স্বাস্থ্য বিভাগ উদাসীন
- ০৮ জানুয়ারি ২০২৩, ০০:০০
রাজধানীসহ সারা দেশে তীব্র শীতের কারণে ঠাণ্ডাজনিত রোগ বাড়তে শুরু করেছে, বিশেষ করে শিশুরা ঠাণ্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে বেশি। রাজধানীর বাংলাদেশ শিশু হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউটে বর্তমানে যত রোগী ভর্তি হচ্ছে, এর বড় অংশ ঠাণ্ডাজনিত সমস্যা নিয়ে। প্রায় সব ওয়ার্ডে এখন ঠাণ্ডাজনিত রোগী ভর্তি করা হচ্ছে। বিশেষায়িত এ হাসপাতালে এত রোগী আসছে যে, সবাইকে শয্যা দেয়া যাচ্ছে না। এটি শুধু রাজধানীর শিশু হাসপাতালের চিত্র নয়, সারা দেশেই এমন অবস্থা বিরাজ করছে বলে গণমাধ্যমের খবরে প্রকাশ।
সরকারিসহ সব হাসপাতালে যত রোগী ভর্তি হচ্ছে, এর বড় অংশ শিশু। নিউমোনিয়া, ব্রঙ্কাইটিস, অ্যাজমা, শ্বাসকষ্ট, ডায়রিয়াসহ শ্বাসতন্ত্রের বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরা। সাধারণ বছরের অন্য সময়ের চেয়ে শীতে শিশুদের শ্বাসকষ্টসহ নিউমোনিয়ার মতো রোগ বেড়ে যায়। দিনে যত রোগী আসছে, এর বড় অংশই ঠাণ্ডাজনিত সমস্যা নিয়ে। হাসপাতালের সব ওয়ার্ডে ঠাণ্ডাজনিত রোগী ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছে। যেসব পরিবারের শিশুদের এসব হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে, তাদের বড় অংশ দরিদ্র। হাসপাতালে ভর্তি রোগীর বেশির ভাগই গ্রাম থেকে আসা। এসব হতদরিদ্র পরিবারের সচেতনতার অভাব রয়েছে।
এবার শিশুরা যে ঠাণ্ডাজনিত রোগে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে তার প্রমাণ মিলে গতকাল সহযোগী একটি দৈনিকের এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা তথ্যে। ওই পত্রিকার তথ্যমতে, গত এক সপ্তাহে বিভিন্ন হাসপাতালে ঠাণ্ডাজনিত রোগের প্রভাবে ৩০টির বেশি শিশুর মৃত্যু হয়েছে।
প্রতি বছরই শীত এলে ঠাণ্ডাজনিত রোগের প্রকোপ বেড়ে যায়। তবে এবার শীতের শুরু থেকে ঠাণ্ডাজনিত রোগে বৃদ্ধ ও শিশুদের আক্রান্ত হওয়ার সংখ্যা আগের তুলনায় বেড়েছে, এ প্রবণতা অব্যাহত রয়েছে। সাধারণত শীতের সময় অন্যান্য রোগীর চাপ কম থাকে, বাড়ে ঠাণ্ডাজনিত রোগী। চলতি শীতে বেশির ভাগ শিশু শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে। তবে ডায়রিয়া আক্রান্ত শিশু রোগীও রয়েছে। এ ধরনের রোগীর বয়স দুই মাস থেকে ছয় মাসের মধ্যে।
অবস্থা এমন যে, সরকারি হাসপাতালের ওয়ার্ডে শয্যাসংখ্যা অপ্রতুল থাকায় চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের অসুবিধায় পড়তে হচ্ছে। হাসপাতালে শয্যার চেয়ে রোগী বেশি হওয়ায় হসপিটালের মেঝে ও বারান্দায়ও চিকিৎসা নিতে হচ্ছে রোগীদের। এ জন্য শিশুদের নিয়ে কষ্ট করছেন স্বজনরা। ফলে ঠাণ্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত শিশুদের কষ্ট বেশি হচ্ছে। সংবাদমাধ্যম থেকে জানা যাচ্ছে, গতবারের চেয়ে এবার শীতের তীব্রতা অনেক বেশি হওয়ায় ঠাণ্ডাজনিত রোগী দ্বিগুণের মতো বেড়েছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, শীতের তীব্রতা বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে শিশু রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। বিশেষ করে নিউমোনিয়া আক্রান্ত শিশু বেশি।
চিকিৎসকরা বলছেন, অভিভাবকদের সচেতনতার অভাবে শিশুরা দ্রুত নিউমোনিয়াসহ ঠাণ্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। তবে তাপমাত্রা হঠাৎ কমে যাওয়ায় শিশুদের ঠাণ্ডাজনিত রোগ বাড়ছে। নিউমোনিয়া, অ্যাজমার পাশাপাশি ইনফ্লুয়েঞ্জার মতো সমস্যা হচ্ছে। তাই শীত থেকে যতটা সম্ভব নিরাপদে রাখতে হবে শিশুদের। এ ক্ষেত্রে গরম কাপড় ব্যবহার ও শিশুদের বাইরে যতটা কম নেয়া যায়, ততই ভালো। ঠাণ্ডার সমস্যা দেখা দেয়ামাত্র চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
আমরা মনে করি, স্বাস্থ্য বিভাগের উদাসীনতাই এর জন্য দায়ী। শীতের শুরুতে ঠাণ্ডাজনিত রোগের চিকিৎসা নিয়ে স্বাস্থ্য বিভাগ সঠিক কর্মপরিকল্পনা হাতে নিত; তা হলে এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হতো না। তবে স্বাস্থ্য বিভাগের কাছে বেশি কিছু আশা করে লাভ নেই। কারণ করোনাকালে দেশের স্বাস্থ্য বিভাগের সক্ষমতার পরিচয় পেয়েছে দেশবাসী। সঙ্গত কারণে ঠাণ্ডাজনিত রোগ থেকে বৃদ্ধ ও শিশুদের মুক্ত রাখতে হলে নাগরিকদের সচেতন হওয়ায় এখনকার বাস্তবতা।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা