২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`
দেশে জেঁকে বসেছে তীব্র শীত

ভোগান্তিতে ছিন্নমূল মানুষ

-

তীব্র শীতে কাঁপছে দেশ। ঘন কুয়াশায় ঢাকা পড়ছে সূর্য। শৈত্যপ্রবাহ (১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে তাপমাত্রা) না থাকলেও হিমেল হাওয়ায় বিপর্যস্ত মানুষজন। সকালের দিকে বৃষ্টির মতো কুয়াশা পড়ার দৃশ্যও দেখা যাচ্ছে। নদী-তীরবর্তী এলাকায় কোথাও কোথাও দৃষ্টিসীমা ১০ গজে নেমে এসেছে। এতে সব ধরনের যানবাহন স্বাভাবিক গতিতে চলতে পারছে না।
কুয়াশায় গত কয়েক দিন থেকে দেশের বেশির ভাগ অঞ্চলে সূর্যের আলো মাটিতে পড়তে পারছে না। ঘন কুয়াশা সৃষ্টি হওয়ার কারণ হিসেবে আবহাওয়াবিদরা বলছেন, সূর্য অস্ত যাওয়ার পর বাতাস ঠাণ্ডা হয়ে গেলে বায়ুতে অবস্থিত জলীয়বাষ্প আগে থেকে বিরাজমান ধূলিকণা ও বাতাসে ভাসমান ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র অন্যান্য বস্তুকণা ঘনীভূত হয়ে কুয়াশার সৃষ্টি করছে। এ ছাড়া দেশের বাইরে থেকে ঠাণ্ডা বাতাসের সাথে ঘন কুয়াশা আসাও অব্যাহত রয়েছে। সূর্য থেকে আসা তাপমাত্রার পুরোটা শোষণ করে নিচ্ছে ঘন কুয়াশা। ফলে উচ্চ তাপমাত্রা কাক্সিক্ষত পর্যায়ে বাড়তে পারছে না।
আবহাওয়া অফিসের তথ্য, গত বুধবার দেশের সর্বনিন্ম তাপমাত্রা ছিল শ্রীমঙ্গলে ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সর্বোচ্চ ছিল টেকনাফে ২৮ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। শ্রীমঙ্গল ছাড়া দেশের অন্যান্য নিন্ম তাপমাত্রার অঞ্চলগুলোতে তাপমাত্রা ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কাছাকাছি ছিল।
চট্টগ্রাম বিভাগ ছাড়া দেশের সর্বত্র উচ্চ তাপমাত্রার সাথে নিন্ম তাপমাত্রার ব্যবধান খুব কম। পর্যাপ্ত সূর্যতাপ পাওয়া যাচ্ছে না বলে সারা দেশে বেশ শীত অনুভূত হচ্ছে। উচ্চ তাপমাত্রা থেকে নিন্ম তাপমাত্রার ব্যবধান রাজধানী ঢাকাতে সবচেয়ে কম। গত বুধবার ঢাকায় এ যাবৎকালের মধ্যে সবচেয়ে তীব্র শীত অনুভূত হয়। ওই দিন ঢাকার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ১৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস, সর্বনিন্ম ছিল ১৪ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। শুধু রাজধানী নয়, ঢাকা বিভাগের সব অঞ্চলে গত বুধবার উচ্চ ও নিন্ম তাপমাত্রার মধ্যে ব্যবধান ছিল খুব কম।
এই যখন অবস্থা, তখন সারা দেশে কয়েক দিনের তীব্র শীতে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়েছেন ছিন্নমূল মানুষ। শিশু ও বৃদ্ধরাও শীতে কাবু হয়ে পড়েছেন। খেটে খাওয়া, ছিন্নমূল ও নিম্ন আয়ের মানুষের ভোগান্তির যেন শেষ নেই। শীতের তীব্রতায় অনেকে খুব বেশি প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বাইরে বের হচ্ছেন না। ছিন্নমূল মানুষ স্কুল-কলেজ ও মসজিদের বারান্দায় অতিকষ্টে রাত যাপন করছেন। অনেকে খড় ও কাঠে আগুন জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন।
তীব্র শীতে দিন এনে দিন খাওয়া মানুষ এক দিকে গরম কাপড়ের অভাবে কষ্ট পাচ্ছেন; অন্য দিকে কাজ করা অসহনীয় হয়ে পড়েছে তাদের জন্য। তাদের টিকে থাকা দায় হয়ে উঠেছে। প্রচণ্ড ঠাণ্ডায় তারা নির্ঘুম রাত শেষে দিনে একটু উষ্ণতার আশায় থাকলেও মিলছে না সূর্যের দেখা। শীতের কারণে তাদের কাছে রাত যেন একটা ভয়ঙ্কর সময়। দিনে কাজে ব্যস্ত থাকায় ঠাণ্ডা তবু সহ্য হয়। কিন্তু সন্ধ্যা নামার সাথে সাথে শীতের তীব্রতা বাড়ছে। মধ্যরাতের পর মনে হয় যেন বরফ গলে ঠাণ্ডা নামছে। এ জন্য ঘুম তো দূরে থাক, আগুন জ্বালিয়েও শীত বিবারণ কঠিন হয়ে পড়ছে। তাই সন্ধ্যার সাথে সাথে ছিন্নমূল মানুষ রাতে আগুন জ্বালানোর উপকরণ সংগ্রহ করতে ব্যস্ত হয়ে পড়ছেন। মধ্যরাত থেকে আগুন পোহানোর মাধ্যমে সকাল গড়ায় তাদের। সারা দিন কঠোর পরিশ্রমের পর সন্ধ্যায় ক্লান্তিতে যখন শরীর ভেঙে আসছে তাদের; তখনো ঘুমানোর উপায় নেই। ঠাণ্ডা আর হিমেল হাওয়ায় ঘুমের পরিবর্তে রাত জেগে উষ্ণতার সন্ধান করতে হচ্ছে অসহায় এসব মানুষকে।
এক সময় শীতে সরকারি পর্যায়ের সাথে বেসরকারি এবং ব্যক্তি উদ্যোগে অভাবীদের মধ্যে গরম কাপড় বিতরণ করা হতো। কিন্তু গত কয়েক বছর ধরে বেসরকারি উদ্যোগে ভাটা পড়েছে। এমতাবস্থায় জীবনযুদ্ধের সাথে শীত নিবারণের সংগ্রামে ছিন্নমূল মানুষ এখন ভীষণ ক্লান্ত। অথচ তাদের জন্য শীতবস্ত্র এবং নগদ অর্থ সহায়তা করা জরুরি হয়ে পড়েছে।


আরো সংবাদ



premium cement
কোনো পত্রিকা বন্ধে চাপ প্রয়োগ সহ্য করা হবে না : তথ্য উপদেষ্টা সিলেটে ব্যবসায়ী হত্যায় বাবাসহ ২ ছেলের মৃত্যুদণ্ড ভারতে মসজিদ ভাঙাকে কেন্দ্র করে নিহতের ঘটনায় জামায়াতের প্রতিবাদ গুগল ম্যাপ দেখে গাড়ি চালাতে গিয়ে ব্রিজ থেকে পড়ে নদীতে, নিহত ৩ গাজীপুরে বেক্সিমকো শ্রমিকদের ফের মহাসড়ক অবরোধ ছাত্র সংঘর্ষ ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ভাঙচুরের ঘটনায় জামায়াতের উদ্বেগ মালয়েশিয়া ভ্রমণকারীদের জন্য সুখবর দিলো দেশটির সরকার আইএলও বাংলাদেশকে ৩ মিলিয়ন ইউরো দেবে মাঠে নামার আগেই ইনিংস ঘোষণা বাংলাদেশের একনেকে ৬ হাজার কোটি টাকার ৫ প্রকল্পের অনুমোদন ভোটাধিকার নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব

সকল