২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`
মুক্তেশ্বরী নদীতে কচুরিপানা

অপসারণের দাবি জোরালো

-

একটি সহযোগী দৈনিকের মনিরামপুর (যশোর) প্রতিনিধি জানান, খরস্রোতা মুক্তেশ্বরী যেন কচুরিপানার নদী। নদীতে নেই কোনো পানিপ্রবাহ। কচুরিপানা আর আবর্জনায় ভরপুর নদীটি মৃতপ্রায়। মুক্তেশ্বরী নদী যশোর জেলার। নদীটির দৈর্ঘ্য ৪০ কিলোমিটার, গড় প্রস্থ ৪২ মিটার এবং নদীটি অনেকটা সর্পিলাকার। চৌগাছা উপজেলার জগদীশপুর বাঁওড়ের পাশ দিয়ে সলুয়া বাজারসংলগ্ন এলাকা হয়ে সদর উপজেলার আরবপুর ইউনিয়নের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়ে মনিরামপুর উপজেলার কাশিমনগর ইউনিয়নের বাদিয়াতলা বিলাঞ্চল হতে উৎপত্তি লাভ করেছে নতুন করে। অতঃপর এই নদীর জলধারা সদর উপজেলা পেরিয়ে মনিরামপুর উপজেলার ঢাকুরিয়া-হরিদাসকাটিকুলটিয়া ইউনিয়ন হয়ে অভয়নগর উপজেলার পায়রা ইউনিয়ন পর্যন্ত প্রবাহিত হয়ে টেকা-হরি নদীতে নিপতিত হয়েছে। নদীটির বেশ কিছু স্থানই পানিশূন্য। ভাটির দিক অধিক প্রশস্ত এবং ভাটিতে প্রবাহের মাত্রাও বেশি। নদীটি জোয়ার-ভাটার প্রভাবে প্রভাবিত। অপরিকল্পিতভাবে ব্রিজ ও স্লুইসগেট নির্মাণ, মাছ ধরার জন্য অবৈধ পাটা দেয়ায় জোয়ার-ভাটা বাধাগ্রস্ত হওয়ায় নদীতে পানিপ্রবাহ থমকে গেছে। ফলে নদীতে ভেসে আসা আবর্জনা ও কচুরিপানা বছরের পর বছর জমে স্তূপীকৃত হয়ে নদীতে এখন তিল ধারণের ঠাঁই পর্যন্ত নেই। অবস্থাদৃষ্টে মনে হয়েছে, এটি যেন কচুরিপানার নদী। এক সময়ের মুক্তেশ্বরী নদীর এমন বেহাল দশা থেকে পরিত্রাণের জন্য অচিরেই কচুরিপানা অপসারণের জোরালো দাবি উঠেছে জনগণের পক্ষ থেকে। সেই সঙ্গে নদীটির স্বাভাবিক প্রবাহ ও জোয়ার-ভাটা অব্যাহত রাখতে যত্রতত্র মাছ ধরার অবৈধ পাটা অপসারণের দাবি উঠেছে।
মুক্তেশ্বরী নদীর পাড় ঘুরে দেখা গেছে, এক সময়ের নদীতে এখন প্রবাহ নেই। আবর্জনা আর কচুরিপানায় ভরপুর নদীটি মৃতপ্রায়। দু’পাশে কোথাও কোথাও দখলে নদীর আয়তনও সঙ্কুুচিত হচ্ছে। আবর্জনা ও কচুরিপানা পচে নদীর পানিতে দুর্গন্ধ। পানি খাবার ও গোসলের অনুপযোগী। পচা কচুরিপানার দুর্গন্ধে পাড়ে বসবাস করাই দুষ্কর। নদীর পানি মশার প্রজননক্ষেত্র। দুই-তিন যুগ ধরে নদীতে নৌযান চলাচল বন্ধ। জঞ্জালে পানির প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হয়ে মরে যাচ্ছে নদীটি। হুমকিতে জীববৈচিত্র্য। নদীর তীরবর্তী মানুষের দাবি, দ্রুত এই নদীর আবর্জনা ও কচুরিপানা পরিষ্কার করা হোক। নদীর পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হয়ে যাবে। নদী বাঁচাতে সংরক্ষণ করতে হবে এবং প্রাণোচ্ছলতা ফিরিয়ে আনতে হবে। নদীর পাশের ঢাকুরিয়া ইউনিয়নের করেরাইল গ্রামের আজিজুর রহমান জানান, কচুরিপানার কারণে চুলকানি, পাঁচড়া ও পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হতে হচ্ছে। বারপাড়া গ্রামের সাইফুল ইসলাম বলেন, নদীর কচুরিপানার কারণে পানি পচে গন্ধ হয়ে বিষাক্ত হয়ে গেছে। মশা, মাছি বাড়ছে। নদীর মাছ মরে যাচ্ছে। সবই কচুরিপানায় নদী ভরাট হওয়ার কারণে।
নদীর প্রাণ ফিরিয়ে আনতে হলে নদী সংরক্ষণ করতে হবে। সম্প্রতি যশোরের জেলা প্রশাসক মনিরামপুর উপজেলা প্রশাসনের মতবিনিময় সভায় জনগণের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে বলেন, মুক্তেশ্বরী থেকে আবর্জনা ও কচুরিপানা অপসারণের জন্য অচিরেই প্রকল্প গ্রহণ করা হবে।


আরো সংবাদ



premium cement