২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ন ১৪৩১, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`
গত বছরও মানবাধিকারের উন্নত হয়নি

আগের নীতিতেই বহাল সরকার

-


বাংলাদেশে মানবাধিকার পরিস্থিতির অবনতি বিগত বছরেও অব্যাহত থাকার খবর দিয়েছে মানবাধিকার সংস্থা। বর্তমান সরকারের আমলে গুম ও বিচারবহির্ভূত হত্যার সীমা ছাড়ানো বিস্তারে কিছুুটা লাগাম টানা গেলেও সার্বিক পরিস্থিতির এখনো উন্নতি হয়নি। এমনকি সরাসরি মানবাধিকার সংস্থাও সরকারি খড়গের শঙ্কায় রয়েছে। ঘটে যাওয়া মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনাগুলোর বিহিত হওয়ার বদলে মানবাধিকার সংস্থার চাপে পড়াকে পরিস্থিতির উন্নতি কোনোভাবে বলা যাবে না। এ ছাড়া রাজনৈতিক দমন-পীড়ন ও সার্বিক মানবাধিকার পরিস্থিতি অনেক ক্ষেত্রে গত বছরে আগের চেয়ে অবনতি হয়েছে বলেই মনে হয়।
২০২২ সালের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক) বছরের শেষ দিন সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে। সংস্থাটি দেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি বিভীষিকাময় বলে মন্তব্য করেছে। বাংলাদেশের গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘন নিয়ে দেশ-বিদেশে যে প্রশ্ন উত্থাপিত হয়েছে; সে দিকে ভ্রুক্ষেপ করেনি সরকার। জাতিসঙ্ঘ মানবাধিকার গ্রুপসহ আন্তর্জাতিক দেশীয় মানবাধিকার সংস্থা পরামর্শ দিয়েছিল গুম ও বিচারবহির্ভূত হত্যার বিষয়ে নিরপেক্ষ তদন্ত কমিশন গঠন করতে। বিচার বিভাগীয় এ কমিশন চিহ্নিত করবে এ তৎপরতার সাথে কারা জড়িত। তারপর রয়েছে তাদের আইনের আওতায় আনা ও স্বচ্ছ বিচারপ্রক্রিয়া অনুসরণের বাধ্যবাধকতা। বাস্তবে গত বছরেও ১৯ জন বিচারবহির্ভূত হত্যার শিকার হন। এর মধ্যে নিষেধাজ্ঞাপ্রাপ্ত র‌্যাব চারটি ও অন্যান্য আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর হেফাজতে থাকা অবস্থায় ১৫ জন নিহত হয়েছেন। অপহরণ, গুম ও নিখোঁজ হয়েছেন পাঁচজন।
আসকের পক্ষ থেকে বলা হয়, গোপন যে ব্যবস্থা রয়েছে; ডিটেনশন সেন্টার কিংবা ইন্টারগেশনের জন্য যেসব জায়গা রয়েছে সেগুলো বন্ধ করা উচিত। আমাদের আইন ও সংবিধান এগুলো সমর্থন করে না। যারা এগুলো পরিচালনা করেন তাদের চিহ্নিত করা উচিত। আসকের পক্ষ থেকে আরো দাবি করা হয়, গুমের ঘটনা সঠিকভাবে সংবাদমাধ্যমে আসছে না। জাতিসঙ্ঘ গুমের যে তালিকা দিয়েছে তাদের ব্যাপারে কোনো অগ্রগতি দেখা যায়নি। আসকের পক্ষ থেকে প্রতিটি বিচারবহির্র্ভূত হত্যার ঘটনার তদন্ত চাওয়া হয়। সংস্থাটির দাবি, এ ধরনের ঘটনার তদন্তে দেখা গেছে- সেটি কিছুটা অগ্রসর হয়ে থেমে যায়। তাই প্রতিটি ঘটনার স্বাধীন তদন্ত হওয়া দরকার।


সংবাদ সম্মেলন থেকে রাজনৈতিক অধিকার ও সার্বিক মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়েও প্রশ্ন তোলা হয়। বলা হয়, গণতন্ত্র সঙ্কুচিত হওয়ায় মানবাধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে। রাজনৈতিক অধিকার হরণের বিষয়ে পর্যবেক্ষণ তুলে ধরা হয়। বিদায়ী বছরে সারা দেশে ৪৭৯টি রাজনৈতিক সহিসংতার ঘটনা ঘটে। এসব ঘটনায় ৭০ জন নিহত ও ছয় হাজার ৯১৪ জন আহত হয়েছেন। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা হয়েছে দুই হাজার ২৪৯টি। সামাজিক জীবনেও চরম অস্থিরতা বিরাজ করেছে। রাজনৈতিক শূন্যতা ও সরকারি ব্যবস্থাপনার ত্রুটি থেকে মানবাধিকার লঙ্ঘনজনিত ঘটনা যেভাবে বেড়েছে, তা বুঝতে অসুবিধা হয় না। এ বছর নারী নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে এক হাজার ৬৯৪টি, খুন হয়েছেন ১২৬ নারী, শিশু নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে এক হাজার ৪৫টি এবং এসব ঘটনায় ৪৭৪টি শিশু নিহত হয়েছে। গণপিটুনিতে মারা গেছেন ৩৬ জন।
আসকের প্রতিবেদনে বলা হয়, বিদায়ী বছর মানবাধিকার সংস্থাগুলোর ওপর খড়গ নেমে আসে। অধিকার নামের একটি মানবাধিকার সংস্থার নিবন্ধন বাতিল করা হয়েছে। এতে সরকারের মানবাধিকার নীতির অবস্থা অনুমান করা যায়। দেশ-বিদেশে উত্থাপিত মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ সুরাহা করতে সরকার আগ্রহী নয়; বরং যারা দেশে মানবাধিকার নিয়ে কাজ করেন তাদের নিয়ন্ত্রণ করার কৌশল নিয়েছে। এতে করে সরকারের ভাবমর্যাদা উদ্ধার হবে না; বরং রাজনৈতিক পরিবেশের সাথে এখন সামাজিক পরিস্থিতিরও অবনতি ঘটবে।
আমরা মনে করি, মানবাধিকার-বিষয়ক সরকারের নীতি সঠিক নয়। এই নীতির পরিবর্তন করে মানবাধিকার লঙ্ঘন শূন্যে নামিয়ে আনতে হবে। পাশাপাশি পুরনো প্রতিটি ঘটনার তদন্ত ও বিচারপ্রক্রিয়া এগিয়ে নিতে হবে।

 

 


আরো সংবাদ



premium cement
মধ্যাহ্নভোজের আগে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ৩ উইকেট তুলে নিলো বাংলাদেশ সেন্টমার্টিনে পর্যটকবাহী জাহাজ চলবে কুমিল্লায় ট্রেনে কাটা পড়ে নারীর নিহত জামায়াতের সাথে ইইউ অন্তর্ভূক্ত ৮টি দেশের প্রতিনিধিদের বৈঠক মনিরামপুরে শ্রমিক দলের সভাপতির উপর হামলা ‘যৌক্তিক সময়ের মধ্যে সুষ্ঠু নির্বাচন চায় বিএনপি’ দেশব্যাপী দীর্ঘস্থায়ী শ্বাসজনিত রোগে ভুগছে ৬৫ লাখ মানুষ গ্রেড-১ এ পদোন্নতি পেলেন প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের ডিজি ডা. রেয়াজুল হক ‘বড় কোনো পরিকল্পনা না থাকলে এক দিনে এতগুলো ঘটনা ঘটতো না’ জুলুমের দায়ে মতিউর রহমান ও মাহফুজ আনামকে পদত্যাগ করতে হবে : হেফাজত আমির স্বর্ণের দাম ভরিতে ১,৮৯০ টাকা কমেছে

সকল