২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ন ১৪৩১, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`
নতুন বিদেশী নিষেধাজ্ঞার শঙ্কা

সরকারের সতর্কতা ইতিবাচক

-

বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনীর বিরুদ্ধে নতুন নিষেধাজ্ঞা জারির আশঙ্কা করছে সরকার। সম্ভাব্য সেই নিষেধাজ্ঞা যাতে না আসে সে জন্য বিদেশে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতদের আগে থেকেই সতর্ক থাকা ও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়ার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন গত ৩১ ডিসেম্বর রাষ্ট্রদূতদের চিঠি দিয়ে নিষেধাজ্ঞা ঠেকাতে প্রস্তুত থাকার লক্ষ্যে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বনের পাশাপাশি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য দূতদের প্রতি আহ্বান জানান। চিঠিতে বলা হয়, আমাদের একটি বিশেষায়িত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও তার সিনিয়র কর্মকর্তাদের ওপর একতরফা নিষেধাজ্ঞা এসেছে। সরকার ও তার প্রতিষ্ঠানগুলোর ক্ষতিসাধনের উদ্দেশ্যে সরকারি সংস্থা-ব্যক্তির ওপর একই প্রেক্ষাপটে বা অন্য কারণে আরো নিষেধাজ্ঞা আসতে পারে বলে আমাদের বিশ্বাস করার যথেষ্ট কারণ রয়েছে।
গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব) ও বাহিনীটির সাবেক-বর্তমান সাত কর্মকর্তার ওপর ২০২১ সালের ১০ ডিসেম্বর নিষেধাজ্ঞা দেয় যুক্তরাষ্ট্র। পররাষ্ট্র সচিবের চিঠিতে এটিকে ‘একতরফা নিষেধাজ্ঞা’ বলা হয়েছে। পরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিদেশে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতদের নিয়ে ভার্চুয়াল বৈঠক করেন। সেখানেও তিনি পরিস্থিতি সামাল দিতে রাষ্ট্রদূত, হাইকমিশনার এবং সব মিশন প্রধানকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে সচিব সাত দফা নির্দেশনা দিয়েছেন।
নতুন নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি বেশ কিছু দিন ধরেই আমাদের রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক অঙ্গনে আলোচিত। সরকারের আগাম সতর্কতামূলক পদক্ষেপের খবর প্রকাশ পাওয়ায় বিষয়টি এখন সবার কাছে স্পষ্ট হলো। এখন প্রকাশ্যেই সবাই এ প্রসঙ্গে কথা বলছেন।
তাতে কয়েকটি বিষয় সামনে আসে। বিদেশের নিষেধাজ্ঞা একটি স্বাধীন সার্বভৌম দেশের জন্য কোনোভাবেই সম্মানজনক নয়। সরকারের জন্যও এটি খুবই বিব্রতকর ও অস্বস্তির। তাই সরকারকে এ ধরনের যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবেলায় সতর্কতা নিতেই হবে। আমাদের পররাষ্ট্র দফতর সেটাই করেছে। এটি ইতিবাচক। কিন্তু তাতে কাজের কাজ কতটুকু হবে সেটাই প্রশ্ন। প্রথমত, বাংলাদেশে বিদ্যমান মানবাধিকার পরিস্থিতি ও গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থার চিত্র বিবেচনায় নিতে হবে। মূলত এই দুটি কারণেই যে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা এসেছে তাতে কোনো অস্পষ্টতা নেই। যদি সেই একই পরিস্থিতি দিনের পর দিন বহাল থাকে তাহলে সম্ভাব্য কোনো নিষেধাজ্ঞা কিভাবে রোধ করা যাবে সেটি ভাবার বিষয়।
সরকারের পক্ষ থেকে দেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি যতই ‘সারা বিশ্বে প্রশংসনীয়’ বলা হোক না কেন, বাস্তবতা সেটা বলে না। জাতিসঙ্ঘের মানবাধিকার কমিশনারের সফর ও সুপারিশ, হিউম্যান রাইটস ওয়াচ ও অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থার পক্ষ থেকে এবং ব্রিটেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ অনেক দেশের উদ্বেগ প্রকাশ সরকারের মন্ত্রীদের বক্তব্যের বিপরীত চিত্রই মানুষের সামনে তুলে ধরে।
র‌্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার জন্য সরকারের নানা পদক্ষেপের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত বলেছিলেন, নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে হলে মানবাধিকার রক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় সংস্কার ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে।
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক চুকিয়ে দিয়ে বাংলাদেশের পক্ষে এগোনো কঠিন শুধু নয়, একরকম অসম্ভব। একই কথা ইউরোপীয় ইউনিয়নের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। এসব দেশ কোনো রাষ্ট্রদূতের ব্রিফিং নিয়ে বা কোনো বাংলাদেশীর সরকারবিরোধী প্রচারণায় কান দিয়ে বা কোনো দলের লবিংয়ে বিগলিত হয়ে পররাষ্ট্র বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয় এমন মনে করার কোনো কারণ নেই।
আমাদের সরকারের জন্য সবার আগে যে বিষয়টি বিবেচনায় নেয়া দরকার সেটি হলো গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের বিষয়গুলোতে তারা কোনো নীতি গ্রহণ করবেন। কিছু ইতিবাচক সংস্কারের পথে না এলে সেটা শুধু সরকারের জন্য নয় আমাদের দেশ ও জাতির জন্যও কল্যাণকর হবে বলে মনে হয় না।


আরো সংবাদ



premium cement
কোনো পত্রিকা বন্ধে চাপ প্রয়োগ সহ্য করা হবে না : তথ্য উপদেষ্টা সিলেটে ব্যবসায়ী হত্যায় বাবাসহ ২ ছেলের মৃত্যুদণ্ড ভারতে মসজিদ ভাঙাকে কেন্দ্র করে নিহতের ঘটনায় জামায়াতের প্রতিবাদ গুগল ম্যাপ দেখে গাড়ি চালাতে গিয়ে ব্রিজ থেকে পড়ে নদীতে, নিহত ৩ গাজীপুরে বেক্সিমকো শ্রমিকদের ফের মহাসড়ক অবরোধ ছাত্র সংঘর্ষ ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ভাঙচুরের ঘটনায় জামায়াতের উদ্বেগ মালয়েশিয়া ভ্রমণকারীদের জন্য সুখবর দিলো দেশটির সরকার আইএলও বাংলাদেশকে ৩ মিলিয়ন ইউরো দেবে মাঠে নামার আগেই ইনিংস ঘোষণা বাংলাদেশের একনেকে ৬ হাজার কোটি টাকার ৫ প্রকল্পের অনুমোদন ভোটাধিকার নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব

সকল