রোহিঙ্গা পুনর্বাসনে চাই স্থিতি
- ৩০ জানুয়ারি ২০২৪, ০০:০৫
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সামরিক বাহিনীর সাথে তুমুল লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে বিদ্রোহী আরাকান আর্মি। এ মাসের মাঝামাঝি বিদ্রোহীরা রাখাইন রাজ্যের পালেতওয়া শহর এবং কয়েক দিন পর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বন্দরনগরী পাকতাও দখলের দাবি করে। এরপর থেকে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী বা তাতমাদা স্থল ও আকাশপথে সর্বাত্মক লড়াই শুরু করে আরাকান আর্মির বিরুদ্ধে। বিদ্রোহীরা এখন পুরো রাখাইন দখলের চেষ্টা করছে।
এরই মধ্যে রাখাইন থেকে নতুন করে রোহিঙ্গা মুসলমানদের নিহত হওয়ার খবর এসেছে। কারণ, আরাকান আর্মি রোহিঙ্গাদের ঢাল হিসেবে ব্যবহারের চেষ্টা করছে বলে নানা সূত্রে জানা যাচ্ছে। রাখাইনের সঙ্ঘাতের প্রভাব ছড়িয়ে পড়ছে বাংলাদেশ সীমান্তেও। মিয়ানমার থেকে রকেট শেল ও গুলি এসে বাংলাদেশের ভেতরে পড়েছে। স্বাভাবিকভাবে সীমান্তবাসী আতঙ্কিত ও উদ্বিগ্ন। ভয়ে অনেকে সীমান্ত এলাকা থেকে সরে যেতে বাধ্য হচ্ছেন। এ বিষয়ে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ-বিজিবি সীমান্তে সতর্কতা বাড়িয়েছে। টহল জোরদার করেছে।
রাখাইনের এ পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক সংশ্লিষ্টতা নিশ্চিতভাবে থাকবে এবং আছেও। চীন এর মধ্যে বলেছে, বেইজিং সেখানে যুদ্ধবিরতির চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। মিয়ানমারে, বিশেষ করে রাখাইনে চীনের বিশেষ অর্থনৈতিক ও কৌশলগত স্বার্থ আছে। আবার যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা গণতান্ত্রিক বিশ^ সেখানে সামরিক জান্তাবিরোধী শক্তিকে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে। পশ্চিমা শক্তি দেশটিতে গণতন্ত্র ও মানবাধিকার সমুন্নত রাখার লক্ষ্যে সক্রিয়। বর্তমান সামরিকজান্তা বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটে নির্বাচিত অং সান সু চির সরকারকে সরিয়ে দিয়ে ২০২১ সালের পয়লা ফেব্রুয়ারি অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে। তখন থেকে সু চির ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্র্যাসি (এনএলডি) ও বিভিন্ন সশস্ত্র গোষ্ঠী জান্তার বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে। তাদের সমর্থন দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র ও পাশ্চাত্য। এ ছাড়া চীনের বৈশি^ক প্রভাব খর্ব করতেও বদ্ধপরিকর পশ্চিমা শক্তি। ফলে মিয়ানমার মূলত বিশ^শক্তির রণক্ষেত্র।
মিয়ানমারের কারণে বাংলাদেশ চরম ভোগান্তির শিকার। ১২ লক্ষাধিক রোহিঙ্গা এখনো বাংলাদেশে আছেন এবং তাদের নিয়ে অর্থনৈতিক, সামাজিক, পরিবেশগত এমনকি কূটনৈতিক ক্ষেত্রেও নানা সঙ্কট আমাদের মোকাবেলা করতে হচ্ছে। কিন্তু রাখাইনের এ সঙ্ঘাতময় পরিস্থিতির সময় রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের প্রসঙ্গ কীভাবে উঠতে পারে তা আমাদের বোধগম্য নয়। ঢাকায় চীনের রাষ্ট্রদূত বলেছেন, তার দেশ রাখাইনে যুদ্ধবিরতির চেষ্টা করছে। রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনেরও চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এ ক্ষেত্রে রাখাইন রাজ্যে যুদ্ধবিরতি প্রয়োজন বলে মনে করেন তিনি। তবে ঢাকায় জাতিসঙ্ঘের আবাসিক প্রতিনিধি লুইস গুয়েন বলেছেন, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের এখন উপযুক্ত সময় নয়।
মিয়ানমার রোহিঙ্গাদের জীবন, সম্পদ ও অধিকারের নিরাপত্তা বিধান এবং নাগরিকত্বের নিশ্চয়তা দিতে পারেনি বা দেয়নি বলে প্রত্যাবাসনের প্রতিটি উদ্যোগ ব্যর্থ হয়েছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে সেটি আরো অনিশ্চিত হয়ে পড়বে বলে মনে হয়। চীনের চেষ্টায় যদি যুদ্ধবিরতি অর্জিত হয়ও, তবু ১২ লক্ষাধিক রোহিঙ্গাকে যুদ্ধরত দুই পক্ষের মাঝখানে বসিয়ে দেয়া কোনো দিক থেকে কোনো কাজের কথা নয়; বরং রাখাইনে পরিপূর্ণ স্থিতিশীলতার জন্য অপেক্ষা করা হবে সর্বোত্তম পন্থা।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা