২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ন ১৪৩১, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`
বেড়িবাঁধের মাটি লুট অবাধে

তা হলে বাঁধের কী গুরুত্ব?

-

দৈনিক নয়া দিগন্তের সাতক্ষীরা সংবাদদাতা এক প্রতিবেদনে জানান, সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার মরিচ্চাপ নদীর বেড়িবাঁধ কেটে মাটি লুট করছে একটি প্রভাবশালী মহল। ফলে অস্তিত্ব সঙ্কটে পড়েছে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বেড়িবাঁধ। এখান থেকে মাটি কেটে ডাম্পার ও ট্রাকে করে নিয়ে জমি ভরাট করা হচ্ছে। এতে একদিকে যেমন সরকারি টাকায় খননকৃত নদীর বাঁধ ধ্বংস হচ্ছে, অন্যদিকে ফসলি জমি ভরাট হওয়ায় মারাত্মক পরিবেশ বিপর্যয়ের আশঙ্কা করছেন এলাকাবাসী।
ডাম্পার গাড়িতে মাটি বোঝাই করে নিয়ে যাওয়ার কারণে ক্ষতি হচ্ছে পাকা রাস্তার। ডাম্পার থেকে রাস্তার ওপর মাটি ছড়িয়ে পড়ার কারণে প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনা, বিনষ্ট হচ্ছে পিচের রাস্তা। নদীর দুই পাড়ের মানুষ ভুগছেন প্লাবন আতঙ্কে।
উপজেলা যুবলীগ নেতা কাইফু বলেন, সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) বিভাগ-১-এর মাধ্যমে আশাশুনি উপজেলার শোভনালী ও বুধহাটা ইউনিয়নের মরিচ্চাপ নদী খনন করা হচ্ছে। আর সে মাটি দেয়া হচ্ছে বেড়িবাঁধে। কিন্তু সদর উপজেলার ফিংড়ি এলাকার আক্তারুল ইসলাম বাঁধে দেয়া ওই মাটি ডাম্পার ভর্তি করে গাড়িপ্রতি ৮০০ টাকায় বিক্রি করেছেন। সদ্য খননকৃত মরিচ্চাপ নদীর সেই বেড়িবাঁধ কেটে মাটি বিক্রি করায় এ বাঁধ সরু হয়ে যাচ্ছে।
কাইফু অরো বলেন, ডাম্পার গাড়িতে করে ওই মাটি বহনের সময় বুধহাটা ইউনিয়নের কোনো কোনো এলাকায় এলজিইডির সদ্য নির্মিত কার্পেটিং রাস্তায় ছড়িয়ে পড়ে পিচ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, মাটি পড়ে রাস্তা পিচ্ছিল হয়ে প্রতিনিয়ত ঘটছে সড়ক দুর্ঘটনা। এ ছাড়া মরিচ্চাপ নদী থেকে এই মাটি নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় জলাশয় ভরাট করছে কিছু ব্যক্তি যা সম্পূর্ণ বেআইনি। এভাবে বেআইনি মাটি কাটা চলতে থাকলে মরিচ্চাপ নদীর খননকাজ শেষ হওয়ার আগেই বাঁধ নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে। জোয়ার-ভাটায় পানি ওঠানামা শুরু করলে বুধহাটা ও শোভনালী ইউনিয়নের অসংখ্য গ্রাম প্লাবিত হবে। তখন লবণপানি প্রবেশ করলে অপূরণীয় ক্ষতি হবে ফসলের।
এলাকাবাসীর উদ্ধৃতি দিয়ে কাইফু বলেন, বর্তমানে মাটি নিচ্ছেন পাইথালী ও গাজীর মাঠের দুই ব্যক্তি। তারা বলেন, আমরা আক্তারুল ইসলামের কাছ থেকে ডাম্পার-প্রতি ৮০০ টাকা করে মাটি কিনছি।
আশাশুনি উপজেলার রাসেল বলেন, মরিচ্চাপ নদীর খননকাজ এখনো শেষ হয়নি। এভাবে বেড়িবাঁধের মাটি সরিয়ে নিলে, খননকাজের পর পানি ছেড়ে দিলে জোয়ারের পানিতে ভেসে যাবে বুধহাটা ও শোভনালী ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ এলাকা। কেননা দীর্ঘ দিন পর নদী খনন করা হচ্ছে; পরে সে মাটি দিয়ে বেড়িবাঁধ নির্মাণ করা হয়েছে। কিন্তু বেড়িবাঁধের মাটি এভাবে কেটে নেয়ায় এলাকাবাসীর সর্বনাশ হচ্ছে। সরকারি কোটি কোটি টাকার এমন একটি প্রকল্প এলাকাবাসীর কোনো উপকারে আসবে না বলে মন্তব্য করেন তিনি।
এ ছাড়া বড় বড় ডাম্পার বোঝাই করা মাটি গ্রামের ভেতর দিয়ে এলজিইডির পিচের রাস্তায় পরিবহনের কারণে সড়কটি ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
বুধহাটা ইউপি চেয়ারম্যান অধ্যাপক মাহবুবুল হক ডাবলু বলেন, বেড়িবাঁধের মাটি এভাবে নিয়ে যাওয়া বা বিক্রি করা সম্পূর্ণ আইনবহির্ভূত কাজ। খননকৃত নদীর বাঁধের মাটি কাটলে তাতে এলাকাবাসীর উপকারের পরিবর্তে অপকার হবে। তাই বাঁধ রক্ষায় সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। যেকোনোভাবে এটি বন্ধ করতে হবে।
এ ব্যাপারে আশাশুনি উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান অসীম চক্রবর্তী বলেন, ‘মরিচ্চাপ নদীর বেড়িবাঁধ কেটে মাটি কাটার খবর শুনে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাকে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য বলছি। এ ছাড়া নিজেই সরেজমিন যাবো ও এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবো।’
সাতক্ষীরা পাউবো বিভাগ-১-এর নির্বাহী প্রকৌশলী নদীর বাঁধ কেটে মাটি বিক্রির ঘটনায় স্থানীয়দের থানায় অভিযোগ করার পরামর্শ দিয়েছেন।
এ ব্যাপারে আক্তারুল ইসলামের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তার সহযোগী ফোন রিসিভ করে বলেন, ‘সাহেব বিজি আছেন, পরে কথা বলুন’।


আরো সংবাদ



premium cement
মধ্যাহ্নভোজের আগে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ৩ উইকেট তুলে নিলো বাংলাদেশ সেন্টমার্টিনে পর্যটকবাহী জাহাজ চলবে কুমিল্লায় ট্রেনে কাটা পড়ে নারীর নিহত জামায়াতের সাথে ইইউ অন্তর্ভূক্ত ৮টি দেশের প্রতিনিধিদের বৈঠক মনিরামপুরে শ্রমিক দলের সভাপতির উপর হামলা ‘যৌক্তিক সময়ের মধ্যে সুষ্ঠু নির্বাচন চায় বিএনপি’ দেশব্যাপী দীর্ঘস্থায়ী শ্বাসজনিত রোগে ভুগছে ৬৫ লাখ মানুষ গ্রেড-১ এ পদোন্নতি পেলেন প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের ডিজি ডা. রেয়াজুল হক ‘বড় কোনো পরিকল্পনা না থাকলে এক দিনে এতগুলো ঘটনা ঘটতো না’ জুলুমের দায়ে মতিউর রহমান ও মাহফুজ আনামকে পদত্যাগ করতে হবে : হেফাজত আমির স্বর্ণের দাম ভরিতে ১,৮৯০ টাকা কমেছে

সকল