অবসান হোক সব মন্দের
- ০১ জানুয়ারি ২০২৪, ০০:০৫
আজ ২০২৪ সালের প্রথম দিন। জাতীয় জীবনে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার মধ্যে ইংরেজি নতুন বছর শুরু হলো। বিগত বছরগুলোতে দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। ২০২৩ সালব্যাপী বিরোধীদের ওপর চলেছে চরম-পীড়ন, নির্যাতন। তবে অন্ধকার যত গভীর হয়; ভোরের আলো তত কাছে আসে। নতুন বছরটি সেই সম্ভাবনার দ্বার খোলার প্রত্যাশায় রয়েছে জাতি। পুরোনো দিনের সব গ্লানি মুছে উজ্জ্বল দিনের যাত্রার প্রত্যাশায় উদগ্রীব পুরো জাতি, যেখানে অনিয়ম-বিশৃঙ্খলা ঘুচতে শুরু করবে। মানুষ সুন্দর ও কল্যাণের নাগাল পাবে। স্র্রষ্টার কাছে দেশবাসী এই প্রার্থনা করে- সব দানবীয় আচরণের সমাপ্তি হবে, মুক্তিকামী মানুষ তার সব অধিকার ফিরে পাবে।
বিদায়ী-২০২৩ সালে দুটো সমস্যা প্রধান ছিল। সরকারের কঠোর দমন-পীড়ন ও নিত্যপণ্যের অগ্নিমূল্য। সারা বছর ধরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের ওপর চড়াও হয়েছে। তাদের মানবাধিকার ও নাগরিক অধিকার লঙ্ঘন করেছে অবলীলায়। সভা-সমাবেশ অতিরিক্ত শক্তি প্রয়োগ করে পণ্ড করে দিয়েছে। হাজার হাজার নেতাকর্মীকে জেলে পুরেছে। বাসাবাড়ি ব্যবসায়-প্রতিষ্ঠানে হামলা করেছে। চলেছে গুপ্ত হামলা ও হত্যার ঘটনা। পুলিশ ও সরকারি দলের লোকদের ভয়ে বহু রাজনৈতিক কর্মী পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। এর মধ্যে দেশী-বিদেশী সবার দাবি অগ্রাহ্য করে বছরের শুরুতে একতরফা নির্বাচনের পথে হাঁটছে। এ ধরনের একটি প্রহসনের নির্বাচন যে আত্মঘাতী হবে তার সব লক্ষণ ফুটে উঠলেও সরকার তা থোড়াই কেয়ার করছে।
বিদায়ী বছরে সাধারণ মানুষের প্রধান সঙ্কট ছিল নিত্যপণ্যের আকাশছোঁয়া দাম। করোনা মহামারীর পর রাশিয়ার ইউক্রেন আক্রমণ ও এর সাথে আমাদের দেশের অভ্যন্তরে ব্যাপক অনিয়ম-দুর্নীতি পরিস্থিতিকে অধিকতর নাজুক করেছে। ফলে সাধারণ মানুষের জীবনে চরম ভোগান্তি অব্যাহত রয়েছে। এ ক্ষেত্রে রাষ্ট্র নাগরিকদের যথাযথ সাহায্য-সহায়তা নিশ্চিত করতে পারেনি। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে লুণ্ঠনের সংস্কৃতি গত বছরও পুরোমাত্রায় বিদ্যমান ছিল। অভিনব সব লুটপাট সবাইকে হতবাক করে দিয়েছে। বিশেষ করে যখন ফাঁস হয়, একেকটি কেলেঙ্কারিতে হাজার হাজার কোটি টাকা গায়েব হয়েছে। দেখা গেছে, দেশের বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে লোপাট করে বিদেশে পাড়ি জমিয়েছেন অনেকে। এমন দুর্ভাগ্যজনক ঘটনায় দেশের ভেতরের যে প্রশাসনিক কাঠামো, যারা লুণ্ঠনকারীদের বাধা দেবে, তাদের কোনো একটি অংশ এতে সহযোগিতা করছে। ফলে দুর্বৃত্তরা সহজে জনগণের অর্থ আত্মসাৎ করে নিরাপদে কেটে পড়ছে।
রাষ্ট্র যদি শুভ কাজের পৃষ্ঠপোষকতা করে; সে দেশে নিয়মশৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠিত হয়- অরাজকতা কমে আসে। যদি রাষ্ট্রীয় পর্যায় থেকে মন্দের আশকারা দেয়া হয়, ঘটে এর ঠিক বিপরীত। আর সীমা অতিক্রম করলে দেখা দেয় চরম বিশৃঙ্খলা। ক্ষমতার উৎস নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে ক্ষমতাসীনরা দুর্বলদের কোণঠাসা করে ফেলে। এ পরিস্থিতিকে বলা হয় মাৎস্যন্যায়। আমাদের দেশের বর্তমান পরস্থিতি অনেকটা এ পর্যায়ে নেমে এসেছে। পরিস্থিতি পরিবর্তনে প্রথমত মন্দকর্মের স্বীকৃতি দরকার হয়। দেখা যাচ্ছে, আমাদের দেশের সরকার কোনোভাবে তাদের কৃত অন্যায়-অনিয়মের জন্য অনুতপ্ত নয়। ফলে দুষ্কৃতির যে মহাপ্লাবন হচ্ছে তার একটিরও বিশ্বাসযোগ্য তদন্ত নেই। এ পর্যন্ত ব্যাংক খাত থেকে বড় অর্থ লোপাটের একটির হোতাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। অন্যান্য সব খাতে একই ধরনের অবস্থা বিরাজ করছে। মূলত রাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণ চলে গেছে মন্দকর্মের হোতাদের কাছে।
ক্ষমতার সাথে সংশ্লিষ্ট একটি শ্রেণী ব্যতিরেকে চারদিকে অনিশ্চয়তা ও চরম হতাশা বিরাজমান। এরপরও দেশবাসী ঘনঘোর অন্ধকারের পর নতুন বছরে নতুন ভোরের আশা করে। আমরাও আশবাদী হতে চাই। সব ধরনের মন্দের নিশ্চয় অবসান হতে শুরু করবে। কাটবে সব বাধা।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা