২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ন ১৪৩১, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`
রাজধানী ঢাকার ৪৮টি ঝুঁকিপূর্ণ ভবন

বড় দুর্ঘটনার আগেই ব্যবস্থা নিন

-

ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের মালিকানাধীন ৪৮টি ভবন ‘ঝুঁকিপূর্ণ’। তার মানে, এসব ভবন এখন আর বসবাসের উপযোগী নেই। তবু ঝুঁকি নিয়ে এগুলোতে চলছে ব্যবসায় ও বসবাস। এর মধ্যে ৯টি পরিত্যক্ত মার্কেট ভবন রয়েছে; আছে আবাসিক ভবন। তবু দায়িত্বহীনভাবে অবিবেচকের মতো সংস্থা দু’টি নড়বড়ে ভবনে মার্কেট ও দোকান খোলা রেখে ব্যবসায় চালিয়ে যাওয়ার সুযোগ করে দিয়েছে। ব্যবসায়ী ও কর্মচারীদের কাছ থেকে করপোরেশন নিয়মিত ভাড়াও আদায় করছে। অন্যদিকে, ঝুঁকিপূর্ণ আবাসিক ভবনে বসবাসকারী কর্মচারীদের মাসের বেতন থেকে কোয়ার্টার ভাড়া ও ইউটিলিটি বিল ঠিকই কাটছে সংস্থাটি। এমনকি গণবিজ্ঞপ্তি দেয়ার পরও ওই ঝুঁকিপূর্ণ কোয়ার্টারে ফ্ল্যাট বরাদ্দ দেয়ার অভিযোগ রয়েছে।
শুধু তাই নয়, সিটি করপোরেশনের তরফ থেকে ওই সব ভবনের ব্যবসায়ীদের ট্রেড লাইসেন্স দেয়া হয়, নবায়নও করা হয় পুরনো লাইসেন্স। অন্যদিকে চিহ্নিত মার্কেট ও আবাসিক ভবনগুলোতে শুধু ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ নোটিশ টানিয়ে সিটি করপোরেশন দায়িত্ব পালন করেছে। বিপজ্জনক ভবনের তালিকায় রয়েছে তিনটি কমিউনিটি সেন্টার। সেগুলোও ভাড়া দিয়ে রেখেছে সিটি করপোরেশন। আরেকটি ভবনে চলছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের একটি থানার কার্যক্রম।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) ২০২০ সালে ৯টি মার্কেট ভবন ঝুঁকিপূর্ণ চিহ্নিত করে পরিত্যক্ত ঘোষণা করে। আর ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) ২০২২ সালের মার্চ পর্যন্ত ৩৯টি বাণিজ্যিক ভবন ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করলেও ভাঙার কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি।
ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করা মার্কেটগুলোর ভবনের ছাদের পলেস্তারা খসে পড়ে রড বের হয়ে গেছে। জায়গায় জায়গায় লোহার পাইপ দিয়ে ছাদে ঠেস দিয়ে রাখা হয়েছে। আর আবাসিক ভবনগুলো পাকিস্তান আমলে নির্মিত হওয়ায় এগুলো অত্যন্ত জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে। এসব ভবন অনেক আগেই বাস উপযোগিতা হারালেও কর্তৃপক্ষ উদাসীন। বাস্তবতা হলো- ঝুঁকিপূর্ণ এসব ভবন ধসে যেকোনো সময় ঘটতে পারে বড় দুর্ঘটনা। কিন্তু এ বিষয়ে কোনো উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা নেই দুই নগর কর্তৃপক্ষের। সাধারণত দেখা যায়, কোনো বড় দুর্ঘটনার পর সবাই ঝুঁকিপূর্ণ ভবন নিয়ে নানা ধরনের তোড়জোড় শুরু করেন। রাজউক থেকে ভবনের নানা জরিপ শুরু করা হয়। আবার কিছু দিন পর ওই সব কার্যক্রম থেমে যায়।
সিটি করপোরেশন নিজস্ব উদ্যোগে ঝুঁকিপূর্ণ ভবন চিহ্নিত করার পর কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে এর দায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকেই নিতে হবে। এটি এড়ানোর কোনো উপায় নেই। তবু দুই সিটি করপোরেশনের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা মনে করেন, তারা যেহেতু গণবিজ্ঞপ্তি দিয়েছেন, সেহেতু কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে এর দায় থেকে তারা মুক্ত। তাদের মতে, যারা ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে ব্যবসায় পরিচালনা করছেন ও বসবাস করছেন; তারা বিপদ জেনেও সেখানে থাকছেন, তাই সব দায় তাদের।
আমরা মনে করি, কোনো যুক্তিতেই ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন দুর্ঘটনার দায়মুক্তি পেতে পারে না। কর্তৃপক্ষ হিসেবে সংস্থাটির দায়িত্ব-কর্তব্য রয়েছে। নগরবাসীকে সেবা দেয়াই সিটি করপোরেশনের কাজ। সঙ্গত কারণে যেকোনো বড় দুর্ঘটনা এড়াতে দ্রুত ভবনগুলো খালি করে ভেঙে ফেলতে হবে। না হলে যেকোনো সময় বড় ধরনের প্রাণহানির আশঙ্কা রয়েছে। স্মরণ করা যেতে পারে, ১৯৮৫ সালের ১৫ অক্টোবর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হলের একটি আবাসিক ভবনের ছাদ ধসে পড়লে সংঘটিত হয় মর্মান্তিক দুর্ঘটনা। এতে প্রাণ হারান ৩৯ জন ছাত্র, কর্মচারী ও অতিথি। বিশ্বের কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে দুর্ঘটনায় এত সংখ্যক শিক্ষার্থী হতাহতের ঘটনা এর আগে ঘটেছে কি না আমাদের জানা নেই। তাই আমাদের দেশে আর যেন কখনো কোথাও এমন মর্মান্তিক ঘটনা না ঘটে, সেই প্রত্যাশা সবার।


আরো সংবাদ



premium cement
৭ উইকেট তুলে নিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে চেপে ধরেছে বাংলাদেশ লাখ টাকার প্রলোভনে শাহবাগে এত লোক কিভাবে এলো? কেরানীগঞ্জে কেন্দ্রীয় কারাগারে কয়েদির মৃত্যু হিজবুল্লাহ কমান্ড সেন্টারে ইসরাইলি হামলা রাজশাহীতে প্রথম আলো পত্রিকায় আগুন ও সাইনবোর্ড ভাঙচুর রোহিঙ্গাদের আশ্রয়স্থলের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে : পররাষ্ট্র সচিব আড়াইহাজারে ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ, আহত ১৬ শ্রম সংস্কারে অন্তর্বর্তী সরকারের অগ্রগতিতে মার্কিন প্রতিনিধিদলের প্রশংসা আইপিএলে রেকর্ড গড়লেন ১৩ বছর বয়সী বৈভব সিলেটে ট্রাক ও বাসচাপায় নিহত ২ মানিকগঞ্জে প্রলোভন দেখিয়ে শাহাবাগে লোক নেয়ার মূলহোতা দবিরসহ আটক ৫

সকল