এটি গ্রহণযোগ্য নয়
- ০২ জানুয়ারি ২০২৪, ০০:০৫
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সরকারি দলের লোকজন নামে নিজেরাই পক্ষ-বিপক্ষ হয়ে বিশৃঙ্খলা করছেন। এ এক নজিরবিহীন নৈরাজ্য। নিজের দলের লোকদের নিজেরা মারধর করছেন, ভয় দেখাচ্ছেন। বিগত দুটো জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিরোধী দলের ওপর এমন পীড়ন চালানো হলেও এবার তাদের অনুপস্থিতিতে নিজেরাই নিজেদের ওপর চড়াও হচ্ছেন। বিরোধীদের ওপর চেপে বসেছে রাষ্ট্রীয় দমন-নিপীড়ন।
দেশ-বিদেশে গণতন্ত্রের শুভাকাক্সক্ষী ও পৃষ্ঠপোষক সবার মতামত অগ্রাহ্য করে সরকার এগিয়ে চলেছে এক অর্থহীন নির্বাচনের দিকে। জাতির জন্য এটি হতাশা ও দুঃখের। কিন্তু সরকার নির্বিকার।
এবারের একতরফা নির্বাচনের প্রচারণা শুরুর ১২ দিনে প্রতিপক্ষের ওপর হামলা, নাশকতা ও ভাঙচুরের ঘটনায় মামলা হয়েছে ১৮৪টি। সহযোগী একটি দৈনিকের হিসাব অনুযায়ী, ১২৯টি জায়গায় সঙ্ঘাত-সহিংসতা হয়েছে। প্রার্থীর ওপর হামলা, গাড়িবহরে ভাঙচুর ও নির্বাচনী ক্যাম্প জ্বালিয়ে দেয়ার ঘটনা ঘটেছে। ইতোমধ্যে ১১৮ আসনে নৌকা নিরাপদ জয়ের লক্ষ্যে এগিয়ে যাচ্ছে। অন্যদিকে, দলটির স্বতন্ত্র প্রার্থীদের মধ্যেও বেশ কয়েকজনের জয় নিশ্চিত। এসব সৌভাগ্যবানকে দিয়ে সরকারি দলের সংখ্যাগরিষ্ঠ আসন ভোটের আগে নিশ্চিত হয়ে যাচ্ছে। যেমন হয়েছিল ২০১৪ সালের নির্বাচনে। বাকি আসনগুলোতে পাতানো প্রতিযোগিতা লক্ষণীয়। যেখানে দৃশ্যত অস্ত্র ও পেশিশক্তি যাদের বেশি তারা মাঠ নিয়ন্ত্রণ করছেন। তবে সব কিছুর নাটাই সরকারের মুঠোয়। ইতোমধ্যে পরিস্থিতি টের পেয়ে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন জাতীয় পার্টির তিন প্রার্থী। আরো অনেক প্রার্থী একই পথে হাঁটতে পারেন।
ঢাকা থেকে পাঠানো এক ইউরোপীয় মিশনের চিঠিতে বাংলাদেশের এই পাতানো নির্বাচনের চিত্র উঠে এসেছে। চিঠিতে বলা হয়েছে, নির্বাচনে ‘সত্যিকারের কোনো বিরোধী প্রার্থীর’ উপস্থিতি থাকছে না। সংস্থাটির ভাষায়, বাংলাদেশের মানুষ একে ‘বিশেষ নির্বাচন কার্যক্রম’ হিসেবে আখ্যায়িত করছে। চিঠিতে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাকের টিভিতে দেয়া সাক্ষাৎকারের উল্লেখ করা হয়, যেখানে কৃষিমন্ত্রী স্পষ্ট ভাষায় বলেছেন, ‘নির্বাচনে আনার জন্য বিএনপি নেতাদের কারাগার থেকে মুক্তি দেয়ার প্রস্তাব দেয়া হয়েছিল।’
প্রধান বিরোধী দল বিএনপি জাতিসঙ্ঘসহ বিদেশী কূটনৈতিক মিশনগুলোতে নির্বাচন পরিস্থিতি নিয়ে চিঠি দিয়েছে। তাতে দলটি আসন্ন নির্বাচন ঘিরে সরকারের নানা অসততার নমুনা তুলে ধরে বলেছে, ‘রাষ্ট্র্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় নাশকতা চলছে। বাসে-ট্রেনে অগ্নিসংযোগ পূর্বপরিকল্পিত। জনগণের জানমালের নিরাপত্তা, স্বাধীনতা বিনষ্ট করছে আওয়ামী লীগ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একটি অংশ। বেধড়ক দায় চাপানো হচ্ছে বিএনপির ওপর।’ সাম্প্রতিককালে নাশকতার একটি ঘটনারও বিশ্বাসযোগ্য তদন্ত হয়নি।
সরকারি দলের বিভিন্ন পর্যায় থেকে ভোটকেন্দ্রে আসার জন্য নাগরিকদের হুমকি-ধমকি দেয়া হচ্ছে। যারা সরকারি সুযোগ সুবিধা পান, ভোটকেন্দ্রে না এলে সেই সুবিধা বন্ধ করার কথা বলা হচ্ছে। এর আগে দেখা গেছে, ভোটাররা যাতে কেন্দ্রে না আসেন সেই প্রচেষ্টা চালাতে। ২০১৮ সালে এ কৌশল অবলম্বন করা হয়। এভাবে কোনোদিন গণতন্ত্র চর্চা হয় না। এ ধরনের একটি জবরদস্তি নির্বাচন করে সরকার যেনতেন প্রকারে ক্ষমতা আঁকড়ে থাকতে চায়। এটি কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা