২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`
হলতা নদীতে জরাজীর্ণ সেতু

দ্রুত সংস্কার করুন

-

সারা দেশে হাজারো অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়েছে ও হচ্ছে। গণমাধ্যমে প্রকাশিত ও সম্প্রচারিত খবর থেকে জানা যায়, এসব প্রকল্পের অনেকগুলোই জনগণের তেমন কাজে আসছে না। এমনও দেখা গেছে, কোটি কোটি টাকা খরচ করে ভবন-সেতু নির্মাণ করা হয়েছে রাস্তাবিহীন জনবিরল এলাকায়। ফলে প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক, এসব প্রকল্পের আসল উদ্দেশ্য কী? অথচ বিপুল মানুষ উপকৃত হতে পারেন, এমন জনপদে সেতু-কালভার্ট নির্মাণ বা সংস্কার করা হচ্ছে না। তেমন একটি খবর গতকাল নয়া দিগন্তে প্রকাশিত হয়েছে।
নয়া দিগন্তের বরগুনা জেলা সংবাদদাতার পাঠানো প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপজেলা ও বরগুনার বামনা উপজেলার দুই গ্রামের চারটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সহস্রাধিক শিক্ষার্থীসহ আট গ্রামের প্রায় ১৫ হাজার মানুষ জরাজীর্ণ একটি সেতুর ওপর দিয়ে প্রতিনিয়ত ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করতে বাধ্য হচ্ছেন। জানা যায়, দুই জেলার মানুষের চলাচলের সুবিধার্থে হলতা নদীর ওপর দীর্ঘদিন আগে একটি সংযোগ সেতু নির্মাণ করা হয়েছিল। বামনা উপজেলা এলজিইডি এটি বাস্তবায়ন করে। এখন ব্যবহার অনুপযোগী হলেও নিরুপায় হয়ে এই সেতু দিয়েই যানবাহন ও মানুষকে চলাচল করতে হয়।

স্থানীয় সূত্রের বরাতে প্রতিবেদনে বলা হয়, হলতা নদীর একপাড়ে বরগুনার বামনা উপজেলার লক্ষ্মীপুরা দাখিল মাদরাসা ও লক্ষ্মীপুরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় অবস্থিত। অন্য পাড়ে পিরোজপুর জেলার মঠবাড়িয়া উপজেলার রাজারহাট শহীদ বাচ্চু মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও রাজারহাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। রয়েছে বাজার। তাই আট গ্রামের বাসিন্দাদের চলাচল ও যোগাযোগ স্থাপনে হলতা নদীতে সংযোগ সেতুটি নির্মাণ করা হয়েছিল। কিন্তু সেতুটি এখন মেয়াদোত্তীর্ণ। তবু নতুন করে নির্মাণের উদ্যোগ নেই। ঝুঁকিপূর্ণ এ সেতু দিয়ে প্রতিদিন আট গ্রামের হাজার হাজার মানুষ ও যানবাহন আসা-যাওয়া করে। স্থানীয়রা জানান, প্রতিদিন শত শত যানবাহন সেতুর ওপর দিয়ে চলাচল করায় যেকোনো সময় এটি ভেঙে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। ভারী যানবাহন চলাচলের কারণে সেতুটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। অবস্থা এমন শোচনীয় হয়েছে যে, সেতুর পিলারে ও মাঝখানে ফাটল দেখা দিয়েছে। পলেস্তারা খসে পড়ছে। সেতুর দুই পাশের রেলিং ভেঙে পড়ে আছে। সংস্কারের অভাবে মাঝখানে ফাটল দেখা দেয়ায় যান চলাচলে গুরুতর ব্যাঘাত ঘটছে। এ বিষয়ে বামনা উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইডি) জানিয়েছেন, ঝুঁকিপূর্ণ সেতুর স্থলে নতুন সেতু নির্মাণে উপজেলার মাসিক উন্নয়ন সভায় আলোচনা হয়েছে। কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ দিলে নতুন সেতু নির্মাণ করা যেতে পারে।
বর্তমান সরকার উচ্চস্বরে উন্নয়নের গল্প প্রচারে অতি উৎসাহী। কিন্তু বাস্তবে দেখা যাচ্ছে, জনগণের প্রকৃত উপকার হয়, প্রান্তিক জনগোষ্ঠী সরকারি উন্নয়নের সুবিধাভোগী হতে পারে- তেমন অনেক অবকাঠামো গড়ে তোলায় আগ্রহী নয় সরকার। হলতা নদীর ওপর নির্মিত মেয়াদোত্তীর্ণ সেতু তেমনই একটি দৃষ্টান্ত। সংশ্লিষ্ট এলাকাবাসীর মতো আমরাও চাই, বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটার আগেই হলতা নদীর ওপর নির্মিত সেতুটি দ্রুত সংস্কার করা হবে কিংবা নতুন করে নির্মাণের উদ্যোগ নেবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।


আরো সংবাদ



premium cement