীত হয়নি। খাদ্য অধিদফতরের সংশ্লিষ্ট বিভাগের গত ৭ ফেব্রুয়ারির প্রতিবেদন অনুযায়ী, দেশে বর্তমানে গমের মজুদ মাত্র দুই লাখ ১৩ হাজার টন যা দেশের চাহিদার তুলনায় অপ্রতুল। এ প্রেক্ষাপটে জরুরি পরিষেবা হিসেবে সরকারি বিতরণব্যবস্থা সচল রাখা ও সরকারি নিরাপত্তা মজুদ গড়ে তোলার লক্ষ্যে গম আমদানি জরুরি হয়ে পড়েছে।
চাহিদার বিপরীতে ইতোমধ্যে চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরে আন্তর্জাতিক উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে তিন লাখ টন এবং রাশিয়া থেকে জিটুজি ভিত্তিতে তিন লাখ টনসহ মোট ছয় লাখ টন গম ক্রয়ের কার্যক্রম সম্পন্ন করেছে। এ ধারাবাহিকতায় বাজেটে গম আমদানির নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে খাদ্য অধিদফতর কর্তৃক গম ক্রয়ে আন্তর্জাতিক উন্মুক্ত দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে।
লক্ষণীয় বিষয় হলো, বর্তমান ক্ষমতাসীন দলের সরকারের গত তিন মেয়াদে অভ্যন্তরীণ খাদ্যশস্য সংগ্রহের বেশির ভাগ কার্যক্রমই কার্যত অসফলভাবে শেষ হয়েছে। ফলে অভ্যন্তরীণ ঘাটতি পূরণে সব সময়ই আমদানির ওপর নির্ভর করতে হয়েছে। এটি আমদানির প্রতি সরকারের একটি স্বাভাবিক প্রবণতার অংশ বলা যেতে পারে। জ্বালানি খাতেও একই প্রবণতা দেখা গেছে এবং তা আলোচনায়ও এসেছে। অভ্যন্তরীণ গ্যাস অনুসন্ধানের সব কার্যক্রম বন্ধ রেখে এবং সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান পেট্রোবাংলা বা বাফেক্সের পুরো জনবল ও সম্পদ বেকার ফেরে রেখে বিদেশ থেকে বিপুল অর্থব্যয়ে গ্যাস আমদানি করা হয়েছে এবং তা অব্যাহত রাখা হয়েছে। আত্মঘাতী এই প্রবণতার পেছনে কোন বিশেষ কারণ সক্রিয় তা অনেকেরই বোধগম্য নয়।
অভ্যন্তরীণ খাদ্য সংগ্রহ অভিযান সফল করতে সংশ্লিষ্টদের ন্যূনতম আগ্রহের অভাব এবং অভিযানের সার্বিক ব্যর্থতার পেছনেও একই প্রবণতা কার্যকর বললে সম্ভবত ভুল হবে না। অতীতে কোনো সরকারের অধীনেই খাদ্য মন্ত্রণালয়ের এমন চরম ব্যর্থতার উদাহরণ নেই। আমরা মনে করি, এই ব্যর্থতার জন্য সংশ্লিষ্ট দফতরের জবাবদিহির প্রয়োজন আছে। আমদানি নির্ভরতা কাম্য নয়।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা