২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`
গাইবান্ধায় বিদ্যুৎ সমিতির দুর্নীতি

এখনই দমন করতে হবে

-

একটি দৈনিকের সাদুল্লাপুর (গাইবান্ধা) প্রতিনিধি জানান, রংপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর জোনাল অফিসে বৃদ্ধি পেয়েছে দালালদের দৌরাত্ম্য। অফিস ঘিরে গড়ে উঠেছে তদবিরকারী ও দালাল চক্রের বিশাল নেটওয়ার্ক। নতুন লাইন দেয়ার কথা বলে ওরা হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা। সুমন নামের ইলেকট্রিশিয়ান সেচ লাইন দেয়ার নামে প্রতিবন্ধী জহুরুল ইসলামকে ভুয়া রসিদ দিয়ে এক লাখ ৪৪ হাজার ১১৫ টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে।
উপজেলার ইদিলপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ লক্ষ্মীপুর গ্রামের প্রতিবন্ধী জহুরুল সেচের জন্য গত বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে ‘বরেন্দ্র’ থেকে লাইন্সেপ্রাপ্ত হন। এরপর পল্লী বিদ্যুতের সাদুল্লাপুর জোনাল অফিসে লাইন নির্মাণের আবেদন করতে গেলে ধাপেরহাট ইউনিয়নের আরাজি ছত্রগাছা গ্রামের সুমন মিয়া নিজেকে ইলেকট্রিশিয়ান বলে পরিচয় দেন। তিনি জহুরুলের কাছ থেকে এক লাখ ৪৪ হাজার ১১৫ টাকা হাতিয়ে নিয়ে তাকে রসিদ দেন। এর পর থেকে লাইন নির্মাণে সুমন টালবাহানা করলে গ্রাহক জহুরুলের সন্দেহ হয়। কয়েক দিন আগে সাদুল্লাপুর জোনাল অফিসে গিয়ে জানতে পারেন, ওই রসিদটি ভুয়া। এভাবে কথিত সুমন মিয়া বিদ্যুৎ অফিসের কর্তাদের নাম ভাঙিয়ে বিভিন্ন মানুষের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা নিয়ে প্রতারণা করে আসছেন বলে একাধিক সূত্রে জানা গেছে। জাকারিয়া নামে আরেক দালালসহ বেশ কিছু দালালচক্র সাধারণ মানুষের নতুন মিটার ও লাইন দেয়ার নামে প্রতারণা চালিয়ে যাচ্ছে। এখানে দালালচক্র বৃদ্ধি পেলেও অফিসের কর্মকর্তারা নীরব ভূমিকা পালন করছেন। সাদুল্লাপুর পল্লী বিদ্যুৎ অফিসে নিয়োগকৃত ইলেকট্রিশিয়ানদের সাথে দালালদের গভীর সম্পর্ক। উপজেলার যেকোনো গ্রাম থেকে গ্রাহক মিটার কিংবা নতুন লাইনের আবেদন করামাত্র ফাইল হাওয়া হয়ে যায় ইলেকট্রিশিয়ানদের ব্যাগে। ফাইলের ইলেকট্রিশিয়ান ও দালালদের যোগসাজশে গ্রাহকরা জিম্মি তাদের কাছে। দালালদের শর্তানুযায়ী মোটা অঙ্কের টাকা দিলে ফাইলপত্র অফিসে পাওয়া যায়, নচেৎ গায়েব। এতে মাসের পর মাস কিংবা বছরের পর বছর ঘুরতে হয় গ্রাহকদের। বিদ্যুৎ যেন তাদের কাছে ‘সোনার হরিণ।’ এতে করে যেমন পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের ভাবমর্যাদা ক্ষুণœ হচ্ছে, অপর দিকে বিদ্যুতের গ্রাহকরা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
জহুরুল ইসলাম বলেন, অফিসের ইলেকট্রিশিয়ান পরিচয় দিয়ে সুমন মিয়া ভুয়া রসিদ দিয়ে এক লাখ ৪৬ হাজার টাকা নিয়েছেন। এক বছর ঘুরেও সেচের লাইন নির্মাণ হয়নি। সংশ্লিষ্টদের সহযোগিতা দাবি করছি। জহুরুলের কাছ থেকে টাকা নেয়ার বিষয়টি স্বীকার করেছেন অভিযুক্ত সুমন মিয়া। সাদুল্লাপুর জোনাল অফিসের এলাকা পরিচালক সাইফুল ইসলাম বলেন, প্রতিবন্ধী জহুরুল ইসলামকে ভুয়া রসিদ দিয়ে সুমন মিয়া এক লাখ ৪৪ হাজার ১১৫ টাকা গ্রহণের বিষয়টি শুনেছি।
সাদুল্লাপুর জোনাল অফিসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার নুরুজ্জামান জানান, অফিসের বাইরে কে কার সাথে টাকা লেনদেন করবেন, সেটি আমার দেখার বিষয় নয়। সুমন মিয়ার প্রতারণার ঘটনাটি খতিয়ে দেখা হবে।


আরো সংবাদ



premium cement