২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ আজ

রাজনৈতিক বিরোধের অবসান হবে কি

-

সব জল্পনার অবসান ঘটিয়ে আজ রোববার ৭ জানুয়ারি দেশে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ হতে যাচ্ছে। তবে দেশের প্রধান বিরোধী রাজনৈতিক শক্তি বিএনপিসহ সমমনা দলগুলোর বর্জনের কারণে প্রতিদ্বন্দ্বিতাহীন এই নির্বাচন অর্থহীন হয়ে পড়েছে।
বাংলাদেশে দলীয় সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন অবাধ ও নিরপেক্ষ হয়নি। তাই বিএনপিসহ প্রায় সব বিরোধী দল সুষ্ঠু, অবাধ, নিরপেক্ষ ও সবার অংশগ্রহণে প্রতিযোগিতামূলক নির্বাচনের জন্য নির্বাচনকালীন দলনিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করছে। কিন্তু সরকার সেই দাবি উপেক্ষা করে আবারো একতরফা নির্বাচনের আয়োজন করেছে। যে নির্বাচনে ভোটারদের বিকল্প প্রতিনিধি বাছাইয়ের কোনো সুযোগই নেই।
প্রকৃতপক্ষে ভোটগ্রহণের আগেই নির্বাচনের ফল নির্ধারিত হয়ে গেছে। সবাই শতভাগ নিশ্চিত, টানা চতুর্থবারের মতো ক্ষমতায় আসছে আওয়ামী লীগ। এমনকি এ নির্বাচনে কে বিরোধী দলের আসনে বসবে সেটিও সরকারই নির্ধারণ করবে।
নব্বইয়ের গণ-অভ্যুত্থান পরবর্তী তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত নির্বাচনগুলোতে ফলাফল ঘোষণার আগে বলা মুশকিল ছিল কারা ক্ষমতায় যাবেন। কারণ, দেশের প্রধান দুই রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ এবং বিএনপির জনসমর্থন প্রায় সমান। তাই দলনিরপেক্ষ সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত ভোটগ্রহণে দল দুটোর মধ্যে নির্বাচনী মাঠে তুমুল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়েছে। দেশের নির্বাচনী ইতিহাস তার সাক্ষ্য বহন করে।
এবারের নির্বাচনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের বিজয় হবে ২০১৪ এবং ২০১৮ সালে অনুষ্ঠিত আগের দুটি নির্বাচনের মতো, যাকে আন্তর্জাতিক মিডিয়া ‘প্রহসনমূলক’ এবং ‘স্বচ্ছভাবে জালিয়াতি’ বলে বর্ণনা করেছে। কূটনৈতিক মিশনগুলো যাকে সরকারের একটি ‘বিশেষ নির্বাচনী অভিযান’ হিসাবে চিহ্নিত করেছে।
যদিও নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার আগে সরকারের তরফ থেকে অবাধ-নিরপেক্ষ ও সবার অংশগ্রহণে প্রতিযোগিতামূলক নির্বাচনের কথা বলা হয়েছে। কিন্তু পারিপার্শ্বিক ঘটনাপ্রবাহ বলে দেয় ক্ষমতাসীনরা যেকোনো উপায়ে নিজেদের ক্ষমতা ধরে রাখতে সব রকম কৌশল, দমন-পীড়নের পথ বেছে নিয়েছে যাতে বিরোধীরা নির্বাচনে অংশ নিতে না পারে। সবচেয়ে শক্তিশালী বিরোধী দলকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে দূরে রাখতে ষড়যন্ত্র, বিরোধীদের গণগ্রেফতার, সহিংসতা এবং রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের ব্যবহার দৃশ্যমান হয়ে ওঠে। বিরোধী দলের লাখো নেতাকর্মী এখনো জেলবন্দী।
বিরোধী দলবিহীন ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়, তাতে ১৫৩ জন প্রার্থী বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত নির্বাচনের আগের রাতে ব্যালট বাক্স ভরে ফেলা হয়।
সরকারবিরোধী দলবিহীন আজকের নির্বাচনী বৈতরণী পার হতে পারলেও প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে, আজকের পর আমাদের কী কী চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হবে। বাংলাদেশের বন্ধুপ্রতিম প্রভাবশালী অনেক দেশ এবারের নির্বাচন নিয়ে বেশ তৎপর ছিল। তাদের বক্তব্য স্পষ্ট, বাংলাদেশে নির্বাচনে যেন জনআকাক্সক্ষার প্রতিফলন ঘটে। কিন্তু তা হলো না। ফলে নির্বাচন-উত্তর আমরা গণতান্ত্রিক বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যেতে পারি, এমন আশঙ্কা তীব্রতর হচ্ছে। সঙ্গত কারণে বলা যায়, ২০২৪ সালের নির্বাচনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের বিজয় নিশ্চিত হলেও এটি যে দেশ, জাতি, গণতন্ত্র, অর্থনীতি কারো জন্যই শুভ ও কল্যাণকর হবে না তা স্পষ্ট। তাই প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক, এই নির্বাচন আমাদের জাতীয় জীবনে কী প্রভাব রাখবে।


আরো সংবাদ



premium cement
বন্দরে অহিংস গণঅভ্যুত্থান কর্মসূচিতে যাওয়ার পথে বাস আটক যাত্রাবাড়ীতে সংঘর্ষে ৩ শিক্ষার্থী নিহতের দাবি কলেজ কর্তৃপক্ষের রাস্তায় নয়, ন্যায্য দাবি নিয়ে আমার কাছে এসো : শিক্ষা উপদেষ্টা ৪০ বছর পর শ্মশানের জমি বুঝে পেল হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা প্রধান বিচারপতি ঘোষিত বিচার বিভাগ সংস্কারের রোডম্যাপ বাস্তবায়নের অগ্রগতি প্রতিবেদন প্রকাশ শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ : যাত্রাবাড়ী-ডেমরায় বিজিবি মোতায়েন বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে হামলাকারী নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতা গ্রেফতার ঢাকা থেকে খুলনা পর্যন্ত পরীক্ষামূলক ট্রেন চালু অন্তর্বর্তী সরকারের সাথে বিএনপির কোনো মতপার্থক্য নেই : তারেক রহমান পার্থে ইতিহাস গড়ল ভারত, পাত্তাই পায়নি অস্ট্রেলিয়া দেশের শ্রমখাতে নতুন করে অসন্তোষ তৈরি হতে পারে : শ্রম সচিব

সকল