আশাবাদী হওয়ার সুযোগ কতটা
- ১৬ জানুয়ারি ২০২৪, ০০:০৫
এখন দেশে আমনের মৌসুম চলছে। ধান কাটা প্রায় শেষ। রেকর্ড উৎপাদন হয়েছে। বাজারে নতুন চাল এসেছে। সরকারের হাতে মজুদও যথেষ্ট। তার পরও চালের দাম বাড়ছে। গত এক সপ্তাহের মধ্যে রাজধানীর বাজারে কেজিপ্রতি চালের দাম বেড়েছে পাঁচ থেকে ছয় টাকা।
খুচরা ও পাইকারি ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, দাম বাড়ার কোনো কারণ নেই। সিন্ডিকেট করে দাম বাড়ানো হয়েছে। অবশ্য দেশে জিনিসপত্রের দাম বাড়তে কোনো কারণ লাগে না। ইচ্ছা করলেই যে কেউ দাম বাড়িয়ে দিতে পারে। গত ১৫ বছরে এমন দৃষ্টান্ত ভূরি ভূরি। ভরা মৌসুমে আলুর দাম বেড়ে যাওয়া, ঘাটতি না থাকলেও পেঁয়াজ, ডিম তেল, সবজি বা যেকোনো নিত্যপণ্যের দাম বেড়ে যাওয়া এতদিনের নৈমিত্তিক ঘটনা। মাঝে মধ্যে দু-একটি নিষ্ফল অভিযান এবং খুচরা ব্যবসায়ীদের কিছু জরিমানা করার দৃষ্টান্ত দেখা গেছে। তবে সেসব অভিযান কেবল বাজার ব্যবস্থাপনার বিষয়টি দেখার মতো কেউ যে আছে তারই জানান দেয়ার চেষ্টা বলেই মনে হয়েছে। বাস্তবে কাজে আসেনি।
দেশে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির পেছনে বরাবরই ব্যবসায়ী চক্র বা সিন্ডিকেটকে দোষারোপ করা হয়েছে। এই দোষারোপ ভিত্তিহীন এমন কেউ বলেনি। তবে বাণিজ্যমন্ত্রী অকপটেই বলেছিলেন, সিন্ডিকেটের গায়ে হাত দেয়া সম্ভব নয়। তাতে বাজারে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দেবে।
এবার চালের দাম বাড়ার পেছনে মিলারদের ভূমিকা আছে। তারা সপ্তাহের ব্যবধানে ৫০ কেজির প্রতি বস্তা চালের দাম ৩০০ টাকা বাড়িয়ে দিয়েছেন। এ কারণে পাইকারি পর্যায়ে চালের দাম বেড়েছে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা। এরই প্রভাব পড়ছে খুচরা বাজারে। খুচরা ব্যবসায়ীরা দাবি করেন, চাল মজুদ করে কৃত্রিমভাবে দাম বাড়ানো হচ্ছে। বস্তুত ঘুরে ফিরে সেই চক্র বা সিন্ডিকেটই সক্রিয়।
সঙ্গত কারণেই মিলারদের গায়েও সম্ভবত হাত দেয়া সম্ভব নয় কারো পক্ষে। কারণ তাদেরও বাজারে কারসাজি করার সুযোগ আছে। তাদেরও আছে প্রভাব, প্রতিপত্তি এবং ক্ষমতার ছত্রছায়া।
জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের এক কর্মকর্তা একটি দৈনিককে বলেছেন, চালের দাম বৃদ্ধির কারণ খুঁজে বের করা হবে। মিল, পাইকারি ও খুচরা বাজার এই তিন পর্যায়ে তদারকি করা হবে। কোথাও অনিয়ম পেলেই আইনের আওতায় আনা হবে। কাউকে ছাড় দেয়া হবে না। কর্মকর্তাদের এসব কথা বলাই নিয়ম। কিন্তু এবার বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম ঘোষণা দিয়েছেন, মজুদদারদের শক্ত হাতে দমন করা হবে। যারা কৃত্রিমভাবে বাজার নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করবে তাদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
প্রতিমন্ত্রীর ঘোষণায় আস্থা রাখা বা আশাবাদী হওয়ার সুযোগ আদৌ আছে কিনা সময়ই বলে দেবে। নতুন সরকার গঠন হয়েছে। সরকারপ্রধান পঞ্চমবারের মতো দায়িত্ব নিয়েছেন। এবারের সরকারের রাজনৈতিক সদিচ্ছা কতটা সাধারণের অনুকূলে থাকবে সেটিও দেখার আছে।
তবে যে দেশে রাজনৈতিক ও নীতিনির্ধারণী ক্ষমতার বেশির ভাগ ব্যবসায়ীদের হাতে সেখানে আশাবাদী হওয়ার খুব একটা অবকাশ আছে বলে মনে হয় না। আমাদের দীর্ঘ ১৫ বছরের অভিজ্ঞতা তো তেমন সুখকর নয়।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা