২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`
ভরা মৌসুমেও সবজি-আলুর দাম চড়া

বাজারে নজরদারি নেই

-

দেশে সব ধরনের নিত্যপণ্যের দাম সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে। স্বল্প ও নি¤œবিত্ত শ্রেণীর মানুষ দুর্বিষহ জীবন কাটাচ্ছেন। বলা ভালো, তাদের জীবনে নেমে এসেছে স্থবিরতা। এমন পরিস্থিতি থেকে সাধারণ মানুষকে নিষ্কৃতি দিতে সরকারের তরফে কোনো উদ্যোগ নেই। সাধারণ মানুষের দুঃখ-দুর্দশা দেখার অবকাশ নেই সরকারের। তাদের এখন এক নম্বর কর্মসূচি হলো আরেক দফা ক্ষমতায় থাকা নিশ্চিত করা। এই ফাঁকে সুযোগসন্ধানী ব্যবসায়ী সম্প্রদায় অতিরিক্ত মুনাফা করতে প্রায় সব জিনিসের দাম মাত্রাতিরিক্ত বাড়িয়ে দিয়ে বাজার থেকে বিপুল অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন।
একটি নমুনা দিলে বিষয়টি পরিষ্কার হবে। যেমন- এখন আলুর ভরা মৌসুম। বাজারে পর্যাপ্ত সরবরাহ রয়েছে। এর পরও দাম চড়া হওয়ায় সাধারণ ক্রেতা পণ্যটি কিনতে হিমশিম খাচ্ছেন। অথচ প্রতি বছর বাজারে নতুন আলুর সরবরাহ শুরু হলে নতুন-পুরোনো সব ধরনের আলুর দাম কমে যায়। এবার পরিস্থিতি সম্পূর্ণ বিপরীত। এক মাসের বেশি সময় আগে বাজারে নতুন আলুর সরবরাহ এলেও দাম কমেনি। রাজধানীর খুচরা বাজারে এখনো মানভেদে ৬০-৭০ টাকা কেজি দরে আলু বিক্রি হচ্ছে। অন্যদিকে শীতের সবজিতে বাজার ভরপুর থাকলেও দাম বাড়তি। বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে মাছ, মুরগি, আদা, রসুনসহ বিভিন্ন নিত্যপণ্য।
গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, বাজারে পুরোনো আলুর সরবরাহ খুব কম। এ আলু মানভেদে ৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। মুড়িকাটা পেঁয়াজ মানভেদে প্রতি কেজি ৯০-১০০ টাকা। পুরোনো দেশী ও ভারতীয় পেঁয়াজ মানভেদে ১৩০-১৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। রসুন এখনো উচ্চমূল্যে বিক্রি হচ্ছে। দেশী রসুন ২৫০-২৬০ টাকা ও আমদানি করা রসুন ২২০-২৪০ টাকা কেজি। আদা প্রতি কেজি ২২০-২৪০ টাকা। ফার্মের ডিমের দাম প্রতি ডজন ১৩০-১৩৫ টাকা। প্যাকেটজাত চিনি ১৪৮ টাকা ও খোলা চিনি ১৪৫ থেকে ১৫০ টাকা কেজি। এক লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম ১৭৩ টাকা ও পাঁচ লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম ৮৪৫ টাকা। ব্রয়লার মুরগি প্রতি কেজি ১৯০-২০০ টাকা ও সোনালি মুরগি ৩২০-৩৩০ টাকা। শিম বিক্রি হচ্ছে ৬০-১০০ টাকায়। লম্বা বেগুন ৫০-৬০ টাকা ও গোল বেগুন ৬০ থেকে ১০০ টাকায়।
লক্ষণীয়, দেশে খাদ্যপণ্যে মূল্যস্ফীতি এখনো দুইয়ের অঙ্কের ঘরে। ফলে উচ্চমূল্যে খাদ্যপণ্য কিনতে গিয়ে দেশের বেশির ভাগ মানুষকে তাদের উপার্জনের প্রায় সব অর্থ খরচ করতে হচ্ছে। এতে শুধু ক্ষুধা নিবারণ হচ্ছে, পুষ্টিগুণসম্পন্ন খাবার জুটছে না। দেশের বেশির ভাগ জনগোষ্ঠী এখন পুষ্টিহীনতার শিকার। এত কিছুর পরও সরকার নিজেদের সাফল্যগাথা তুলে ধরতে উন্নয়নের বয়ান দিয়ে যাচ্ছে, যা দেশবাসীর সাথে চরম রসিকতা ছাড়া কিছু নয়।
বাজার বিশ্লেষকদের মতে, দেশে দীর্ঘদিন ধরে শক্তিশালী বাজারব্যবস্থাপনা গড়ে না তোলার পেছনে ব্যবসায়ীদের বাড়তি সুবিধা দেয়ার অপকৌশল রয়েছে ক্ষমতাসীনদের। আমরা মনে করি, সাধারণ মানুষকে স্বস্তি দিতে হলে কালক্ষেপণ না করে বাজারে কঠোর নজরদারির ব্যবস্থা করতে হবে। একই সাথে ক্রেতাবান্ধব একটি টেকসই বাজারব্যবস্থাপনা গড়ে তুলতে হবে।


আরো সংবাদ



premium cement