২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`
ডেঙ্গুর ভয়াবহ ঝুঁকিতে দেশ

দরকার কার্যকর উদ্যোগ

-

ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়া ইত্যাদি মশাবাহিত রোগ কখনো মহামারীর মতো ভয়াবহ ছিল না। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে ডেঙ্গুতে মৃত্যু যে হারে দেখা যাচ্ছে; তাতে রোগটি আর হেলাফেলার পর্যায়ে নেই। মাত্র এক মৌসুমে ঢাকাসহ সারা দেশে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন প্রায় দুই হাজার মানুষ। চলতি শীতে তা আরো বাড়তে পারে। রাজধানী ঢাকায় ঝুঁকি বেড়েছে।
এক জরিপে দেখা গেছে, মহানগরীর প্রায় ১২ শতাংশ বাড়ি ডেঙ্গুরোগের উচ্চ ঝুঁঁকিতে রয়েছে। গত ৮ থেকে ১৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত দুই সিটির ৯৯টি ওয়ার্ডে বর্ষা-পরবর্তী লার্ভা জরিপ করে স্বাস্থ্য অধিদফতরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখা। তাতে ১২ শতাংশের বেশি বাড়িতে ২০২২-এর তুলনায় ২০২৩ সালে বর্ষা-পরবর্তী সময়ে ডেঙ্গুর ঝুঁঁকি প্রায় তিনগুণ বেড়েছে।
২০২৩ সালে ডেঙ্গু অন্তত পাঁচগুণ বাড়তে পারে- এমন পূর্বাভাস আগে দেয়া হয়। বিশেষজ্ঞরাও একই সতর্কতা জানিয়েছিলেন। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়সহ সরকারের সংশ্লিষ্ট দফতরগুলো সেই পূর্বাভাসের আলোকে কার্যকর ব্যবস্থা নিলে এতগুলো জীবনহানি রোধ করা অসম্ভব ছিল না। কিন্তু সেটি হয়নি। এখন যে তিনগুণ ঝুঁকি বৃদ্ধির কথা বলা হচ্ছে, তাতেও সরকারের দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ দেখা যাচ্ছে না।
কীটতত্ত্ববিদরা বলছেন, রাজধানীতে পরিস্থিতি যখন উচ্চ ঝুঁঁকিপূর্ণ তখন ঢাকার বাইরের পরিস্থিতি আরো বেশি নাজুক হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। গত বছর ঢাকার বাইরে ডেঙ্গু ছড়িয়েছে ব্যাপকভাবে। নতুন বছরে সেটি বাড়বে বলে বিশেষজ্ঞদের ধারণা। কিন্তু তা রোধের আগাম কোনো উদ্যোগ নেই। স্বাস্থ্য ও স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় সারা দেশে ডেঙ্গু রোধে পদক্ষেপ নেবে, এটি প্রত্যাশিত। কিন্তু সরকারের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত ইউনিয়ন পর্যায়ে ডেঙ্গুসংক্রান্ত কোনো কার্যক্রম নেই। নেই সংশ্লিষ্ট স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রশিক্ষণ দেয়ার কোনো উদ্যোগ। এমনকি ডেঙ্গুর ঝুঁকি কতটা গুরুতর তা জানার জন্য সারা দেশে কোনো জরিপও চালানো হয়নি।
জাতীয় পর্যায়ের কমিটিগুলোও কার্যকরভাবে সক্রিয় করা হয়নি। কীটতত্ত্ববিদদের নিয়ে তাদের নেতৃত্বে কোনো কমিটি গঠন করা হয়নি। স্থানীয় পর্যায়ে কীটনাশক ও সরঞ্জামের চাহিদা নিরূপণ এবং সরবরাহের উদ্যোগও নেই। বস্তুত ডেঙ্গুর বাড়তি ঝুঁকি নিরসনে সরকারের দফতরগুলো পুরোপুরি উদাসীন বললে বাড়িয়ে বলা হবে না।
ডেঙ্গুর মতো একটি সাধারণ রোগ প্রতিরোধে আমাদের এ ব্যর্থতা ও উদ্যোগহীনতা কোনোভাবে গ্রহণযোগ্য নয়। সব স্থবিরতা ঝেড়ে ফেলতে হবে। জনগণের প্রতি সরকারের দায়িত্ব ন্যূনতম পর্যায়ে হলেও পালন করতে হবে।
একটি সহযোগী দৈনিকে একজন বিশেষজ্ঞ বলেছেন, সরকার মশকনিধনে নতুন যে কর্মকৌশল নির্ধারণ করেছে তা অনেক দুর্বল। এ দুর্বলতা কাটিয়ে উঠতে যা যা করণীয় তা অবিলম্বে করতে হবে। পাশাপাশি জনসচেতনতা তৈরি, উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে মশা মারার কার্যক্রম ছড়িয়ে দিতে হবে। একটি সমন্বিত কার্যক্রম গ্রহণ অপরিহার্য। কিন্তু বাস্তব সত্য হলো, ডেঙ্গু প্রতিরোধের বিষয়টি এ মুহূর্তে সরকারের প্রাধিকারের তালিকায় নেই। সরকার জাতীয় নির্বাচন ও ক্ষমতায় টিকে থাকার বিষয়ে ব্যতিব্যস্ত। যদিও জনগণের স্বাস্থ্যগত ঝুঁকি হ্রাসের দায়িত্বে অবহেলার কোনো সুযোগ নেই।


আরো সংবাদ



premium cement
জামিন পেলেন সাবেক পরিকল্পনামন্ত্রী মার্চের মধ্যে শ্রম আইন সংশোধন করা হবে : শ্রম সচিব ডেঙ্গুতে আরো ২ মৃত্যু, হাসপাতালে ৯৩৪ নোয়াখালীর আ’লীগ নেতা ঢাকা থেকে গ্রেফতার ঢাকায় যখন-তখন সংঘর্ষ-বিক্ষোভ, ইচ্ছে হলেই রাস্তা বন্ধ বিনা সুদে লাখ টাকা ঋণের প্রলোভন : মূল হোতা মোস্তফা আটক উন্নয়ন ব্যয়-বিনিয়োগ স্থবিরতায় অর্থনৈতিক মন্দার আশঙ্কা পরিকল্পনা উপদেষ্টার দ্রব্যমূল্য সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে আনতে হবে : সেলিম উদ্দিন ছাত্র সংগঠনগুলোকে নিয়ে বৈঠকের ডাক বৈষম্যবিরোধীদের সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রণে মোল্লা কলেজ শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ : ৮ হাজার শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে মামলা

সকল