২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`
রোজায় নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধির প্রবণতা

নজরদারিতে উদাসীনতা নয়

-

দীর্ঘ দিন ধরে দেশে খাদ্যসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সব পণ্যের দাম অত্যন্ত চড়া। সব কিছুর দাম ঊর্ধ্বমুখী। চাল, ডাল, আটা, ময়দা, সয়াবিন তেল উচ্চমূল্যে কিছুটা স্থিতিশীল। তবে কমছে না সবজির দাম। সাধারণ মানুষের জীবনমান তলানিতে। এর পরও সরকার কোনো কার্যকর উদ্যোগ নিতে পারছে না। তবে রমজানে পণ্যের দাম সহনীয় রাখতে চাল, চিনি, তেল ও খেজুরের শুল্ক-কর কমিয়েছে সরকার। গত বৃহস্পতিবার জাতীয় রাজস্ব বোর্ড বা এনবিআর আলাদা প্রজ্ঞাপনে এসব পণ্যের শুল্ক-কর কমানোর ঘোষণা দিয়েছে।
এমন এক সময়ে এই ঘোষণা এলো যখন বাজারে প্রতি সপ্তাহে কোনো না কোনো পণ্যের দাম বাড়ছে। যেমন, রমজানে সবচেয়ে বেশি চাহিদার পণ্য খেজুরের দাম বেড়ে গেছে রোজার আগেই। লক্ষণীয়, দেশে প্রতি বছর রমজানে রোজায় ইফতারের উপকরণসহ খাদ্যপণ্যের দাম অস্বাভাবিক হারে বাড়ে। এ প্রবণতা সাম্প্রতিক সময়ে আরো বেড়েছে। কিছু অসাধু ব্যবসায়ী বাড়তি মুনাফার লোভে কারসাজি করে জিনিসপত্রের দাম অবাধে বাড়িয়ে দেন।
সরকার চারটি পণ্যের সাধারণ শুল্ক কমানোর পর তাৎক্ষণিকভাবে বাজারে এসব পণ্যের দাম কমেনি। আদৌ কমবে কিনা বা কতটা কমে তা দেখার বিষয়। বরং দেশের বৃহত্তম পাইকারি বাজার চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জে বৃহস্পতিবার বিকেলে পাম তেলের দাম বেড়েছে। সয়াবিন ও চিনির দাম ছিল অপরিবর্তিত। খেজুর আমদানিতে সবচেয়ে বেশি শুল্ক-কর কমানো হলেও বাজারে এখনো তার প্রভাব পড়েনি। আর দেশে বর্তমানে খুব বেশি চাল আমদানি হয় না, তাই চালের আমদানি শুল্ক কমানোর প্রভাব নেই বাজারে।
এনবিআর যেসব পণ্যের শুল্ক কমিয়েছে, তাতে হিসাব করে দেখা গেছে, শুল্ক সবচেয়ে কম কমেছে চিনিতে। চিনি আমদানিতে কেজিতে শুল্ক কমবে মাত্র ৭৫ পয়সা। আর সয়াবিন ও পাম তেলে কেজিতে সাত থেকে আট টাকা শুল্ক-কর কমবে। চাল আমদানিতে কেজিতে শুল্ক কমবে সাড়ে ২৩ টাকা। এ ছাড়া কার্টনে আনা সাধারণ মানের খেজুরে কেজিতে শুল্ক কমবে ৩৩ টাকা। ব্যবসায়ীরা বলছেন, চিনিতে যে শুল্ক কমানো হয়েছে, বাজারে তার কোনো প্রভাব পড়বে না। সয়াবিন ও পাম তেলের দাম কিছুটা কমতে পারে। তবে তা-ও নির্ভর করবে কারখানামূল্যের ওপর। উৎপাদন পর্যায়ে কারখানাভেদে কেজিতে তেলে ভ্যাট দেড় থেকে আড়াই টাকা। এ হিসাবে সয়াবিন ও পাম তেলে কেজিতে করভার কমতে পারে সর্বোচ্চ সাত-আট টাকা।
বাজারে শুল্ক ছাড়ের তাৎক্ষণিক কোনো প্রভাব না পড়লেও তা বাড়ানো হলে এর তাৎক্ষণিক প্রভাব দেখা যায় সংশ্লিষ্ট পণ্যের দামে। এ নিয়ে একটি দৈনিককে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেছেন, কর ছাড়ের সুবিধা ভোক্তারা খুব বেশি পান না। করভার কমালে বরং রাজস্ব আদায়ে চাপ সৃষ্টি হয়।
ব্যবসায়ীদের ওপর সরকারের তেমন কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। থাকলে হুটহাট কোনো পণ্যের দাম অযৌক্তিকভাবে বাড়াতে পারতেন না তারা। বাস্তবে বাজারব্যবস্থাপনায় সরকারের কর্তৃত্ব আছে বলে মনে হয় না। সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীলদের উদাসীনতায় বাজারে নজরদারিও নেই।


আরো সংবাদ



premium cement