চলছে সেবার বদলে হয়রানি
- ০৩ জানুয়ারি ২০২৪, ০০:০৫
সহযোগী একটি দৈনিকে ঢাকা বোর্ডে হয়রানি ও প্রতারণার খবর দিয়েছে। গাজীপুরের এক শিক্ষার্থী কিভাবে চক্রের ফাঁদে পড়েছেন তা তুলে ধরেছে পত্রিকাটি। তিনি মাধ্যমিকের সনদে নাম ও বয়সের ভুল সংশোধন করতে গত সেপ্টেম্বরে অনলাইনে আবেদন করেন। ঢাকা বোর্ডে খোঁজ নিতে এসে তার সাথে পরিচয় হয় একজন সেকশন অফিসারের। কামরুল নামে ওই অফিসার ১০ হাজার টাকার বিনিময়ে দ্রুত তাকে কাজটি করে দেয়ার আশ্বাস দেন। দেনদরবার করে তিনি সাত হাজার টাকা দেন। চার মাস কেটে গেলেও তার কাজটি হয়নি। ঘুষ নিয়ে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি অপরাধ করেছেন। আবার সময়মতো কাজটি না হওয়ায় তার ভোগান্তি বেড়েছে। কিন্তু যথারীতি এ ধরনের অপরাধী এখন সহজে পার পেয়ে যায়।
ডিজিটালাইজেশনের নামে আগের চেয়ে জটিলতা বেড়েছে। মানুষের পারিবারিক, সামাজিক ও আর্থিক ব্যবস্থাপনায় রাষ্ট্রীয় কঠোর নজরদারি সৃষ্টি হয়েছে। জন্মসনদ, পরীক্ষার সনদ ও জাতীয় পরিচয়পত্রে পরিবেশিত তথ্য একটু গরমিল হলে মানুষের ভোগান্তির শেষ থাকে না। একটি তথ্য সংশোধনের জন্য বেশ কয়েকটি অফিসে ধরনা দিতে হয়। দুর্নীতি প্রাতিষ্ঠানিকীকরণ হওয়ায় এই কাজ অত্যন্ত কঠিন হয়েছে। মানুষের বিপদকে একটি শ্রেণী সুযোগ হিসেবে দেখে। লাল ফিতার দৌরাত্ম্য কতটা সেটি হাড়ে হাড়ে টের পাওয়া যায়। অস্ত্র ঠেকিয়ে যেভাবে চাঁদবাজি করা হয়, এ দেশের অফিসগুলোতে ফাইল ঠেকিয়ে একইভাবে ঘুষ আদায় করা হয়।
একটি সনদ সংগ্রহ করা যেমন কঠিন, সনদে যদি ভুল হয় সেটি সংশোধন করা আরো কঠিন। এখানে উল্লেখ করা প্রয়োজন, জন্ম নিবন্ধন ও জাতীয় পরিচয়পত্র অন্যান্য নাগরিক কাজে ব্যবহার করতে হয়। স্কুলে ভর্তি করার জন্য জন্ম নিবন্ধন লাগে, জায়গা-জমির নিবন্ধনে লাগে জাতীয় পরিচয়পত্র। জন্ম নিবন্ধন নিতে হয় স্থানীয় জনপ্রতিনিধির অফিস থেকে। জাতীয় পরিচয়পত্র নিতে হয় নির্বাচন কমিশন থেকে। সংশ্লিষ্ট অফিস থেকে এগুলো আদায় করা যুদ্ধের শামিল। আবার শিক্ষা সনদের সাথে এগুলোর তথ্য হুবহু মিলতে হয়। একটি ভুল হলে সবগুলো আবার ঠিক করতে হয়। শিক্ষা সনদে ভুল সংশোধনকে আরো কঠিন করে রাখা হয়েছে। প্রথমে অনলাইনে আবেদন করতে হয়। এরপর উপযুক্ত প্রমাণসহ বোর্ডের মাসিক সভায় উপস্থিত হতে হয়। ওই বোর্ডে এমন সব লোক রাখা হয়েছে, যারা সবাই প্রাসঙ্গিক নন। তারা কাজটি আরো কঠিন করে ফেলেন। প্রমাণ পছন্দ না হলে বোর্ড তার আবেদন বাতিল করে দেয়। অথচ জরুরি কাগজপত্র সংগ্রহ করতে হয়েছে বহু কাঠখড় পুড়িয়ে। এই জটিলতা শুরু হয়েছিল সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধের সময়। তার বাস্তবতা না থাকলেও এর কঠিনতা এখনো চাপানো আছে। পত্রিকার ওই প্রতিবেদনে জানা যাচ্ছে, ঢাকা বোর্ডের কামরুলের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে, অনেকের কাছ থেকে টাকা নিয়ে কাজ করে দেননি। নাগরিকদের সেবাকে এভাবে কঠিন করে ফেলায় কামরুলরা সুযোগ নিচ্ছেন। ঢাকা বোর্ডে শুধু একজন কামরুল নন, আরো বহু প্রতারক রয়েছে। দেশের প্রত্যেকটি শিক্ষাবোর্ডে এ ধরনের প্রতারণা চলছে। অপরাধীরা শাস্তির আওতায় না আসায় এই সন্দেহ জাগা স্বাভাবিক যে, এর সাথে উপরের কর্মকর্তারা জড়িত। নির্বাচন কমিশন ও পাসপোর্ট অফিসেও এসব কাজে অসাধু সিন্ডিকেট রয়েছে।
নাগরিকের সনদ সরবরাহ করবে রাষ্ট্র। এটি সংশ্লিষ্টদের দায়িত্ব। অথচ সেবামূলক কর্মকে অবৈধ উপার্জন আর নাগরিকদের ভোগান্তির কারণ বানিয়ে নিয়েছে। আমরা মনে করি, অসাধু চক্রকে শনাক্ত করে বিচারের আওতায় আনতে হবে। নাগরিকদের জন্য এই সেবা প্রদান একেবারে সহজ করে দিতে হবে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা