২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ন ১৪৩১, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`
গ্রামে হচ্ছে শিল্পপার্ক

কৃষির গুরুত্ব আগে

-

বাংলাদেশ কৃষিপ্রধান অর্থনীতির দেশ হিসেবে পরিচিত। তবে প্রকৃত অর্থনৈতিক চিত্র অনুযায়ী কৃষির অবদান সেবা ও শিল্প খাতের বেশ পেছনে। জাতীয় অর্থনীতিতে সেবা খাত ৫২ শতাংশের বেশি, শিল্প ৩৫ শতাংশের বেশি ও কৃষি খাত ১৪ শতাংশের কম অবদান রাখছে। কৃষিপ্রধান থেকে আমাদের শিল্পপ্রধান দেশ হিসেবেও উত্তরণ ঘটেনি। পরিসংখ্যান সেটি স্পষ্ট করে প্রকাশ করছে। কৃষি ও শিল্পকে পেছনে ফেলে সেবা খাতের বিপুল অগ্রগতির মূল কারণ প্রবাসী আয়ের ওপর নির্ভরশীলতা। এটি একটি টেকসই অর্থনীতির লক্ষণ নয়।
কিছু উদ্যোগ শিল্প খাতের সম্ভাবনা সৃষ্টি করলেও তা কতটা টেকসই হবে এ নিয়ে দ্বিধা রয়েছে। একটি সহযোগী দৈনিকের এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে বাংলাদেশ বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল (বিএসইজেড) ১৭টি গ্রাম নিয়ে একটি প্রকল্প গ্রহণ করে। ঢাকা-সিলেট মহসড়কের পাশে অবস্থিত এলাকাটি ছিল অনগ্রসর। এখানে বিস্তীর্ণ এলাকা ছিল জলাশয়। ১২ মাস পানি জমে থাকায় কৃষকরা কোনো ফসল ফলাতে পারতেন না। এলাকায় বেকারত্ব লেগে থাকত। বেশির ভাগ মানুষ দরিদ্র ও পশ্চাৎপদ। প্রকল্পের আওতায় সরকার দুই হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে এক হাজার ৮০০ বিঘা জমি অধিগ্রহণ করে। কৃষকরা জমির দাম বুঝে পাওয়ায় প্রাথমিকভাবে তাদের অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নয়ন হয়। প্রকল্পের মূল অবকাঠামো গড়ে উঠলে এটি প্রকৃত অর্থনৈতিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে। এর দ্বারা দেশ উপকৃত হবে। এর মধ্যে প্রকল্পের কাজের ৮৫ শতাংশ সম্পন্ন হয়েছে। বিনিয়োগকারীদের কাছে হস্তান্তরের জন্য তৈরি হয়েছে প্রায় ৫০০ বিঘা জায়গা।


এ প্রকল্পের ২৪ শতাংশ মালিকানা বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের (বেজা)। বাকিটা জাপানি প্রতিষ্ঠান সুমিতোমো ও জাইকার। ভূমির অবকাঠমো উন্নয়নে আড়াই হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছে জাইকা। ৪০টি কোম্পানি এ প্রকল্প এলাকায় বিনিয়োগ করার আগ্রহ দেখিয়েছে। এর মধ্যে জাপান ছাড়াও বিনিয়োগ শুরু করেছে জার্মানির রুডলফ ও তুরস্কভিত্তিক একটি কোম্পানি। এটি একটি শিল্পপার্ক হবে। এতে ওষুধ, গাড়ি ও ইলেকট্রনিক সামগ্রী উৎপাদিত হবে। এ পার্কের বিশেষত্ব হলো- এটি হবে পরিবেশবান্ধব। বোঝাই যাচ্ছে, কোম্পানিগুলো উৎপাদনে গেলে এখানে স্থানীয় মানুষের কর্মসংস্থান হবে, যারা এতদিন চাষাবাদের উপযোগী জমি না থাকায় বেকার ছিলেন। পাশাপাশি এসব শিল্পপণ্য বিদেশে রফতানি শুরু হলে তা বাংলাদেশের বাণিজ্যে অবদান রাখবে। নতুন শিল্পনীতিতে জাতীয় উৎপাদনে শিল্পের অবদান ৪০ শতাংশে উন্নীত করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। সরকার সারা দেশে আরো বেশ কয়েকটি শিল্পাঞ্চল গড়ে তোলার উদ্যোগ নিয়েছে। এগুলোর বেশির ভাগ এখন বাস্তবায়নের পর্যায়ে রয়েছে। নির্মাণকাজ শেষ হয়ে ওই সব এলাকায় শিল্প উৎপাদন শুরু হলে লক্ষ্যমাত্রা অর্জন হয়তো সম্ভব হতে পারে।


সেবা খাত অর্থনৈতিক অবদান রাখার ক্ষেত্রে বড় ব্যবধানে এগিয়ে রয়েছে স্বাস্থ্য, শিক্ষা, রিয়েল এস্টেট ও ব্যাংক খাতের কারণে। এর সাথে রয়েছে বিদ্যুৎ, গ্যাস, পানি সরবরাহ। প্রবাসী আয় কমে গেলে এসব খাতের বেশির ভাগ গতি হারাবে। বড় ধরনের বৈশ্বিক মন্দায় এমনটি ঘটার উচ্চ ঝুঁকি রয়েছে। আমাদের দেশের মূল মেরুদণ্ড কৃষি খাত। এটিকে প্রণোদনা দিয়ে এগিয়ে নিতে হবে। উন্নত দেশগুলো কৃষিকে সবার আগে সংরক্ষণ করেছে। কৃষিভিত্তিক দেশ হওয়ার পরও আমরা তা পারিনি। অর্থনৈতিক বিশেষ অঞ্চল গড়ার উদ্যোগ ইতিবাচক। এখনো সেটি বাংলাদেশের অর্থনীতিকে শক্ত ভিতের ওপর দাঁড় করানোর পর্যায়ে আসেনি। তার ওপর কৃষিকে পাশ কাটিয়ে এভাবে শিল্পায়নের পথ টেকসই না-ও হতে পারে। তবে অনুর্বর পরিত্যক্ত ভূমি আমরা শিল্পায়নে ব্যবহার করতে পারি। উর্বর ভূমি কোনোভাবেই শিল্পপার্ক স্থাপনে ব্যবহার করা যাবে না। আমরা মনে করি, কৃষিকে গুরুত্ব দিয়ে আমাদের শিল্পায়নের পথে হাঁটতে হবে। তবেই অর্জিত হতে পারে টেকসই উন্নয়ন।


আরো সংবাদ



premium cement
৭ উইকেট তুলে নিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে চেপে ধরেছে বাংলাদেশ লাখ টাকার প্রলোভনে শাহবাগে এত লোক কিভাবে এলো? কেরানীগঞ্জে কেন্দ্রীয় কারাগারে কয়েদির মৃত্যু হিজবুল্লাহ কমান্ড সেন্টারে ইসরাইলি হামলা রাজশাহীতে প্রথম আলো পত্রিকায় আগুন ও সাইনবোর্ড ভাঙচুর রোহিঙ্গাদের আশ্রয়স্থলের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে : পররাষ্ট্র সচিব আড়াইহাজারে ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ, আহত ১৬ শ্রম সংস্কারে অন্তর্বর্তী সরকারের অগ্রগতিতে মার্কিন প্রতিনিধিদলের প্রশংসা আইপিএলে রেকর্ড গড়লেন ১৩ বছর বয়সী বৈভব সিলেটে ট্রাক ও বাসচাপায় নিহত ২ মানিকগঞ্জে প্রলোভন দেখিয়ে শাহাবাগে লোক নেয়ার মূলহোতা দবিরসহ আটক ৫

সকল