বয়ে আনুক সুখের বারতা
- ০১ জানুয়ারি ২০২৩, ০০:০৫
আজ ২০২৩ সালের প্রথম দিন। জাতীয় জীবনে বিশৃঙ্খলা, অনিয়ম ও হতাশার মধ্যে ইংরেজি নতুন বছর শুরু হলো। তবে অন্ধকার যত গভীর হয়; আলোপ্রাপ্তির সময়ও তত নিকটবর্তী হয়। বিগত বছরগুলো একের পর এক গাঢ় অন্ধকারে ঠেকে গেলেও নতুন বছরটি সেই সম্ভাবনার দ্বার কি খুলতে পারবে? বিগত দিনের গ্লানি মুছে উজ্জ্বল দিনের যাত্রা শুরুর প্রত্যাশায় উদগ্রীব পুরো জাতি, যেখানে অনিয়ম বিশৃঙ্খলা ঘুচতে শুরু করবে। মানুষ সুন্দরের নাগাল পাবে। আত্মসমালোচনা করে নতুন উদ্যম নিতে পারলে হতে পারে বছরটি চলতি শতাব্দীতে বাংলাদেশের জন্য শুভযাত্রার পথরেখা।
বিদায়ী বছরে দেশে সাধারণ মানুষের প্রধান সঙ্কট ছিল নিত্যপণ্যের আকাশছোঁয়া দাম। এতে সাধারণ মানুষের জীবন হয়ে ওঠে দুর্বিষহ। গত বছর অর্থনৈতিক মন্দায় সাধারণ মানুষের জীবনে নেমে আসে চরম ভোগান্তি। এ অবস্থা এখনো বিদ্যমান। এ ক্ষেত্রে রাষ্ট্র নাগরিকদের যথাযথ সাহায্য-সহায়তা নিশ্চিত করতে পারেনি। একই সাথে দেখা গেছে, গত বছরও ভিন্নমতের প্রতি ক্ষমতাসীনরা অসহিষ্ণু ছিল। নিপীড়িতরা প্রশাসনিক ব্যবস্থার অনুদার ও উদাসীন আচরণে বঞ্চনার শিকার হয়েছে। গত বছরও পুলিশের ‘গায়েবি’ মামলায় বিরোধী দলের অনেক নেতাকর্মী আদালতপাড়ায় জামিনের জন্য ভিড় জমিয়েছেন। তবে অনেকে পাননি ফরিয়াদের জবাব। আবার বহু মানুষ অন্যায়-অনিয়ম করে অন্যের অধিকার ভূলুণ্ঠিত করেও বিচারের মুখোমুখি হয়নি। এমন বহু উদাহরণ দেয়া যাবে; যারা আইন ভঙ্গকারী, দুর্নীতিবাজ তারা বুক চিতিয়ে সমাজে চলছে। বিপরীতে অন্যায় না করেও অনেকে আইনের গ্যাঁড়াকলে পড়েছেন। আগত বছরটিতে আমরা আশা করব পুরনো অন্যায় বদলাতে শুরু করবে।
ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে লুণ্ঠনের সংস্কৃতি গত বছরও পুরোমাত্রায় বিদ্যমান ছিল। অভিনব সব লুটপাট সবাইকে হতবাক করে দিয়েছে। বিশেষ করে যখন ফাঁস হয়, একেকটি কেলেঙ্কারিতে হাজার কোটি টাকা গায়েব হয়েছে। দেখা গেছে, দেশের বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে লোপাট করে বিদেশে পাড়ি জমিয়েছেন অনেকে। এমন দুর্ভাগ্যজনক ঘটনায় দেশের ভেতরের যে প্রশাসনিক কাঠামো যারা লুণ্ঠনকারীদের বাধা দেবে, তাদের কোনো একটি অংশ এতে সহযোগিতা করছে। ফলে দুর্বৃত্তরা সহজে জনগণের অর্থ আত্মসাৎ করে নিরাপদে কেটে পড়ছে। অন্য দিকে উন্নয়নের নামে দুর্নীতির চিত্রটি সারা দেশে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ পেয়েছে। সাথে সরকারি প্রতিষ্ঠানের দুর্নীতির যে নতুন মাত্রা বিগত বছরে দেখা গেছে; তা টেনে ধরতে পারলে নতুন বছরে আর্থিক খাতে ভালো কিছুর শুরু হতে পারে।
রাষ্ট্র যদি শুভ কাজের পৃষ্ঠপোষকতা করে; সে দেশে নিয়মশৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠিত হয়- অরাজকতা কমে আসে। যদি রাষ্ট্রীয় পর্যায় থেকে মন্দের আশকারা দেয়া হয়, ঘটে এর ঠিক বিপরীত। আর সীমা অতিক্রম করলে দেখা দেয় চরম বিশৃঙ্খলা। ক্ষমতার উৎস নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে ক্ষমতাসীনরা দুর্বলদের কোণঠাসা করে ফেলে। এ পরিস্থিতিকে বলা হয় মাৎস্যন্যায়। আমাদের দেশের বর্তমান পরস্থিতি অনেকটা এ পর্যায়ে নেমে এসেছে। এসব বিষয় বিবেচনায় নিয়ে সবার মতো আমাদের প্রত্যাশা, নতুন বছরের প্রথম দিন থেকে সবার জীবনে শুভ সূচনা হোক। অধঃপাতের যে সীমায় আমরা এসে পৌঁছেছি; এখান থেকে শুরু হোক ভালোর দিকে যাত্রা। আশা করা যায়, সংশ্লিষ্টদের মধ্যে শুভবুদ্ধির উদয় হবে। বিগত এক যুগে আমরা যে অনিয়মের চর্চা করেছি- এ বছর শুরু হবে নিয়ম ও শৃঙ্খলার চর্চা।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা