অবিলম্বে ব্যবস্থা নিন
- ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০০:০৫
দেশের বৈদেশিক মুদ্রা উপার্জনের অন্যতম খাত প্রবাসী আয় বা রেমিট্যান্স। কিন্তু প্রবাসী শ্রমিকরা এ দেশে সবচেয়ে অবহেলার শিকার। আমাদের তরুণ-তরুণীরা বিদেশে শ্রমিকের কাজ করতে গিয়ে প্রতিনিয়ত ভোগান্তি, হয়রানি, নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন। অনেক সময় জীবন পর্যন্ত হারাচ্ছেন। মারা যাচ্ছেন ভূমধ্যসাগরে, মধ্যপ্রাচ্যে অথবা অন্যত্র। বন্দী জীবন কাটাচ্ছেন লিবিয়ার প্রত্যন্ত কোনো শহরে এবং থাইল্যান্ড মালয়েশিয়ার বনে। মধ্যপ্রাচ্যে বাসাবাড়িতে কাজ করতে গিয়ে আমাদের নারীরা লাঞ্ছনা, গঞ্জনা ও নিপীড়নের শিকার হচ্ছেন।
এ ধরনের নিপীড়নের শিকার ও বন্দী হয়ে পড়া বাংলাদেশীদের ভিডিও বার্তা আসছে প্রায়ই। তারা ভিডিও বার্তায় কেঁদেকেটে বাঁচানোর আকুতি জানান। পত্র-পত্রিকায় প্রকাশ পায় সেসব ছবি ও খবর। কেউ কেউ একটু আহা উহু করেন, তারপর ভুলে যান। এরই ধারাবাহিকতায় সর্বশেষ সংযোজন মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুরে তিন মাস ধরে বন্দী জীবনযাপনকারী ৬৩ বাংলাদেশীর আকুতি।
ভালো বেতনে শ্রমিকের চাকরি দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ঢাকার একটি এজেন্সি মেহেরপুরের গাংনীর শতাধিক তরুণকে মালয়েশিয়ায় নিয়ে যায় গত বছর নভেম্বরে। প্রত্যেকের কাছ থেকে চার থেকে পাঁচ লাখ টাকা করে আদায় করে সংশ্লিষ্ট এজেন্সি। মালয়েশিয়ায় পৌঁছার পর তাদের একটি বাড়িতে তোলা হয় এবং পাসপোর্ট কেড়ে নেয়া হয়। গত তিন মাসেও তাদের চাকরি হয়নি। ঘর থেকে বের হতে দেয়া হচ্ছে না এবং সামান্য খেতে দেয়া হচ্ছে। শুধু দুই বেলা কিছু চাল আর আলু দেয়া হয় তাদের। সেটা নিজেদের রান্না করে খেতে হয়। কিছু বলতে গেলে ভয়ভীতি দেখানো হয়। অনেকে শারীরিক ও মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন, অসুস্থ হয়ে পড়েছেন।
নিজেদের সর্বস্ব বেচাবিক্রি করে, চড়া সুদে ধারদেনা করে এসব তরুণ বিদেশে যান ভাগ্যের অন্বেষণে, একটু ভালো থাকার আশায়, নিজের পরিবারে স্বাচ্ছন্দ্য আনার জন্য।
এই একই কাহিনী বছরের পর বছর ধরে ঘটছে বিদেশ গমনেচ্ছু তরুণদের সঙ্গে। কারা তাদের এজেন্সির কাছে নিয়ে যায়, কারা টাকা আদায় করে, কোন এজেন্সি তাদের বিদেশে পাঠায় তার সব কিছুই স্পষ্ট, সবার জানা। কিন্তু বৈদেশিক কর্মসংস্থান দফতর বা প্রবাসী মন্ত্রণালয়, যাদের এসব বিষয় দেখার কথা, তারা কেউ এ সমস্যার সুরাহা করতে এগিয়ে আসে না।
মেহেরপুরের গাংনীর যে ৬৩ তরুণ কুয়ালালামপুরে আটকে আছেন তারা এখন এক অবর্ণনীয় অনিশ্চিত ও মানবেতর জীবন কাটাচ্ছেন। কিন্তু তাদের ব্যাপারে এখন পর্যন্ত তেমন কোনো উদ্যোগ কেউ নেননি। মেহেরপুরের জেলা প্রশাসক গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, জেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তারা ভুক্তভোগীদের পরিবারকে মামলা করার পরামর্শ দিয়েছেন। কিন্তু কেউ মামলা করতে রাজি হচ্ছেন না। কিন্তু এটি একমাত্র জেলা প্রশাসনের দায়িত্ব নয়। দেশে মন্ত্রণালয়, দূতাবাসসহ বহু সংস্থা আছে প্রবাসী শ্রমিকদের স্বার্থ দেখার। তারা কেউ কোনো উদ্যোগ নেয়নি। এটিই বিস্ময়ের।
যে দেশের অর্থনীতির বেশির ভাগ চলে প্রবাসী আয়ে সেই দেশ কীভাবে প্রবাসী শ্রমিকদের স্বার্থ ও ভালোমন্দ দেখার ক্ষেত্রে এতটা উদাসীন হতে পারে তা বোধগম্য নয়।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা