‘সবার জন্য শিক্ষা’র এ কী হাল!
- ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০০:০০
দৈনিক নয়া দিগন্তের বরগুনা প্রতিনিধি জানান, বরগুনায় সংস্কারের অভাবে ১৬৯টি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবন ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। ঝুঁকি নিয়ে এসব স্কুলে পাঠদান করতে বাধ্য শিক্ষকরা। আতঙ্কিত শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। অবশ্য নতুন ভবন নির্মাণের উদ্যোগ নেয়ার আশ্বাস দিয়েছে এলজিইডি।
ছয়টি উপজেলা নিয়ে বরগুনা জেলা। ৭৯৮টি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এর মধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে ১৬৯টি প্রাথমিক বিদ্যালয়। সদর উপজেলার নবাব সলিমুল্লাহ মাধ্যমিক বিদ্যালয়সংলগ্ন হলো সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। ২৪০ জন শিক্ষার্থী, ১২ শিক্ষক-শিক্ষিকা নিয়ে এই বিদ্যালয়। জরাজীর্ণ কক্ষেই পাঠদান করাতে হচ্ছে বিদ্যালয়টিতে।
সহকারী শিক্ষক মাইনুল হোসেন জানান, আমাদের ছোট দু’টি ভবন রয়েছে। একটি ভবন ২৫ বছর আগে নির্মাণ করা হয়েছিল। উপরে টিনের ছাউনি। ২৫ বছরে ছাউনির টিনগুলো অকেজো হয়ে গেছে। বর্ষাকালে পলিথিন দিয়ে পাঠদান করতে হয় বিদ্যালয়ে। কর্তৃপক্ষের কাছে একাধিকবার আবেদন করেছি নতুন ভবন পাওয়ার জন্য, কোনো কাজ হচ্ছে না। উত্তর আমতলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণীর তামিমা আক্তার রোজি বলে, বর্ষাকালে ছাদ থেকে শ্রেণীকক্ষে পানি পড়ে। শিক্ষার্থীদের ব্যবহারের জন্য স্বাস্থ্যসম্মত টয়লেট নেই। বিশুদ্ধ পানি পানের জন্য নেই টিউবওয়েল। বিদ্যালয়ে আসার জন্য নেই পাকা সড়কও। বর্ষাকালে কষ্ট করেই আসতে হয় লেখাপড়া করতে। একই কথা বলে ওই স্কুলের চতুর্থ শ্রেণীর শিক্ষার্থী সানজিদা।
উত্তর আমতলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আলাউল হক বলেন, বিদ্যালয় ভবনের কলামগুলোর বিভিন্ন জায়গায় ফাটল রয়েছে। বর্ষাকালে ছাদ থেকে পানি পড়ে শ্রেণিকক্ষে। সব সময়ই ভয়ে থাকি, কখন বিদ্যালয় ধসে শিক্ষার্থীদের মাথায় পড়ে। তিনি অচিরেই এই বিদ্যালয়ে নতুন ভবনের জন্য আবেদন করেছেন।
উত্তর পাতাকাটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রুনা লায়লা জানান, বিষখালী নদীরক্ষা বাঁধের পাশেই আমাদের বিদ্যালয়। ভাঙাচোরা একটি বিদ্যালয় ভবন ছিল। সেটিও নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। এখন কোনো রকমে টিনের বেড়া দিয়ে পাঠদানের কাজ চালিয়ে যাচ্ছি। ভালো ভবন না থাকায় শিক্ষার্থীরা স্কুলে আসতে অনীহা জানায়। স্বাস্থ্যসম্মত টয়লেট ও বিশুদ্ধ খাবারের পানিরও ব্যবস্থা নেই। নতুন একটি ভবন পাওয়ার আবেদন জানিয়েছি। খানবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নাসিরুদ্দীন জানান, সচিব ও জেলা প্রশাসককেও দেখিয়েছি এবং একাধিকবার স্কুল ভবনের জন্য আবেদন করেছি কর্তৃপক্ষের কাছে। ভবন অথবা কোনো বড় ধরনের বরাদ্দ নাকি পাননি তারা। নতুন স্কুলভবন নির্মাণের আবেদন জানিয়েছি।
বরগুনা এলজিইডির প্রকৌশলী সাইফুল ইসলাম বলেন, আমাদের কাছে তারা কিছু পুরনো ভবন নিলামের জন্য পাঠিয়েছেন। আমরা সেগুলো নিলাম করে, নতুন ভবনের এস্টিমেট মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছি। পাস হয়ে এলেই কাজ হবে।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুল মুকিত বলেছেন, আমরা নতুন করে তালিকা তৈরি করব। যেসব প্রতিষ্ঠান বেশি খারাপ, সেগুলো ইমার্জেন্সি মেরামতের ব্যবস্থা হবে।
এমন ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে পড়িয়ে যে ‘সবার জন্য শিক্ষা’ কর্মসূচি বাস্তবায়ন সম্ভব নয়, তা সরকারের বোঝা উচিত। এই ভবনগুলোর ঝুঁকি দূর করতে হবে সর্বাগ্রে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা